|
|
|
|
|
শিল্পতালুক বাদ, অন্য
শিল্প
নিয়েও প্রশ্ন নয়াচরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
|
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ পশ্চিমবঙ্গের নয়াচরে পেট্রো-রসায়ন শিল্পতালুক গড়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করল। তবে রাজ্য চাইলে সেখানে অন্য প্রকল্প তৈরি করতে পারে। কিন্তু অবস্থান ও পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণেই নয়াচরে অন্য শিল্প, যেমন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা ইকো-পার্ক তৈরি করার সম্ভাবনাও ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশ মন্ত্রকের মতে, অবস্থানের কারণেই নয়াচর শিল্প স্থাপনের অনুকূল নয়।
আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানান, নয়াচরে পেট্রো-রসায়ন শিল্পতালুক গঠনের সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রকে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। পরিবর্তে তারা সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইকো-পর্যটন পার্ক ও শিল্প-পার্ক গড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। রাজ্যের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় সরকার আজ শিল্পতালুকের প্রকল্পটি বাতিল করল। যার অর্থ, রাজ্য চাইলে সেখানে অন্য প্রকল্প করতে পারে।
কিন্তু রাজ্য বাকি যে প্রকল্পগুলি সেখানে গড়তে চাইছে, তাতেও বাদ সাধছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশ মন্ত্রক। নয়াচরে মোট ৭০০ একর জমিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি তাপবিদ্যুৎ গড়ার ছাড়পত্র চেয়েছে অনাবাসী ভারতীয় প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের ইউনিভার্সাল ক্রিসেন্ট পাওয়ার সংস্থা। কিন্তু নয়াচর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার পক্ষে উপযুক্ত নয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ইকো-পার্ক প্রকল্পের জন্যও পরিবেশ মন্ত্রক প্রসূনবাবুদের সংস্থাকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস দিয়ে বসে রয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মতে, নয়াচরের পরিবেশগত অবস্থান খুবই সংবেদনশীল। উপকূলবর্তী এলাকায় জোয়ারের জল ঢুকবে। শিল্প স্থাপনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হবে। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঝক্কিও কম নয়। এত কিছুর পরে শিল্প গড়লে তা লাভজনক হবে কি না, তা নিয়েও সন্দিহান পরিবেশ দফতর। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য যখন আবেদন করা হয়েছিল, তখন সেটি পেট্রো-রসায়ন শিল্পতালুকের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু এখন সেই শিল্পতালুকটিই বাতিল হয়ে গেল।
কেন্দ্রের মনোভাব বুঝে রাজ্য সরকার প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের সংস্থাকে নয়াচরের পরিবর্তে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার জন্য জমি দিতে চায়। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক হয়েছে প্রসূনবাবুদের। নয়াচরে জমি ভরার জন্য যে খরচ হবে, পুরুলিয়ায় সে ধরনের কোনও সমস্যা নেই। তবে নয়াচর উপকূলে থাকায় কয়লা আনার যে খরচ হত, পুরুলিয়ায় তা বেড়ে যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থাকছে। তবে পুরুলিয়ায় যে জমি প্রসূনবাবুদের দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, সেখানে অন্য একটি ইস্পাত সংস্থা এখনও জমি ছাড়েনি। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিতই হয়ে রয়েছে। |
|
|
|
|
|