|
|
|
|
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ই অসুর পুজোর বাজারে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঁকুড়া |
পুজোর মুখে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের দাপাদাপিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বাসিন্দারা। এক দিকে, আশ্বিন মাসের ভ্যাপসা গরমে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অন্য দিকে, জেনারেটারের টিমটিমে আলোয় দোকানগুলিতে কেনাবেচার দফরফা বলে ক্ষোভ ব্যবসায়ী মহলে। ফলে পুজোর বাজারে এ বার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ই তাঁদের কাছে অসুর হয়ে উঠেছে।
গত কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যা নামলেই ঘণ্টা খানেক ধরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় প্রায় ‘রুটিন’ হয়ে উঠেছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বাঁকুড়ার গোলপার্কের বস্ত্র ব্যবসায়ী অতনু দাস, খাতড়ার ব্যবসায়ী গাজন দত্তদের অভিযোগ, “জেনারেটর থাকলেও তাতে দোকানের সব আলো তো জ্বালানো যায় না। ফলে ক্রেতাদের সমস্যা হচ্ছে। আবার অন্ধকারে ক্রেতারাও বাজার করতে বাড়ি থেকে বের হতে চাইছেন না। ফলে আখেরে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই ক্ষতি হচ্ছে।” ক্রেতারাও জানাচ্ছেন, দিনের বেলায় রোদের তেজে শান্তিতে বাজার করা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা রাতের বেলায় বাজার করতে স্বস্থি বোধ করেন। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তাও সম্ভব হচ্ছে না। |
|
দেখা নাই! গ্যাসের বাতিই রাতে ভরসা মৃৎশিল্পীর। বাঁকুড়া শহরে ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ। |
সমস্যায় পড়ছেন মৃৎশিল্পীরাও। বৈদ্যুতিন বাতির বদলে গ্যাসের হ্যাজাক অথবা মোমবাতির আলোই তাঁদের ভরসা। বাঁকুড়া শহরের মৃৎশিল্পী শ্যামসুন্দর চন্দ, তারক চন্দরা বলেন, “আর সপ্তাহ তিনেক পরেই দুর্গাপুজো। তাই হাতে বেশি সময় নেই। দিনের বেলায় কাজ করেও সন্ধ্যায় যে বাকি কাজ করব, সে উপায় নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘণ্টা খানেকের আগে ফিরছে না।” তাঁরা জানান, কেরোসিন বা গ্যাসের বাতি জ্বেলে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে খরচও বেড়ে গিয়েছে।
বিষ্ণুপুরেও একই ছবি। সারাদিনই দফায় দফায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। ব্যাহত হচ্ছে এটিএম পরিষেবাও। যমুনাবাঁধের বাসিন্দা সুকুমার দে, মাধবগঞ্জের রাজু রজকরা বলেন, “দিনের বেলা ছাড়াও গভীর রাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। গরমের ঠেলায় বাড়ির বড়-ছোট কেউ ঘুমাতে পারছে না।”
সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির জেলা সম্পাদক স্বপন নাগের অভিযোগ, “গত ছ’মাসে কয়েক দফায় বিদ্যুতের মাশুল বাড়ানো হলেও পরিষেবায় এতটুকু বাড়েনি।” যদিও বিদ্যুৎ দফতরের সার্কেল ম্যানেজার (বাঁকুড়া) শ্যামাপদ মৈত্রের দাবি, “বিদ্যুৎ সরবরাহ সে ভাবে ব্যাহত হচ্ছে না। তবে পুজোর আগে সব জায়গাতেই অল্প-বিস্তর বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি হয়।” |
|
|
|
|
|