রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়মিত সাফাইয়ের কাজ নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনের হুমকি দিল কংগ্রেস। মঙ্গলবার দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা হাসপাতালে সাফাই অভিযান করেন। ওই সময় হাসপাতালের পরিবেশ দেখে ক্ষুব্ধ দলের যুব নেতৃত্ব বুধবার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দেন। সেই সঙ্গে বিধায়ক জানান, পরিস্থিতির কথা রাজ্য সরকারকে জানাবেন। মোহিতবাবু বলেন, “হাসপাতালে ঠিক মতো সাফাইয়ের কাজ হয় না। যত্রতত্র চিকিৎসার বর্জ্য ছড়িয়ে আছে। ভিতরে ও বাইরে দূষণ বেড়ে চলায় চিকিৎসাধীন রোগী ও পরিবারের লোকজন সমস্যায় পড়ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশ বসে বসে বেতন নেবেন এটা চলতে পারে না। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়ে হস্তক্ষেপ দাবি করব।” বিধায়কের অভিযোগ শুনে হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাফইকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও সুপারের ওই বক্তব্য সন্তুষ্ট নন কংগ্রেস নেতৃত্ব। রায়গঞ্জ লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সহ সভাপতি তুষারকান্তি গুহ বলেন, “আমরা কয়েকদিন অপেক্ষা করব। ইতিমধ্যে ঠিকঠাক সাফাইয়ের কাজ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সুপারের অফিস অচল করে দেওয়া হবে।” কংগ্রেসের অভিযোগ, হাসপাতালের পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাফাই কর্মীরা দায়সারা ভাবে কাজ করেন। ওয়ার্ডের যত্রতত্র চিকিৎসার বর্জ্য ও আবর্জনা ছড়িয়ে থাকে। ওয়ার্ডের শৌচাগারে নিয়মিত সাফাই হয় না। সেখান থেকে উঠে আসা দুর্গন্ধে রোগীদের জেরবার দশা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও নার্সদেরও কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। শুধু তাই নয় সুপারের অফিস সংলগ্ন এলাকায় চিকিৎসার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকেও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাসপাতাল সুপার জানান, এক সংস্থা হাসপাতাল বর্জ্য সংগ্রহ করে। সংস্থাকে নিয়মিত বর্জ্য নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জ পুরসভাও কিছু বর্জ্য সংগ্রহ করে নষ্ট করছে। রোগীকল্যাণ সমিতির অন্যতম সদস্য তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, “হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড সব সময় যাতে সাফসুতরো থাকে সেই ব্যাপারে সমিতির তরফে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বর থেকে পুরসভা নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ করছে না বলে শুনেছি। বর্জ্য সংগ্রহকারী সংস্থারও কিছু গাফিলতি রয়েছে। কংগ্রেসের উচিত বিষয়গুলি নিয়ে রাজনীতি না করে সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দেওয়া।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা পুরসভার কাউন্সিলর পবিত্র চন্দ অবশ্য বলেন, “মানবিক কারণে পুরসভা হাসপাতাল থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে। রাজ্য সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত সাফাইয়ের কাজ চালু রাখতে ব্যর্থ। রোগীদের কথা ভেবে মোহিতবাবুর নেতৃত্বে সাফাই অভিযান করা হয়।” |