নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফেডারেশন কাপের ব্যর্থতা মুছতে কি হোসে ব্যারেটোকে আবার ফিরিয়ে আনা হল মোহনবাগানে? ব্যাপারটা পুরোপুরি না হোক, ব্যারেটোর অদৃশ্য ছায়া কিন্তু ঢুকে পড়েছে বাগানে। এক নাইজিরিয়ানের হাত ধরে!
দলকে উদ্বুদ্ধ করার সেই ছবি। সেই ধরে-ধরে জুনিয়র ফুটবলারদের ভুল ধরিয়ে দেওয়া। তারকার খোলস ছেড়ে সাধারণের মধ্যে মিশে যাওয়া। মঙ্গলবার যুবভারতীতে এ সব গুণের চাদরেই ঢেকে থাকতে দেখা গেল ওডাফা ওকোলিকে। এত দিন যে ওডাফার জার্সিতে ‘স্বার্থপরের’ অদৃশ্য লোগো ঝুলে থাকত, সেটা আর নেই। যেন ‘একলা চলো রে’-র রিংটোন বদলে ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’ বাজছে! অনুশীলনের পরে নিজের গাড়িতে ওঠার আগে ওডাফা বলে গেলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের জয়ের মধ্যে ফিরতেই হবে।” ওডাফার ‘রিংটোন বদলের’ পাশাপাশিই সবুজ-মেরুন সমর্থকদের জন্য বড় সুখবর, টোলগে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আই লিগের শুরু থেকেই ওডাফা-টোলগে জুটি খেলবে। তবে পুরোপুরি সন্তোষ যুবভারতীতে মঙ্গলবারও ছিল না। মাঠে ঢোকার সময় কোচ সন্তোষ কাশ্যপকে তো এ দিনও ‘গো ব্যাক সন্তোষ’ শুনতে হল! |
লাজং এফসি-র সঙ্গে আই লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে বুধবার সকালেই বেরিয়ে যাচ্ছে মোহনবাগান। ম্যাচ শনিবার। ওডাফারা তিন দিন আগে বেরোচ্ছেন শিলংয়ের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। মঙ্গলবারের অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি প্রাণবন্ত দেখাল নাইজিরিয়ান গোলমেশিনকে। প্রথমে যুবভারতীর এক কোণে আলাদা অনুশীলন। ইদানিং যে ফিটনেস-সমস্যা নিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে, সেই কঠিন বাধাকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলার লড়াই। তার পরে সোজা মাঠে। সাবিথ, অনিল কুমারের মতো সবুজ-মেরুনের অনভিজ্ঞদের সঙ্গে আলাদা করে সময় কাটালেন। সহকারী কোচ বার্নার্ডের অনুপস্থিতি বিন্দুমাত্র টের পেতে দিলেন না। ফেড কাপের দল নিয়েই শিলং যাচ্ছে মোহনবাগান। একমাত্র পরিবর্তন বলতে স্ট্যানলির দলে ফেরা। এখানে অবশ্য কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। একজন ফুটবলার, যে দু’দিন আগেও পিঠের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন, তাঁকে কেন দলে নেওয়া হল? শোনা যাচ্ছে, বার্নার্ডের পদত্যাগের পরে ওডাফাকে সন্তুষ্ট করতেই এই পদক্ষেপ। আর দীপেন্দু বিশ্বাস? এ বারও তাঁর জায়গা হল না দলে। এত সিনিয়র ফুটবলারকে সই করানো হলেও, দলে কেন রাখা হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে যেখানে ব্যর্থতার ঢেউ বারবার আছড়ে পড়ছে পালতোলা নৌকায়। রহিম নবিকে নিয়েও দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না। ডানপায়ের চোট এখনও পুরোপুরি সারেনি। যদিও নবির দাবি, “চোট গুরুতর নয়। আমার খেলতে কোনও অসুবিধা হবে না।” আই লিগ শুরুর আগে শহরে মোহনবাগানের শেষ অনুশীলন দেখতে ভিড় করেছিলেন বেশ কিছু সমর্থক। বিক্ষোভ দেখাতে নয়, ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করতে। মুখে স্লোগান, “হাল্লা বোল, ওডাফার গোল।” সেখানে এখনও ওডাফা নেই! দেখার, ব্যারেটোর মতো ‘শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা’ হয়ে উঠতে পারেন কি না ওডাফা? |