গাড়ি ছোটানোর জাতীয় সড়কে ঘুরছে গরুর পাল
রুর গাড়ি উঠে গিয়েছে কবেই। কিন্তু চার লেনের দু’নম্বর জাতীয় সড়কের উপর গরু চরে বেড়াচ্ছে এখনও। দ্রুত গতিতে যান চলাচলের মধ্যে মাঝরাস্তায় হঠাৎ গরু এসে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন অনেক গাড়ির চালকেরা। তাতে জখম হচ্ছেন যাত্রীরা, মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের।
এমনটা যে হতে পারে সাত বছর আগে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উদ্বোধনের দিনই এমন আশঙ্কা করেছিলেন কেউ কেউ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, সড়কের দু’পাশে এক ধরণের রাসায়নিক ‘স্প্রে’ করার কথা ভাবা হচ্ছে। তা গবাদি পশুকে দূরে রাখবে। কিন্তু এত দিন পরেও সেই ভাবনা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ গত কয়েক বছরে জাতীয় সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় সমস্যাও বেড়েছে। কিন্তু কার্যত সমাধানের কোনও রাস্তাই বের করতে পারেননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সংস্থার প্রজেক্ট ডিরেক্টর কৃষ্ণ মুরারি বলেন, “বিষয়টি দেখাশোনা করে সদর দফতর। তারাই বলতে পারবে।” অন্য এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘মোবাইল রেসকিউ টিম রাস্তার উপরে যথাসম্ভব নজর রাখে।”
এই দৃশ্য রোজকার। অন্ডালে ছবিটি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ।
কিন্তু তা সত্ত্বেও কাটছে না গরুর আতঙ্ক। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তারাপীঠ থেকে ফেরার পথে গলসি’র কাছে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তিন যাত্রীর। বেঁচে যান গাড়ির চালক সঞ্জয় ঘোষ। তিনি জানান, জাতীয় সড়কে গাড়ি ছুটছিল তীব্র গতিতে। হঠাৎ একটি গরু দৌড়ে রাস্তার মাঝে চলে আসে। গরুটিকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। একেবারে মারা না গেলেও জখম হওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে। দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে এমনই এক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গোপালমাঠ এলাকার বাসিন্দা জহর বসু। তিনি জানান, “রাস্তার পাশেই খাটাল রয়েছে। সেখান থেকে মোষের দল বেরিয়ে জাতীয় সড়কের আশপাশে ঘোরাফেরা করে। জাতীয় সড়ক পারাপার করে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে শহরের প্রায় মধ্যস্থলে ডিভিসি মোড়ে খাটাল চলছে রমরমিয়ে। ১৯৮০ সাল থেকে জাতীয় সড়কের দু’পাশে সরকারি জমি দখল করে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা প্রায় আড়াইশো পরিবার খাটাল চালাচ্ছে। দোরগোড়ায় বাঁধা গরু, মোষের দল। পাশেই খড়ের গাদা। খাটালের গন্ধ জাতীয় সড়ক অবধি চলে আসে । তার উপর জাতীয় সড়কের উপর অবাধ গরু, মোষের অবাধ বিচরণে সমস্যায় পড়েন গাড়ি চালকেরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের অন্যত্র বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কিছু খাটাল ছিল। জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে সেগুলিকে সরানো হয়েছে। কিন্তু ডিভিসি মোড়ের খাটাল মালিকরা সে প্রস্তাবে সায় দেননি। ফলে সমস্যা রয়েই গিয়েছে। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, জাতীয় সড়কের ডিভাইডারের উপরে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, “ডিভাইডারে লাগানো গাছ বা ঘাস খেতে গরু, মোষ চলে যায় সড়কের মাঝখানে।” মেয়র জানান, জাতীয় সড়কের দু’দিক অনেকটা ফাঁকা থাকলে গাড়ি চালকেরা দূর থেকে দেখতে পাবেন সড়কে কোনও গবাদি পশু এসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা। তাই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে আশপাশের বেআইনি নির্মাণ বা পার্কিং সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে আর কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়েও চিন্তা ভাবনা চলছে বলে জানান মেয়র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.