চিকিৎসার বদলে জুটল সপাটে চড়, অভিযুক্ত ডাক্তার
রোগীর বাড়ির আত্মীয়কে চড় মারার অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের বর্হিবিভাগে কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকালে ওই ঘটনার অভিযোগে রোগীর বাড়ির আত্মীয়েরা বিক্ষোভও দেখান। পরে তাঁরা সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তিন জনের কমিটি গড়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “রোগীর বাড়ির আত্ময়ীকে চড় মেরে তাকলে তা তো অপরাধ বটেই! এটা বরদাস্ত করা হবে না। তবে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য তিন জনের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।” তিন জনের ওই কমিটিতে ডেপুটি সিএমওএইচ-১, সুপার এবং এক জন মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন। এ দিন সকালে মুর্শিদাবাদ থানার নতুনগ্রামের পাঠানপাড়ার বাসিন্দা ১২ বছরের শরিফুল খাঁকে মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। তেলের ব্যারেলে পা কেটে যাওয়ায় শরিফুলের গভীর ক্ষত ছিল। চিকিৎসার জন্য বাড়ির লোকজন তাকে মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে নিয়ে আসে। সেই সময়ে রোগীর ভিড় ছিল। কিন্তু রক্ত বন্ধ না হওয়ায় বাড়ির আত্মীয়েরা স্বভাবতই উদ্বিগ্ন ছিলেন। ঠেলাঠেলি করেই তাঁরা ওই কিশোরকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে এগিয়ে যেতেই ক্ষুব্ধ চিকিৎসক উঠে দাঁড়িয়ে সপাটে চড় কষিয়ে দেন শরিফুলের বাবা সুরজ খাঁর গালে। স্বামীকে মার খেতে দেখে স্ত্রী সরিদা বিবি বাধা দিতে যান। ওই চিকিৎসক তাঁকেও চড় মারেন বলে অভিযোগ।
—নিজস্ব চিত্র।
অভিযুক্ত চিকিৎসক দেবাংশু ঘোষ অবশ্য বলেন, “বহির্বিভাগে রোগীর চাপ ছিল। রোগীর লম্বা লাইন ঠেলে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন ওই দম্পতি। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী বাধা দেয়। তা নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। আমি এগিয়ে গিয়ে ওঁদের গন্ডগোল পাকাতে নিষেধ করি।” তাঁর দাবি, এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওই মহিলার স্বামী চিকিৎসককে মারধরের চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “কিন্তু সকলের সামনে এমন ব্যবহারের জন্য আমিও তাঁকে পাল্টা মারি।”
শরিফুলের পায়ে সেলাই পড়েছে। পরে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিও করানো হয়। পেশায় ইট ভাটার চিমনির কারিগর সুরজ খাঁ অবশ্য বলেন, “আমার ভাইপো সায়েদ খাঁ আউটডোরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় নিরাপত্তারক্ষীরা তার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তখন আমি তার প্রতিবাদ করি। এর পরেই ওই চিকিৎসক আমার গালে আচমকা চড় মারে। বাধা দিতে গেলে আমার স্ত্রীকেও মারে ওই চিকিৎসক। এর পরেই ওই চিকিৎসক আউটডোর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য সুপারের উপস্থিতিতে ওই চিকিৎসক নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন।” তাঁদের অভিযোগ, গাঁ-গঞ্জ থেকে আসা রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এখন ‘নিত্য ব্যাপার’।
চিকিৎসকের ওই আচরণ মানতে পারছেন না সুপার কাজলকৃষ্ণ বণিক। তিনি বলেন, “চিকিৎসকের ওই আচরণ কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, এজন্য চিকিৎসককে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তবে আমি নিজে ওই দম্পতির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.