তালিকা লেভি সংগ্রহেরও
এ বার হবে ধান কেনার তালিকা
স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এ বার থেকে ধান কেনার তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রত্যেক বিডিও অফিসকেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকান্তি সাইনি জানান, প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকেই ধান কেনা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতেই এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “অভাবে বিক্রি বন্ধ করতেই চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনে সরকার। প্রকৃত চাষিরাই যাতে সেই সুফল পান, তার জন্য নানা পদক্ষেপও করা হয়। এ বার থেকে সেই তথ্য সকলের সামনে তুলে ধরতে বিডিও অফিসে তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান কেনার তালিকার মতোই নভেম্বর মাস থেকে লেভি সংগ্রহের কাজ শুরু হলে তার তালিকাও প্রকাশ করা হবে। প্রতি বছর এই পদ্ধতিতেই কাজ চলবে।
কিন্তু প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী? প্রশাসন সূত্রে খবর, ধান কেনা নিয়ে প্রতি বছরই বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। যেমন, ফড়েদের কাছ থেকে ধান কেনার ফলে চাষিরা যথাযথ দাম না পাওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের কারচুপি বন্ধ করতে এবার থেকে চাষিদের চেকে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। চাষিদের ‘জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খোলার জন্য প্রশাসনকে জানানোও হয়। কিন্তু তাতেও অভিযোগ ওঠা বন্ধ হয়নি। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরেও অভিযোগ উঠছে যে চাষিদের কাছ থেকে টিপছাপ নিয়ে বা ভুল বুঝিয়ে সই করে একইভাবে ফড়েদের কাছ থেকে ধান কেনা চলছে। তাই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এ বার কোন চাষির কাছ থেকে কতটা ধান কেনা হচ্ছে তার তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, যে সংস্থা বা চালকল চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনবেন তাদের সেই তালিকা পাঠিয়ে দিতে হবে বিডিও অফিসে। তা প্রকাশিত হবে বিডিও-র নোটিস বোর্ডে। সকলেই দেখতে পারবেন এই তালিকা। ফলে মানুষ বুঝতে পারবেন কারচুপি হয়েছে কিনা। কারণ, এলাকার মানুষ জানেন কার কত জমি রয়েছে এবং তাতে কতটা ধান উৎপাদন হতে পারে। আবার কোনও ভূয়ো ব্যক্তির নাম তালিকায় থাকলেও তা ধরা পড়ে যাবে। কেউ অভিযোগ জানালেই তদন্ত শুরু করবে প্রশাসন।
চলতি বছরে বেনফেড, কনফেড, ইসিএসসি, এফসিআই ইত্যাদি সংস্থা এবং রাজ্য সরকার মিলিয়ে ২ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন লেভি (চাল) সংগ্রহের কথা ছিল। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ২ লক্ষ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। ৬ হাজার মেট্রিক টন লেভি সংগ্রহের কাজ বাকি রয়েছে। সময়ের মধ্যে লেভি সংগ্রহের কাজ না শেষ হওয়ার কারণ হিসেবে প্রশাসন জানিয়েছে, নভেম্বর মাস থেকেই লেভি সংগ্রহের কাজ শুরু করতে হয়। কিন্তু সরকারি নির্দেশ, তারপর টাকা আসা- এই সব মিটতে মিটতে দেরি হয়ে যায়। ফলে এবার নভেম্বরের পরিবর্তে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে লেভি সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছিল। এছাড়া গুদাম নিয়েও সমস্যা রয়েছে। দ্রুত লেভি সংগ্রহ করলেও তা মজুত করে রাখার মতো জায়গা নেই। এই সমস্ত সমস্যা মেটাতে এবার জেলায় গুদাম তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকেই যাতে লেভি সংগ্রহ শুরু করা যায় সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। কোন কোন এলাকায় ক্যাম্প করে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে, সেই ধান কোন চালকলে পাঠানো হবে-তা নির্দিষ্ট করার কাজও শুরু হয়েছে। ফলে সরকারি নির্দেশ ও টাকা এলেই ধান কেনার কাজ শুরু করে দেওয়া যাবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। তবে এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা আছে। ফলে খোলাবাজারে ধানের দাম হয়তো বেশিই থাকবে। কিন্তু যে বছর খোলাবাজারে ধানের দাম কম থাকে সেই সব বছরে এই পদ্ধতি মানলে চাষিরা খুবই উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষও। প্রশাসনও এই পদ্ধতিতেই লেভি সংগ্রহের কাজ চালানোর পরিকল্পনা করছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.