...গন্ধ এসেছে দর্শক টানার লড়াইয়ে এ বার
পরিবেশ ভাবনা থেকে ডেঙ্গি
পুজো আসছে। কিন্তু আনন্দ নেই ওঁদের মনে। শহরের বহু পরিবারেরই এ বছর পুজো কাটবে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে। কারণ ধূমকেতুর মতো শহরের বুকে উদয় হওয়া ‘ডেঙ্গি’। যে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বহু মানুষ। তাই এ বছর পুজোর থিমেও অব্যর্থ ভাবে জায়গা করে নিয়েছে ডেঙ্গি।
বেহালা বুড়োশিবতলা জনকল্যাণ সঙ্ঘের পুজোয় থাকবে মশার মোটিফ আর ডেঙ্গি নিয়ে সতর্কবার্তা। পাশাপাশি প্রাধান্য পাবে দক্ষিণ ভারতের সবুজ পরিবেশ। উদ্যোক্তারা জানান, ডেঙ্গির হাত থেকে বাঁচতে দর্শকদের মধ্যে চলবে প্রচারও।
অতিরিক্ত হারে নগরায়ণের জেরে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। এর জের পড়ছে জীবকুলের উপরেও। গড়িয়ার রায়পুর ক্লাব এই বার্তাই দিতে চাইছে তাঁদের পুজোয়। পুজোর শিরোনাম ‘বাহনে আবাহন’। উদ্যোক্তারা জানান, নগরায়ণের জেরে বাহন সিংহ, ইঁদুর, পেঁচা, হাঁস ও ময়ূরকুলের অস্তিত্ব সঙ্কটে। তাই মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হবে ওইসব জীবজন্তুর অবয়ব।
গড়িয়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির থিমে প্রাধান্য পেয়েছে নদী। পুরাণে আছে, মহাদেব জাহ্নবীকে জটায় আটকে রেখেছিলেন। পরে তাঁকে মুক্তি দেন। গঙ্গোত্রীর পথে নামায় তাঁর নাম হয় গঙ্গা। সেই গঙ্গা মানবসমাজের কৃতকর্মে দূষিত। এই ভাবনাই মণ্ডপে রূপ পাবে।
কয়েক বছর ধরেই পরিবেশ ভাবনার পাশাপাশি দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে অন্য ভাবনাও। ব্যতিক্রম ঘটছে না এ বারেও। মনসাতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপে দেখা মিলবে হারানো শৈশবের। পুজোর শিরোনাম ‘মুছে যাওয়া ছেলেবেলা’। উদ্যোক্তারা জানান, এক সময়ে শৈশব জুড়ে থাকত অপু-দুর্গার দস্যিপনা, রাখাল বালকের গল্প, রূপকথা। আজ তার জায়গা নিয়েছে ইন্টারনেট, টেলিভিশন, বলিউড। ছেলেবেলার দিনগুলিতে দর্শকদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতেই এই ভাবনা।
বাঁশদ্রোণীর রায়নগর উন্নয়ন সমিতির মণ্ডপ সাজছে বাংলা অক্ষর ‘প’-কে ঘিরে। উদ্যোক্তারা জানান, এই অক্ষরের সঙ্গে জুড়ে আছে পুজো, পিলসুজ, পতাকা, পাত্র, প্রদীপের মতো শব্দগুলি। যেগুলি পুজোর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তাই পুজোর শিরোনাম ‘প এর খেলা, রঙের মেলা’। লস্করপুর জাগৃতি সঙ্ঘের পুজোয় থাকছে নেপালের পাহাড়ি পরিবেশ। প্যাগোডার আদলে হবে মণ্ডপ। অজয়নগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব সোসাইটির ভাবনায় রূপ পাচ্ছে জন্ম-জন্মান্তরের গল্প। তাই পুজোর শিরোনাম, ‘বৃত্ত দ্য সাইকেল’।
দেবী দুর্গা ও অসুর এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই তৈরি মানব জাতি। অসুর মানুষের ভিতরের খারাপ দিকগুলির ইঙ্গিত বহন করেন। আর দুর্গারূপে থাকে মানুষের ভাল গুণ। ভালকে ছাড়িয়ে খারাপ প্রকাশ পেলেই শুরু হয় সংঘাত। এই দর্শনকেই রূপ দিচ্ছে পাটুলি সর্বজনীন। উদ্যোক্তারা জানান, এখানে পরাজিত অসুরকে দুর্গার কাছে দয়া ভিক্ষা করতে দেখা যাবে। গড়িয়ার মহামায়াতলা (পূর্ব) মিলনীর মণ্ডপ সাজবে সূক্ষ্ম কাঠের কারুকাজে। গুরুত্ব দেওয়া হবে বাংলার ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পকে। গড়িয়ার মিতালী সঙ্ঘের পুজোয় প্রতিমা হচ্ছে পুরাণ ঘেঁটে। আর মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে রাজস্থানের সন্ধ্যামাতার মন্দিরের আদলে। উদ্যোক্তাদের আশা, অন্যান্য বছরের মতো এ বারও এখানে দর্শকদের ঢল নামবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.