দুর্গাপুর পুরসভা
বোর্ড পাল্টেছে, তবু চালু হয়নি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা
বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা চালু করেছিল কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্ম সংস্থান দফতর। ক্ষমতায় থাকাকালীন বামেদের পুরবোর্ড সেই প্রকল্প চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল বারবার। বামেদের থেকে পুরসভা দখল করেছে তৃণমূল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে তিন মাস কেটে গেলেও নতুন পুরবোর্ড এই প্রকল্প চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে না বলে অভিযোগ শহরের বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দাদের। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “বিপিএল তালিকা নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। ফের সমীক্ষা শুরু হয়েছে। নতুন তালিকা তৈরি হলেই কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পটি চালুর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হবে।”
২০০৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পটি চালু হয়। বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে। পরিবারের সর্বাধিক ৫ জন সদস্য এককালীন ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ পেতে পারেন। সে জন্য বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারকে ৩০ টাকা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হয়। বিমার কিস্তির ৭৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার ও ২৫ শতাংশ রাজ্য বহন করে। উত্তর-পূর্বের ৭টি রাজ্য এবং জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে অবশ্য কেন্দ্র কিস্তির ৯০ শতাংশ দিয়ে দেয়। প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হলে পরিবারটিকে একটি স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়। পরিবারের কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে সেই কার্ড দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ পায় পরিবারটি। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, সব শহরেরই কিছু আধুনিক বেসরকারি হাসপাতালেও এই পরিষেবা মেলে।
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান দফতর সূত্রে জানা যায়, বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের রোজগেরে সদস্য হঠাৎ অসুস্থ হলে সঙ্কটে পড়ে যায় পরিবারটি। এই বিমা প্রকল্পে নাম নথিবদ্ধ থাকলে সেই সমস্যা থেকে নিশ্চিত মুক্তি। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধমান জেলার ৫৯৫৭১৮ জন বিপিএল তালিকাভুক্তের মধ্যে ৪৫৩৬১২ জনের নাম এই প্রকল্পে নথিভুক্ত হয়েছে। চিকিৎসাজনিত সুবিধা পেয়েছেন ২৮২৭৭ জন। দুর্গাপুরে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১৫টি হাসপাতালে বিমার সুবিধা চালু হয়েছে। অন্য এলাকা থেকে আসা রোগীরা এই সমস্ত হাসপাতালে চিকিৎসার সুবিধা নিলেও বঞ্চিত রয়ে গিয়েছেন দুর্গাপুরের বিপিএল তালিকাভুক্তেরা।
গত এপ্রিল পর্যন্ত দুর্গাপুর পুরসভার ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। বিমা প্রকল্পের সুবিধা না পাওয়ার জন্য শহরের দুঃস্থদের অনেকেরই ক্ষোভ তাদের উপরে। প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতানের অবশ্য দাবি, বছর দেড়েক আগে পুর এলাকার ২০ হাজারেরও বেশি বিপিএল তালিকাভুক্তের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হয়নি। জেলা প্রশাসন অবশ্য সে দাবি মানেনি। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে পুর কর্তৃপক্ষকে শিবিরের আয়োজন করতে হয়। সেই শিবিরের মাধ্যমে এক জন ‘কি-পার্সন’ বেছে নেওয়া হয়। তাঁর মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থাগুলি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাকি কাজ করে। কিন্তু তৎকালীন পুরবোর্ড সে নিয়ম না মানাতেই বিষয়টি এগোয়নি বলে ওই আধিকারিকের দাবি।
নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরেও অবশ্য প্রকল্পটি চালুর বিষয়ে এতটুকু এগোয়নি বলে পুরসভা সূত্রে খবর। বাম আমলে বিপিএল তালিকায় গরমিল হয়েছে অভিযোগ করে মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, নতুন করে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। নতুন তালিকা তৈরির পরেই বিমা প্রকল্পটি চালুর উদ্যোগ হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.