পুজো মানে কি শুধুই নিজের জন্য কেনাকাটা? প্রিয়জনকেও তো কিছু একটা দিতে হবে। কী কেনা যায় ভেবেই দিন পার। কিন্তু প্রিয়জনকে পুজোর সময়ে শুধু জামাকাপড়ই দিতে হবে, এমনটা কেউ বলেছে কী! ব্যাগ, জুতো, ঘড়ি এমনকী হাল্কা শৌখিন গয়না দিয়েও জিতে নেওয়া যেতে পারে প্রিয়জনের মন।
প্রথমে আসা যাক ব্যাগের কথায়। ধরা যাক ব্যাগ। ‘লেটেস্ট’ শাড়ি বা সালোয়ার, জিন্স-কুর্তা আর তার সঙ্গে একটা দারুণ ডিজাইনের ব্যাগ পুজোর মণ্ডপে নজর কাড়তে বাধ্য। বিভিন্ন আকৃতির কাপড়, জিন্স, ফোম, পাট বা চামড়ার ব্যাগের চাহিদা এ বার কিছু কম নয়। এদের সাজও ভিন্ন। স্টিল, কাস্টর আয়রন, স্টোন কত কী না ব্যবহার করা হয় এগুলি তৈরি করতে। সাবেকি বাজারে ব্যাগের দোকান তো আছেই। কিন্তু শপিং মলের ব্যাগের স্টলে ভিড় বেশ ভালই। ক্রেতা রিনি রায়ের দাবি, “সাবেকি দোকানেও দারুণ দারুণ ব্যাগ মেলে। তবে ট্রেন্ডি বা একেবারে হাল ফ্যাশানের ব্যাগের সম্ভার কিন্তু শপিং মলেই বেশি।”
বাজার ঘুরে দেখা গেল, দারুণ বিকোচ্ছে কয়েন ব্যাগও। যা খুচরো পয়সা রাখার জন্য একেবারে আদর্শ। কোনওটা বিভিন্ন প্রাণীর মুখের আদলে, কোনওটা স্মাইলি, কোনওটা আবার বটুয়া ধরনের। অন্ডালের ব্যাগ ডিজাইনার হিরালাল মণ্ডল বললেন, ‘‘এই ধরনের ব্যাগ যেমন দেখতে সুন্দর, কাজেও লাগে বেশি। সাদা, সবুজ, লাল এই সব রঙের চাহিদাই এখন বেশি। তবে চামড়ার তৈরি ব্যাগের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের পছন্দ সেই কালো।” |
ঘড়িও কিন্তু উপহারের দৌড়ে একেবারেই পিছনে নয়। বেনাচিতি বাজারের একটি দোকানে বোনের জন্য ঘড়ি কিনতে এসে এ-জোনের চৈতন্য অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা অনুপ বাগচি বললেন, “পুজোতে বোনকে কী দেব ভাবছিলাম। ও বলল একটা লেটেস্ট ডিজাইনের ঘড়ি দিতে। তাই চলে এলাম।” খুব বেশি দাম নয়, অথচ রমকারি ডিজাইনের ঘড়ি রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, ঘড়ির ডায়াল সেই সঙ্গে বেল্টের রঙ ও ডিজাইনেও রয়েছে নানা বৈচিত্র্য।
গয়নার ব্যাপারে মহিলাদের দুর্বলতা চিরকালের। পসরা সাজিয়ে তৈরি বিক্রেতারাও। এ গয়না সোনা-রূপোর নয়। মেটাল, গোল্ড প্লেটেড, কাচ, মাটি, কাঠ, ডোকরা দিয়ে তৈরি গয়নার চাহিদাই বেশি। স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া তুলিকা চক্রবর্তী বললেন, “প্রথমত, চোরের উপদ্রবে তো সোনার গয়না পরা দায়। তাছাড়া এই ধরনের গয়নায় এত ভ্যারাইটি রয়েছে যে না কিনে পারা যায় না।”
পুজোর উপহার হিসেবে জুতোও কিন্তু মন্দ নয়, জানাচ্ছেন ক্রেতারা। পুরুষ, মহিলা থেকে বাচ্চাদের রকমারি স্টাইলের জুতোর পসরা বিভিন্ন দোকানে। আড়াই দশক ধরে দোকান চালাচ্ছেন বেনাচিতি বাজারের ব্যবসায়ী জয়ন্ত মণ্ডল। তিনি জানালেন, ক্রেতাদের মন রাখতে গত কয়েক বছরে জুতো প্রস্তুতকারকরা যা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন তা আর বলার নয়।
মনের মতো উপহার সাজিয়ে তৈরি হচ্ছেন বাঙালি। ঢাকে কাঠি যে পড়ল বলে! |