|
|
|
|
বিক্ষোভ চলছেই |
এবিজির দাবি মেনে কাল বন্দর-বৈঠক কলকাতায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও কলকাতা |
হলদিয়ায় নয়। পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি-র দাবি মেনে হলদিয়া বন্দরের সমস্যা মেটাতে শেষ পর্যন্ত বৈঠক বসছে কলকাতায়। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ, বুধবার সেই বৈঠক হচ্ছে না। সেটা হবে কাল, বৃহস্পতিবার।
হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এবিজি আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, হলদিয়ায় বৈঠক হলে তারা যাবে না। নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে গত ২৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে তারা হাজিরও হয়নি। ফলে সেই বৈঠক নিষ্ফলাই থেকে যায়। তাই বুধবারের প্রস্তাবিত বৈঠকে এবিজি না-গেলে তার পরিণতি একই হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিল জাহাজি মহল। এবিজি-র তরফে মঙ্গলবার বন্দরকর্তাদের জানানো হয়, তাদের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার বা সিইও দেশের বাইরে আছেন। বুধবারের বৈঠকে তিনি থাকতে পারবেন না। বৃহস্পতিবার বৈঠক হলে এবিজি তাতে যোগ দেবে। বন্দর সূত্রে জানানো হয়, সেই অনুসারে বৈঠক এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ঠিক হয়েছে, হলদিয়ার বদলে বৈঠক হবে কলকাতায়।
মুশকিল আসানের বৈঠকে এবিজি-র উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হলেও হলদিয়া বন্দরের পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি-র ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা এ দিনও বিক্ষোভ দেখান। কাজে পুনর্বহালের দাবিতে হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গত শনিবার থেকেই মঞ্চ বেঁধে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। মঙ্গলবারেও দিনভর অবস্থান চলে। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা সমীরণ বেতাল বলেন, “আমরা কাজ চাই। তবে সেটাও শৃঙ্খলা মেনেই।”
বন্দরের চেয়ারম্যানের তরফে হলদিয়ায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেখানকার কাজের সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থা ও কর্মীর প্রতি একটি আবেদন প্রচার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে-কোনও মূল্যে বন্দরে আসা জাহাজের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় শ্রমিক সংগঠন, কর্মচারী, আধিকারিক, ঠিকাদারেরা যে-ভাবে একযোগে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন, বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশ জৈন তার প্রশংসা করেছেন। সব পক্ষ এই ভাবে কাজ করলে অদূর ভবিষ্যতে বন্দরের সুদিন ফিরবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করেন।
একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, হলদিয়া বন্দরে গত এক মাসে যে-পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা চলতে থাকলে বন্দরের আয় কমে যাবে, জাহাজ কম আসবে, বন্দরের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যেরও ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এবং ভবিষ্যতের সম্প্রসারণ প্রকল্প আটকে যাবে। পরিস্থিতি সে-দিকে গড়ালে শ্রমিক-কর্মচারী এবং ঠিকাদারদের কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে বলেও আবেদনপত্রে জানানো হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধানে অবশেষে সব পক্ষই যে-ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে, তার জন্য তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
চেয়ারম্যানের এই আবেদন সত্ত্বেও আজ, বুধবারেই হলদিয়া টাউনশিপের ডক ইনস্টিটিউটে সন্মেলনের ডাক দিয়েছে ডক বাঁচাও কমিটি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা বন্দরের আধিকারিক রমাকান্ত বর্মনকে বদলি ও সাসপেন্ড করার প্রতিবাদেই এই কর্মসূচি। শ্রমিক-আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার জন্যই ওই আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান বন্দরের চেয়ারম্যান। রমাকান্তবাবু এ দিন বলেন, “বন্দরের যে-অচলাবস্থা চলছে, তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করেছি। তাই আমাকে প্রথমে বদলি, পরে সাসপেন্ড করা হয়। এর প্রতিবাদেই বুধবারের সম্মেলন।” |
|
|
|
|
|