পরপর তিন বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট থেকে ছিটকে গেল ভারত। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের তুলনায় এ বার ধোনিরা যথেষ্ট ভাল খেলেছে। সত্যি বলতে কী, এই টুর্নামেন্টে ভারতের ভাগ্যটা খারাপ ছিল। যদিও মাঝেমধ্যে ওরা কী ভাবে খেলবে সেটা ধোনিদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ভারত বেশ চাপে ছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় আর সেরা ফর্মে না থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেও ভারতীয়রা চূড়ান্ত ফলাফল নিয়ে হতাশ হয়েই দেশে ফিরবে।
মঙ্গলবার দুপুরের ম্যাচে পাকিস্তান অপ্রত্যাশিত ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেওয়ায় ভারতের শেষ চারে ওঠার সমীকরণ অনেকটা পাল্টে যায়। ধোনিদের জন্য ব্যাপারটা বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের খেলা দেখে আমি নিশ্চিত, ওরা ভারতের কাছে মানসিক ভাবেই হেরে গিয়েছিল। আফ্রিদিরা ভারতের মতো চাপ সামলাতে পারে না। গত দশ বছরে বিশ্বকাপ বা অন্য টুর্নামেন্টে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হারের রেকর্ড কিন্তু শুধুই দু’দেশের ক্রিকেটারদের স্কিলের তফাতের জন্য হয়নি।
মঙ্গলবার টস হেরে ধোনিকে হতাশ দেখাল। বোধহয় ও মানসিক ভাবে তৈরি ছিল রান তাড়া করার জন্য। সাত ব্যাটসম্যান নিয়েছিল কারণ আরও অনেকের মতো ধোনিও ভেবেছিল, রাতে প্রেমদাসার সারফেসে ব্যাট করা কিছুটা সহজ হবে। ঠিকঠাক সময় যে ওর ব্যাটসম্যানরা তাড়াতাড়ি রান তুলতে পারল না, তাতে ধোনি আরও বেশি হতাশ হবে। ক্রিজে কী রকম আটকে গিয়েছিল রোহিত শর্মা। শেষের দিকে ধোনি আর রায়না অত ভাল না খেললে দেড়শো রানও উঠত না। এই ফর্ম্যাটে ধোনি বরাবর নিজেকে দরকারের চেয়ে কম ব্যবহার করে। সেটা সম্পূর্ণ ওর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তটা খুব বেশি লোক সমর্থন না করলেও কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত সবাই আস্তে আস্তে এটা মেনে নিচ্ছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে ধোনি একটাও হাফসেঞ্চুরি করেনি তার কারণ ওর এত নীচে ব্যাট করতে নামা। যাই হোক, অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচটা দেখে মনে হয় একজন বাড়তি স্পিনার খেলাতে পারত ভারত। বালাজি উইকেট পেলেও বেশি রান দিয়েছিল। বিশেষ করে যখন শেষ চারে উঠতে গেলে ৩০ রানের বেশি ব্যবধানে জেতার দরকার ছিল।
ভারত ছিটকে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট কিছুটা ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গেল। তবে সামনের ক’টা দিনে খুব ভাল কিছু ম্যাচ হবে। দুটো সেমিফাইনালই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার হবে। আর দিনে একটা করেই ম্যাচ থাকবে বলে আশা করব উইকেটে স্ট্রোক খেলা সহজ হবে। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে তফাত গড়ে দিতে পারে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং। তবে আরও এক বার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উঠে পাকিস্তান প্রমাণ করে দিয়েছে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ওরা যথেষ্ট বিপজ্জনক। অন্য ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার লড়াই বেশ কঠিন। গ্রুপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেও পাক স্পিনারদের বিরুদ্ধে ওদের যা ফর্ম দেখলাম, তাতে শুক্রবার সেমিফাইনালে নারিন, বদ্রি, স্যামুয়েলসরা গুরুত্বপূর্ণ হবে। ছন্দে থাকা চার টিমই সেমিফাইনালে উঠেছে। আর এই পর্বে একটা জিনিসই দরকার নির্দিষ্ট দিনে বিপক্ষের চেয়ে ভাল খেলা। |