নামেই ‘অনলাইন’ লটারির দোকান। অথচ, ইন্টারনেট সংযোগই নেই। কয়েক মাস ধরে শহরের নানা প্রান্তে এমন দোকান খুলে লোক ঠকাচ্ছিল একটি চক্র। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হানা দিয়ে ‘অনলাইন’ লটারির নামে প্রতারণার অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৩৬টি কম্পিউটার, হার্ড ডিস্ক, টিকিট ছাপার যন্ত্র এবং টাইপ-রাইটার।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ব্যবসায়ীরা একটি বিশেষ সফ্টওয়্যার ব্যবহার করত। তার মাধ্যমে কম্পিউটার স্ক্রিনটি ‘অনলাইন’ লটারির মতোই দেখায়। একদল জালিয়াত সফ্টওয়্যারটি তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। হাজার দশেক টাকা দাম নেওয়া হয়। সাধারণত ‘অনলাইন’ লটারিতে খেলা হয় একটি নির্দিষ্ট জায়গায়। পরে ফলাফল ইন্টারনেট মারফত এজেন্টদের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এই খেলাটি ওই দোকানের কম্পিউটারেই হত।
এক পুলিশকর্তার কথায়, “অনেকটা ভিডিও গেমসের মতো সফ্টওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছিল। এটিও এক রকম সাট্টা।” পুলিশ জানায়, দোকানগুলিতে ২, ৫, ১০, ২০ টাকায় লটারির টিকিট বিক্রি হত। ঘণ্টায়-ঘণ্টায় খেলার পরে পুরস্কার দেওয়া হত। টিকিটগুলিতে মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম বা আন্দামান সরকারের নাম ছাপা। পুলিশ জানায়, ওই সফ্টওয়্যার কারা বাজারে ছড়িয়েছে, দেখা হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে বেআইনি ওই লটারির কথা জেনে মঙ্গলবার থানাগুলিতে লালবাজারের নির্দেশ যায়। এর পরেই ওই সব দোকানে হানা দেয় পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাজ্যে ‘অনলাইন’ লটারি বন্ধ করতে বাম আমলে চেষ্টা হয়েছিল। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট লটারির পরিচালন কর্তারা। সুপ্রিম কোর্টে এখনও ওই মামলা ঝুলছে। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় এসে ‘অনলাইন’ লটারিতে কর চাপায়। উত্তর-পূর্বের কিছু রাজ্য এমন লটারি চালায়। কিন্তু ধৃতদের থেকে ওই রাজ্যগুলির বৈধ টিকিট মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। |