রায়চৌধুরী বাড়ি
পাশাপাশি দুই মন্দিরে পুজো হয় ভিন্ন মতেই
কই পরিবারের দুই মন্দির। পাশাপাশি। একটি মদনমোহন, গোপীনাথের। অন্যটিতে পুজো পান দেবী দশমা। প্রথমটিতে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। দ্বিতীয়টিতে শাক্ত মতে। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের রায়চৌধুরী পরিবারের পুজোর এই রেওয়াজ বহু বছরের। পাশাপাশি দুই মন্দিরে দুই ভিন্ন মতে পুজো হওয়ায় গ্রামের অনেকেরই এই পুজোকে নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।
পঞ্চায়েত এলাকায় রায়চৌধুরী পরিবারের সুনাম বহু পুরনো। গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই পরিবারেরই নানা মন্দির। আগে এলাকার পোস্ট অফিস, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ নানা জনকল্যাণমূলক কাজে অতীতে জমি দিয়েছে পরিবারটি। গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই পরিবারের নানা মন্দির। আগে অবশ্য পরিবারটির পুজোর সংখ্যা ছিল সাতটি। এখন তা এসে ঠেকেছে মাত্র দু’টোয়। পরিবারের সদস্যেরা জানান, দেবীর নামে থাকা জমিতেই হয় পুজো দু’টি। দুর্গাপুজোর মতো ঘটা করে দোল উৎসবও এই পরিবারের তরফে পালন করা হয় বলে জানান পরিবারের সদস্যেরা।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, এক সময়ে তাঁদের বাস ছিল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের মেড়তলা এলাকায়। ৪০০ বছরের বেশি আগে তারা চলে আসেন দোগাছিয়া গ্রামে। এখানে অনেক ভূসম্পত্তির মালিক হন তাঁরা। পরিবারের সদস্য তথা দোগাছিয়া পঞ্চায়েত প্রধান প্রণব রায়চৌধুরী জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ শ্রীধর করের প্রচুর অর্থ ও প্রতিপত্তি ছিল ঠিকই। কিন্তু নিঃসন্তান হওয়ায় তাঁর মনে শান্তি ছিল না। বংশ রক্ষার জন্য দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর জন্য তৈরি করিয়েছিলেন মদনমোহন ও গোপীনাথের মন্দির। দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য দেবী দশমার মন্দির। প্রণববাবু বলেন, “শ্রীধর করের দুই স্ত্রী দুই মতে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করতেই মন্দির দু’টি তৈরি করা হয়।”
—নিজস্ব চিত্র।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বনেদি এই পুজোর জৌলুস যে বেশ কিছুটা হারিয়েছে, তা স্বীকার করেছেন রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্যেরা। তাঁরা জানান, শুরুতে পুজোর সময়ে এলাকার মানুষের জন্য অবারিত দ্বার ছিল। সব ক’টি মণ্ডপ থেকে বিলি করা হত মুড়ি, নারকেল-সহ নানা খাবার। কিন্তু এখন তা শুধুমাত্র পরিবারের লোকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তবে আড়ম্বরের আতিশয্য কমলেও পরিবারের সদস্যদের একাত্মতায় কোনও চিড় ধরেনি বলে দাবি প্রণববাবুর। পরিবারের সব সদস্যেরা এক সঙ্গে জড়ো হন পুজো উপলক্ষে। চলে খাওয়াদাওয়া। পঙ্ক্তিভোজের জন্য তৈরি করা হয় আলাদা মণ্ডপ। বাজি ও আলোর রোশনাইয়ে বিসর্জনের রাত ভরিয়ে দেয় পরিবারের ছোটরা। চলে মিষ্টিমুখ। বছরের এই সময়ে পরিবারের সব আত্মীয় পরিজন জড়ো হন এক সঙ্গে। পরস্পরের সান্নিধ্যের উষ্ণতায় ভরে ওঠে পুজো।
পশুপাখি ও প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পরে বলি প্রথা বহু জায়গাতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার বদলে সব্জি বলি দিয়ে প্রথা বজায় রাখা হয়। কিন্তু দশমার পুজোয় আজও সেই পশু বলি বন্ধ হয়নি, এটাই যা আক্ষেপের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.