সরকারি আলু কেনার টাকা নয়ছয়ের মামলায় অভিযুক্ত ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক গোবিন্দ রায় ও তাঁর স্ত্রী সবিতা দেবীর খোঁজে তল্লাশিতে নামল পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ৩ টে নাগাদ জেলা পুলিশের একটি দল গোবিন্দবাবুর পান্ডাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর করে। পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন দুজনের কেউই বাড়িতে ছিলেন না। পরিবার সূত্রে পুলিশকে জানানো হয়েছে, তাঁরা ব্যাক্তিগত কাজে কলকাতায় গিয়েছেন। বাড়িতে না পেয়ে দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন করার কথা ভাবছে পুলিশ। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “গোবিন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার থানায় দায়ের হওয়া আলু দুর্নীতির অভিযোগের নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।” গত ২৫ সেপ্টেম্বর গোবিন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার থানায় ভুয়ো নথি বানিয়ে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ করেন তাঁর দলেরই এক নেতা। তা নিয়ে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর পরেই গোবিন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রী কলকাতায় চলে যান। ২০১০ সালে রাজ্য জুড়েই আলুর অতিরিক্ত ফলন হয়। তখন রাজ্য সরকার প্রান্তিক কৃষকদের থেকে সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমে আলু কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। জলপাইগুড়ি জেলায় গোবিন্দবাবুর স্ত্রীর তৈরি নবদিগন্ত সমবায় সমিতি সরকারি আলু কেনার বরাত পায়। অভিযোগ, যে কৃষকদের থেকে আলু কেনা হয়েছে তার বিবরণ লেখা যে মাস্টার রোলটি নবদিগন্ত তৈরি করেছে তাতে প্রায় ৬০০ ভুয়ো নাম রয়েছে। মাস্টার রোলে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের রঞ্জন রায় নামে এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সই রয়েছে। যদিও আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের বিডিও অফিস থেকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনটিতেই রঞ্জন রায় নামে কোনও প্রধান ছিলেন না। এর পরেই আলু না কিনেই ৫০ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে আদায় করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই সমিতির বিরুদ্ধে। ওই সমিতিকে গোবিন্দবাবু নিজের পদের প্রভাব খাটিয়ে আলু কেনার জন্য প্রচুর টাকা ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ জমা পড়ে। গোবিন্দবাবুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে দেখা যায় তা বন্ধ রয়েছে। তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই গোটা ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রবাল রাহা বলেন, “আমরা ঘটনার দিকে নজর রাখছি।” |