পদ্ম ফুলের খোঁজে এ বার চাঁচলের পুজো উদ্যোক্তাদের আর হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না। কারণ, দেবী আরাধনায় নিজেদের চাষ করা ফুল বিলিয়ে দেবেন গ্রামের বাসিন্দারা। এ জন্য পয়সা দাবি করবেন না তাঁদের কেউ। ওই অভিনব ঘটনা এ বার দেখা যাবে চাঁচল লাগোয়া শ্রীরামপুরে। গ্রামের বাসিন্দাদের ওই উদ্যোগের খবরে স্বস্তি ফিরেছে শহরের পুজো উদ্যোক্তা মহলে। এতদিন পদ্ম ফুলের জন্য কোথায় না যেতে হয়েছে পুজো কমিটির লোকজনকে। গ্রাম থেকে শহর যেখানে খোঁজ মিলেছে সেখানে দৌড়ে গিয়েছেন কয়েকটা তাজা ফুলের জন্য। সেটা না মিললে কলি নিয়ে ফিরতে হয়েছে। কোনও বছর চড়া দামের কথা বলেও সেটা মেলেনি। পুজো আয়োজকদের সমস্যার ওই কথা ভেবে প্রায় এক বিঘা আয়তনের জলাশয়ে পদ্ম ফুলের চাষ করেছেন শ্রীরামপুরের বাসিন্দারা। |
ইতিমধ্যে থরে থরে ফুল ফুটেছে সেখানে। কয়েকদিন পরে তা বিলিয়ে দেওয়া হবে। কেন ওই উদ্যোগ? বাসিন্দারা জানান, পুজোর পরে গ্রামে বড় যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়। সেখানেও পুজোয় পদ্ম ফুল লাগে। কিন্তু সেই ফুল সংগ্রহ করতে নাজেহাল হতে হয় তাঁদের। মালদহের পাকুয়া, বুলবুলচন্ডি থেকে চড়া দামে ফুল আনতে হয়। সহজে মেলেও না। তাই দেবী আরাধনায় পদ্ম সংগ্রহ করতে উদ্যোক্তাদের কতটা হ্যাপা পোহাতে হয় তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। ওই সমস্যা মেটাতে স্থানীয় জলাশয়ে পদ্মফুল চাষ করার ভাবনা শুরু হয়। ভাবনা মতো পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। গতবছর পুজোর পরে চারা এনে পদ্ম চাষ শুরু করেন বাসিন্দারা। কয়েক মাসে জলাশয়ের জল সবুজ পাতায় ঢেকে যায়। কলি মুখ তোলে। ফুল ফোটে। জলাশয়কে আগলে রেখে শুরু হয় পরিচর্যার কাজ। পুজোর প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ফুল নষ্ট না করে সে জন্য পালা করে পাহারা দেওয়া হয়। গ্রামের বাসিন্দা টিঙ্কু দাস, অলক দাস, দিলীপ দাসরা বলেন, “দেবী আরাধনায় ফুলের জন্য যে আসবেন আমরা তাঁকে জলাশয় থেকে ফুল তুলে দেব। এ জন্য পয়সা নেব না।” হাতের কাছে পদ্ম মেলার কথা শুনে খুশি পুজো উদ্যোক্তারা। বিবেকানন্দ স্মৃতি সংসদ পুজো কমিটির সম্পাদক সৌরভ সরকার বলেন, “এমন উদ্যোগ কেউ নিতে পারেন ভাবতে পারছি না। এ বার পদ্মফুলের খোঁজে দৌড়ে বেড়াতে হবে না।” |