|
|
|
|
|
|
দামের ফারাক |
সুইমিং পুল থাকলে মন্দ হয় না |
কোথাও প্রতি বর্গ ফুট ৩ হাজার। তো তার দু’হাত দূরেই ছয়।
ফ্ল্যাটের দরে এমন ফারাক কেন? তদন্তে গার্গী গুহঠাকুরতা। |
জমি কিনে দিনের পর দিন রোদে-জলে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ি তৈরির ঝক্কি আর কেউ পোহাতে চায় না। বিশেষত শহর আর শহরতলিতে। তাই সেখানে ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে হু হু করে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তার দামও।
ছিমছাম ‘রেডিমেড’ ফ্ল্যাটে সংসার পাতার এই চল অবশ্য আর শুধু কলকাতায় আটকে নেই। বরং এই ‘ফ্ল্যাট-কালচার’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জেলা-শহর এমনকী মফস্সলেও। তাই সেখানেও বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের প্যাঁটরা খুলে বসছে ছোট-বড় নির্মাণ সংস্থা। প্রায় ১২ হাজার বাসস্থান তৈরি হচ্ছে শুধু জেলাশহরগুলিতেই। এবং সব জায়গাতেই বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাটের মধ্যে দামের ফারাক চোখে পড়ার মতো। বিশেষত কলকাতায়। |
|
মেট্রো কাছে তো?
ফ্ল্যাটের দামে ফারাকের একটা বড় কারণ অবশ্যই যোগাযোগ। যেমন, কলকাতায় যেখানে প্রকল্পের দু’পা দূরেই মেট্রো আসছে, সেখানে দাম ঊর্ধ্বমুখী। রয়েছে অন্য কিছু বিষয়ও। যেমন ধরুন, মূল রাস্তা (মেন রোড) থেকে আবাসন কত দূরে, বাস যোগাযোগ কেমন, রাত-বিরেতে ট্যাক্সির দেখা মিলবে কিনা, প্লেন বা ট্রেন ধরতে গেলে কতক্ষণ আগে বেরোতে হবে বাড়ি থেকে ইত্যাদি। গাড়ি ঢোকার জন্য রাস্তা কতটা চওড়া, তা-ও বেশ গুরুত্বপূর্ণ এই সব ক্ষেত্রে।
আবাসনেই মিনি-শহর
এখন তো মানুষ আর শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই জোগাড়েই সন্তুষ্ট নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে আবাসনের মধ্যেই মোটামুটি শহরের একটা ছোট সংস্করণ চাইছে তারা। বিশেষত রাজারহাটের মতো জায়গায়। মূল শহর থেকে যা অনেকটাই দূরে। তাই চাহিদার তালিকায় ঢুকে পড়ছে শপিং মল, জিম, সপ্তাহ শেষের ছুটি কাটানোর ক্লাব এমন কত কী। চাইছে হাতের কাছেই বিনোদনের যাবতীয় উপকরণ। এবং তা পেতে কিছু টাকা বেশি খরচা করতেও পিছপা নয় তারা। তাই বড়সড় আবাসন প্রকল্পে এই সব সুবিধা রাখতে চাইছে নির্মাণ সংস্থাগুলি।
|
|
শখ পুল আর পার্কেরও
তুলনায় কম টাকা পকেটে নিয়ে ফ্ল্যাটের খোঁজে নামলে, ‘স্ট্যান্ড-অ্যালোন’ দেখাই ভাল। কিন্তু আজ-কাল অনেকেই আবার ঝুঁকছেন কমপ্লেক্সের দিকে। নিরাপত্তা তার অবশ্যই একটা বড় কারণ। কিন্তু তার বাইরেও রয়েছে ছোটখাটো কিছু শখ-শৌখিনতা। যেমন ধরুন, রোজ সকালে বাচ্চাকে সাঁতারের পুলে ছেড়ে দিতে চাইছেন আপনি। কিংবা কর্তা অফিসের ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিকেলের দিকে বাড়ির নীচের পার্কে এক বার চক্কর দিয়ে আসতে চান গিন্নি। লাইব্রেরি, বাচ্চাদের খেলার আলাদা জায়গার মতো সুযোগও চাইছেন অনেকে। স্বাভাবিক ভাবেই এই সব কারণে তুলনায় অনেকটাই বেশি দাম পড়ছে কমপ্লেক্সের ফ্ল্যাটে।
যত আগে তত কম
শুধু বিভিন্ন প্রকল্পে ফ্ল্যাটের দাম বিভিন্ন নয়। একই প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরেও তা সম্পূর্ণ আলাদা। আপনি যত আগে ফ্ল্যাট বুক করবেন, দাম পড়বে তত কম। আর ফ্ল্যাট যত শেষের মুখে, দাম তত চড়া। দেখা যাবে, নক্শা অনুমোদনের আগে যে-ফ্ল্যাটের দর বর্গ ফুটে ২৫০০ টাকা, কাজ শেষে তা-ই হয়তো বেড়ে হল সাড়ে ৩ হাজার। সুতরাং পকেট মেপে ফ্ল্যাট এক বার বেছে ফেললে, বুকিংয়ে অযথা দেরি না-করাই ভাল।
|
দক্ষিণা |
দামি (প্রিমিয়াম) |
মাঝারি দাম (বাজেট) |
কলকাতা |
কলকাতা |
দক্ষিণ ৭৫০০-১২০০০
দক্ষিণ-মধ্য ১০০০০-১৮০০০
দক্ষিণ-পূর্ব ৫৮০০-৯৫০০
দক্ষিণ-পশ্চিম ১০০০০-১৫০০০
মধ্য ৮৩০০-১০২০০
পূর্ব ৪৫০০-৫৫০০
উত্তর পূর্ব ২৮০০-৪৫০০
দক্ষিণ: সাদার্ন এভিনিউ, ডোভার লেন দক্ষিণ-মধ্য: বালিগঞ্জ, কুইন্স পার্ক, রেনি পার্ক,
গুরুসদয় রোড দক্ষিণ-পূর্ব: ই এম বাইপাস দক্ষিণ-পশ্চিম: আলিপুর পার্ক রোড, অশোক রোড, বেলভেডিয়ার রোড মধ্য: ল্যান্সডাউন, পার্ক স্ট্রিট পূর্ব: সল্টলেক উত্তর পূব: রাজারহাট |
দক্ষিণ ৩৮০০-৫৫০০
দক্ষিণ-মধ্য ৫৫০০-৮০০০
দক্ষিণ-পূর্ব ২৮০০-৪৫০০
উত্তর-পূর্ব ২৪০০-৩০০০
উত্তর ২৮০০-৫২০০
দক্ষিণ: নিউ আলিপুর, গল্ফ গ্রিন, বালিগঞ্জ দক্ষিণ-মধ্য: হিন্দুস্তান পার্ক ও গড়িয়াহাট অঞ্চল
দক্ষিণ-পূর্ব: ই এম বাইপাস; উত্তর-পূর্ব: রাজারহাট
উত্তর: কাঁকুড়গাছি, লেক টাউন, যশোর রোড, উল্টাডাঙা |
উত্তর চব্বিশ পরগণা, হুগলি, বর্ধমান, বাঁকুড়া |
হাওড়া |
ব্যারাকপুর ১৩১৮-২৫৩৯ (ডুপ্লে বাড়ি ৪৫ লক্ষ থেকে শুরু)
মধ্যমগ্রাম ২২০০-২৪০০
বাঁকুড়া ১২০০-১৮০০
বিষ্ণুপুর ১৪৫০-১৬০০
দুর্গাপুর ১৬০০-১৮০০
আসানসোল ২০০০-২৪০০ |
মন্দিরতলা, চ্যাটার্জিহাট, আন্দুল, ক্যারি রোড, রামরাজাতলা, নেতাজি সুভাষ রোড, শাস্ত্রী নরেন্দ্র নাথ গাঙ্গুলি রোড, মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোড, জিটি রোড (উত্তর ও দক্ষিণ)
২৫০০-৬৫০০
(বাজার এতটাই অসংগঠিত যে, একই এলাকাতেও দামের বিপুল ফারাক) |
|
* ফ্ল্যাটের দাম প্রতি বর্গ ফুটে
** সব হিসেব টাকায়
*** দাম বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে কথা বলে পাওয়া। এই দর নির্দেশক মাত্র। |
|
|
|
|
|
|