|
|
|
|
লক্ষ্য পঞ্চায়েত, পুজোর পরে আন্দোলনে বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে ঘর গুছোতে পুজোর পরেই আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম। বুধবার সিপিএমের জলপাইগুড়ি সদর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পুজোর পরে ধারাবাহিক আন্দোলন হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। দলের তরফে বলা হয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধিতা, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির মত জাতীয় ইস্যুগুলিও দাবিদাওয়ার মধ্যে রয়েছে। জেলায় বেহাল সড়ক ও জেলা পরিষদকে রাজ্য সরকারের বঞ্চনাকেও আন্দোলনের প্রধান অস্ত্র করতে চলেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্র না রাজ্য কার দায়িত্ব সে বিষয়ে কোনও বক্তব্য আমাদের নেই। মাদারিহাট থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত জেলা জুড়ে সব ধরনের সড়ক ধান খেতের থেকেও খারাপ চেহারা নিয়েছে। অথচ রাজ্য সরকার বেহাল সড়কের প্রসঙ্গ উঠলেই কেন্দ্রের দিকে আঙ্গুল তুলে দায় এড়াতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে সর্বস্তরে আন্দোলন হবে। সিপিএম পরিচালিত জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলেও রাজ্য সরকার কীভাবে বঞ্চনা করছে তাও মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। পুজোর পরে আন্দোলন শুরু হবে।” দলের অন্দরের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে জেলায় সিপিএমের সংগঠনে ধস নেমেছে। পাশাপাশি, গত দেড় বছরে জেলায় আন্দোলনের ধারাবাহিকতা নেই বলে নেতাদের অনেকেই স্বীকার করেছেন। অনেক বহু সক্রিয় সদস্যও ইদানীং কাজ করতে চাইছেন না বলে দলের মধ্যেই অভিযোগ রয়েছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিষয়টি সামনে রেখে দলের সর্বস্তর কর্মীদের চাঙ্গা করতে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়া হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। ২০০৮ সালে জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেরা নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। জেলার ১৩টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১২টিই এবং জেলা পরিষদের ৩৭ টি আসনের মধ্যে ৩৫ টি দখল করেন বামেরা। গত বিধানসভা নির্বাচনে জেলার বেশির ভাগ আসন বিরোধীদের হাতে চলে গিয়েছে। পঞ্চায়েতেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলে দলের অনেকেরই আশঙ্কা। জেলার একাধিক নেতা জানান, তাই সময় নষ্ট না করেই জেলা জুড়ে আন্দোলনের পথে যেতে চাইছেন তাঁরা। সিপিএমের অভিযোগ, শুধুমাত্র সিপিএম পরিচালিত বলেই রাজ্যের থেকে প্রাপ্ত ১৫ কোটি টাকা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদকে দেওয়া হয়নি। পুজোর পরে কোন খাতে কত টাকা জেলা পরিষদ পায়নি তার তালিকা তৈরি করে জেলার গ্রামগুলিতে প্রচার করা হবে বলে সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কীভাবে আন্দোলন করা হবে. সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে বুথে বুথে পথসভা, ঘরোয়া বৈঠক করা হবে। কালীপুজোর পরে শুরু হবে বিক্ষোভ অবস্থান। সঙ্গে পথ অবরোধ, আইন অমান্যও করা হবে। জেলা সম্পাদক কৃষ্ণবাবু বলেন, “আমরা চাই রাজ্য সরকার যে ভাবে জনসাধরণের উন্নয়নের দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন, সেটিই মানুষের কাছে তুলে ধরা।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “সিপিএম কাজ করতে পারেনি বলেই মানুষ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। এখন বিরোধী আসনে বসে নিজেদের কাজ না করার দায় সরকারের উপরে চাপাচ্ছেন ওঁরা। মানুষই এর যোগ্য জবাব দেবেন।” |
|
|
|
|
|