থিকথিকে জলকাদায় ভরা গোটা এলাকা। অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর, শুয়োর সহ গবাদি পশু। আশপাশের নোংরা জল ও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সেখানে। কোনও বাজার এলাকা নয়। শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের ছবি। এটা শেষ নয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেনারেটর থাকলেও চলে না। লোডশেডিং হলে অন্ধকারে ডুবে থাকে গোটা এলাকা। নেই সাফাই কর্মীও। দশ শয্যার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল এলাকার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ। সেখানে তিনজন চিকিৎসক থাকার কথা হলেও আছেন ২ জন। কর্মস্থলের কদর্য পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিলেও ওই চিকিৎসকদের কেউ মুখ খোলেননি। তাঁরা জানান, যা বলার বলবেন জেলার মুখ্য স্বাস্ব্য আধিকারিক। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য জানান, জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের সমস্যার কথা কয়েকবার জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। |
উল্টে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য এসে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে না। ওই ঘটনায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উন্নত পরিষেবার জন্য প্রাথমিক কেন্দ্রকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নিত করার দাবিও উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করেননি জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার। তিনি বলেন, “প্রতি বছর রোগী কল্যাণ সমিতিকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে সহজে অনেক সমস্যা মেটানো যায়। শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত একজন চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।” কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য কর্তার ওই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন চলছে। কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকুমার ঘোষ বলেন, “স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দাবি কেন মেনে নেওয়া হচ্ছে না সেটাই বুঝতে পারছি না। কম তো নয়। প্রায় ২ লক্ষ মানুষ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। বর্তমান পরিকাঠামোতে তাঁদের ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দাবি মানা না হলেও কেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবেশ ঠিক থাকবে না। কেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীর লোককে অপেক্ষা করতে হবে। স্থানীয় রতন শর্মা বলেন, “জলকাদায় ভরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতে গা গোলায়। এখানে চিকিৎসা কী হবে? কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।” |