|
|
|
|
শহর থেকে হঠাৎ উধাও সাইকেল পুলিশ, ক্ষোভ |
নমিতেশ ঘোষ • শিলিগুড়ি |
এক মাস আগেও দেখা মিলত তাঁদের। সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। হাতে নোটবুক, বুক পকেটে কলম। কখনও চায়ের দোকানে কখনও কারও বাড়িতে বসে গল্পও জুড়ে দিতেন। একমাসের মধ্যে উধাও তাঁরা! শহরের চার্চ রোড বা সুভাষপল্লি কোথাও দেখা মিলছে না ‘সাইকেল পুলিশ’-এর। পুলিশ কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, এখনও রয়েছেন তাঁরা। অনেক চাপ থাকায় হয়ত প্রতিদিন সাইকেলে টহল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “সাইকেল পুলিশ এখনও রয়েছে। আপাতত দুই ঘণ্টা করে টহল দিচ্ছেন তাঁরা। এবারে নতুন কর্মী পাওয়া গিয়েছে। ওই কাজকে জোরদার করার জন্য বাছাই কনস্টেবলকে তাঁর দায়িত্ব দেওয়া হবে।” পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৮ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ের সফরের ঠিক আগে শিলিগুড়ি থানায় সাইকেল পুলিশের উদ্বোধন করা হয়। সেই সময় শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন সৈয়দ ওয়াকার রাজা এবং শিলিগুড়ি থানার আইসি ছিলেন পিনাকী মজুমদার। ১২ জন কনস্টেবলের হাতে ১২টি সাইকেল তুলে দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। নোটবুক, কলম তুলে দেওয়া হয় কনস্টেবলদের হাতে। তাঁদের বিভিন্ন এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়। থানা থেকে বিষয়টি তদারকির জন্য একজন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি এক সপ্তাহ অন্তর থানায় একটি বৈঠক করা হবে বলে ঠিক হয়। সেই অনুযায়ী মাসে একটি রিপোর্ট আইসির মাধ্যমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হবে বলে ঠিক হয়। পুলিশ কর্তারা জানান, এলাকার বাসিন্দাদের আপদে-বিপদে তাঁদের পাশে থাকার জন্যই সাইকেল পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁদের প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর সহ একটি নোটবুক দেওয়া হয়। যাতে প্রয়োজনের সময় যে কোনও গ্রামবাসীকে ফোন নম্বর দিয়ে সাহায্য করা হয়। এক পুলিশ কর্তা বলেন, “শিলিগুড়ির মতো শহরের প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসছেন। তাঁরা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছেন। হোটেলে থাকছেন। তাঁদের মধ্যে কে অপরাধী চিহ্নিত করা কঠিন কাজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হল তাঁরাই পুলিশকে নানা রকমের তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন। সেদিকে তাকিয়েই সাইকেল পুলিশ।” বাসিন্দারাও পুলিশের ওই প্রকল্পে আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু মাস খানেক ধরে তাঁদের না দেখতে পেয়ে হতাশ বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল বলেন, “শিলিগুড়িতে অপরাধ কমাতে সাইকেল পুলিশ একটা ভূমিকা নেবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু সাইকেল পুলিশকেই আমরা এখন আর দেখতে পাচ্ছি না। এটা কেন হল বুঝতে পারছি না।” পুলিশ কর্তারা জানান, শিলিগুড়ি কমিশনারেট হওয়া পর মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছে। সেই অনুযায়ী পুলিশের কর্মী সংখ্যা কম। শিলিগুড়ি থানার যে ১২ জনকে সাইকেল নিয়ে টহলদারির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের আইনশৃঙ্খলা সামলানো সহ অন্য সব কাজ করতে হয়। ফলে বার হওয়ার সময় পাচ্ছেন না তাঁরা। |
|
|
|
|
|