আরও বিপাকে কিংফিশার অনটনে মৃত্যু বেছে নিলেন
বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী
দিল্লিতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে কিংফিশার বিমান সংস্থার এক বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর। স্বামী কয়েক মাস ধরে বেতন না-পাওয়ায় আর্থিক অনটনের মুখে পড়েই সুস্মিতা চক্রবর্তী (৪৫) নামে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে ওঝা বৃহস্পতিবার জানান।
কিংফিশারের সব স্তরের কর্মী থেকে ইঞ্জিনিয়ারেরা সাত মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রতিবাদে নামায় সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে সংস্থার যাবতীয় উড়ান। প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন সুস্মিতাদেবীর স্বামী মানসবাবুও। ঠিক ছিল, কর্মীদের অসন্তোষ মিটিয়ে আজ, শুক্রবার থেকে উড়ান চালাবে কিংফিশার। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে কর্মী-কর্তৃপক্ষ বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। সুস্মিতাদেবীর অপমৃত্যু অসন্তোষে ঘৃতাহুতির কাজ করবে বলে কর্মচারীদের একাংশের আশঙ্কা।
গুড়গাঁওয়ে বৈঠক চলাকালীনই এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ দিল্লির পাম ভিলেজ থানায় সুস্মিতাদেবীর অপমৃত্যুর খবর পৌঁছয়। মানসবাবুও ওই বৈঠকে ছিলেন। পুলিশ জানায়, কয়েক দিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন সুস্মিতাদেবী। বৈঠক চলাকালীন স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে সাড়া না-পেয়ে সন্দেহ হয় মানসবাবুর। তড়িঘড়ি মংলাপুরীর ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন তিনি। পুলিশকর্তা বলেন, “মানসবাবু ফ্ল্যাটে ফিরে বেল দিয়েও সাড়া পাননি। তিনি দরজা ভেঙে দেখেন, সিলিং পাখা থেকে স্ত্রীর দেহ ঝুলছে।” ওঝা জানান, সুস্মিতাদেবী সুইসাইড নোটে অনটনকেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন। তাঁদের একমাত্র ছেলে অসমে বিটেক পড়ছেন।
বেতন না-পেয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকেই কর্মী-অসন্তোষে এক-এক করে বন্ধ করে দিতে হচ্ছিল কিংফিশারের উড়ান। সোমবার বসে যায় সংস্থার সব ক’টি বিমানই। কবে ফের তাঁদের বিমান উড়বে, এ দিনও তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। রাতে সংস্থার পক্ষ থেকে রবিবার পর্যন্ত উড়ান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
মার্চের পরে কর্মীদের আর বেতন দিতে পারেনি কিংফিশার। সংস্থার লোকসানের পরিমাণ প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। সংস্থা সূত্রের খবর, প্রতিটি শহরে ঘুরে তাদের সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল কর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লিতে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আন্দোলনরত কর্মীদের দাবি, অবিলম্বে বকেয়া বেতন দিতে হবে। নইলে তাঁরা আর কাজ করবেন না। কর্তৃপক্ষ জানান, এখন এক মাসের বেতন দেওয়া হবে। আর এক মাসের বেতন মিলবে তিন সপ্তাহের মধ্যে। তবে সেই বেতন পেতে গেলে অবিলম্বে কাজে যোগ দিতে হবে। কিন্তু ধর্মঘটীরা বলছেন, “আগে বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিতে হবে। তার পরে উঠবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন।”
কিংফিশার একটানা এত দিন উড়ান বন্ধ রাখায় ভারতে বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। ডিজিসিএ-প্রধান অরুণ মিশ্র দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, “লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া হচ্ছে না। আমরা চাইছি, ওই সংস্থা তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার দ্রুত সমাধান করে, যাত্রীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করে ফের উড়ান শুরু করুক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.