গামছার সঙ্গে গামছার গিঁট। পর পর ৯টা। যেন দড়ি! তার মাথায় ‘হুক’। সেই দড়ি ঝুলছে বনগাঁ উপ-সংশোধনাগারের প্রায় ৩০ ফুট উঁচু পাঁচিল থেকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ‘গামছা-দড়ি’ উদ্ধার হয়েছে পরে। তার কিছু ক্ষণ আগেই সংশোধনাগারের তিন বন্দির খোঁজ মিলছে না। প্রাথমিক তদন্তে প্রশাসনের কর্তাদের অনুমান, ওই ‘গামছা-দড়ি’ বেয়েই চম্পট দিয়েছে বন্দিরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের নাম মহম্মদ হাসান, আবুল মিয়াঁ এবং মামুন শেখ। সকলেরই বাড়ি বাংলাদেশে। অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে মহম্মদ হাসান ও আবুল মিয়াঁকে বনগাঁ থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। মামুন শেখকে গ্রেফতার করে বনগাঁ রেল পুলিশ। প্রতিদিন জেলে ছ’বার বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা গোনা হয়। এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ গণনার সময়ে দেখা যায়, ৩ জন বন্দি কম। খবর পেয়ে সংশোধনাগারে যান বনগাঁর মহকুমাশাসক তথা সংশোধনাগারের সুপার অভিজিৎ ভট্টাচার্য এবং বনগাঁর এসডিপিও রূপান্তর সেনগুপ্ত। এর পরেই উদ্ধার হয় ওই ‘গামছা-দড়ি’। |
অভিজিৎবাবু বলেন, “মনে হচ্ছে, ওই বন্দিরা গামছা বেয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে গিয়েছে।” কিন্তু বন্দিরা গামছা বা ‘হুক’ কী ভাবে পেল বা তারা কী ভাবেই বা সকলের নজর এড়িয়ে পালাল সে প্রশ্ন উঠেছে। অভিজিৎবাবু জানান, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, দুপুর ১২টায় গণনার সময়েও বন্দি-সংখ্যা ঠিক ছিল। আজ, বৃহস্পতিবার ঘটনার তদন্তে ওই সংশোধনাগারে যাবেন কারা দফতরের ডিআইজি। বছর তিনেক আগেও সেখান থেকে এক বন্দি পালিয়েছিল।
বনগাঁ আদালতের সরকারী আইনজীবী সমীর দাসের অভিযোগ, “ওই সংশোধনাগারে নজরদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। টাকা দিলে বাইরে থেকে বন্দিদের খাবার দেওয়া যায়। বন্দিদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলা যায়। ফলে, বাইরে থেকে বন্দিদের গামছা, দড়ি দেওয়া যেতেই পারে।” জেল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। |