সংরক্ষণ শিকেয়, সরকারি সিদ্ধান্তের
প্রতিবাদে আন্দোলনে নাগা মহিলারা
ভোটে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ‘কালো দিবস’ পালন করলেন নাগাল্যান্ডের মহিলারা। তাঁদের ঘোষণা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে, নারী-বিদ্বেষী নেফিয়ু রিও সরকারকে কোনও মতেই ভোট দেবেন না মহিলারা।
দেশের আইন, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও স্রেফ উপজাতি সংগঠনগুলির আপত্তিতে নেফিয়ু রিও সরকার, ভোটে মেয়েদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে গত কাল রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করেন মহিলা সংগঠনগুলি। অবশ্য পাঁচটি জেলায় নাগা উপজাতিদের প্রধান সংগঠন ‘নাগা হো হো’-র রক্তচক্ষুতে মিছিলও বের করতে পারেনি মহিলারা।
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যে টালবাহানা চলছে। আইন থাকলেও পঞ্চায়েত ভোট বা পুর ভোট কোথাওই কোনও রাজনৈতিক দল, উপজাতি সংগঠনের মতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, মহিলা প্রার্থী দিতে সাহস করেনি। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, নগর পরিষদের নির্বাচনে নাগা মহিলা সংগঠনগুলি একজোট হয়ে, নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে সব ক’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিলেন। কিন্তু নাগা হো হো-র কড়া আপত্তিতে ভোটটাই পিছিয়ে দেয় সরকার। এর আগে, পঞ্চায়েত ভোটেও সংরক্ষণের নিয়ম মানতে পারেনি রাজ্য। গত মাসে বিধানসভায় প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়। রাজ্য সরকার নাগা হো হো-র ফরমান মেনে নিয়ে জানায়, মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ অপেক্ষা রাজ্যে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখাটাই অধিকতর কাম্য। শক্তিশালী নাগা হোহো-র সভাপতি ভিভিলেতুও কিয়েউহুয়োর বক্তব্য, “সংবিধানের ৩৭১ (এ) ধারা অনুযায়ী, নাগাদের নিজস্ব রীতি ও উপজাতি প্রথা দেশের সাধারণ আইনের তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। নাগারা নিজেদের রীতি, প্রথা মেনে চলার অধিকারী। জোর করে সংরক্ষণ আইন চাপানো চলবে না।” হো হো-র বক্তব্য, “নাগা সমাজে মেয়েরা অত্যাচারিত নন। তাঁরা স্বাধীন। সে ক্ষেত্রে আলাদা সংরক্ষণের কোনও প্রয়োজন নেই।” ইস্টার্ন নাগা পিপল্স অরগানাইজেসন (ইএনপিও)-ও সংরক্ষণের বিরোধী।
সরকার ও হো হো-র একপেশে মনোভাবের প্রতিবাদে, রাজ্যের সব মহিলা সংগঠন ও মাদার্স অ্যাসোসিয়েশন জোটবদ্ধ হয়ে গত কাল কালা দিবস পালনের ডাক দেয়। বিভিন্ন জেলায় বের হয় মহিলা মিছিল। তাঁরা ঘোষণা করেছে, নারী-বিদ্বেষী ‘ড্যান’ সরকারকে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দেওয়া হবে না। নাগা হো হো-র বক্তব্যের বিরোধিতা করে মহিলা নেত্রীরা বলেন, “মেয়েরা কতটা অত্যাচারিত তা আজ সরকার ও হো হোর ব্যবহারেই প্রকাশ পেয়েছে। নাগা হো হো ও ইএনপিও-র হুমকিতে মকোকচং, কিফিরে, মন, লংলেং, টুয়েনসাং জেলায় মেয়েরা পথেই নামতে পারল না। এর নাম গণতন্ত্র?” নাগা মাদার্স অ্যাসোসিয়েনের বক্তব্য, “এই লড়াই কোনও একটি লিঙ্গের লড়াই নয়, মানবাধিকার রক্ষার লড়াই। আমরা ক্ষমতায় এসে শাসন করি, সিদ্ধান্ত নিই, পুরুষরা সেটাই মেনে নিতে পারছেন না। খামোখা ঐতিহ্যের দোহাই দেওয়া হচ্ছে।” মহিলা সংগঠনগুলির যুক্তি, গ্রামোন্নয়ন পরিষদে মেয়েদের জন্য এক চতুর্থাংশ আসন সংরক্ষণ চলছে। গ্রামেই তো প্রাচীন রীতি বেশি মানা হয়। সেখানে সমস্যা না হলে অন্য স্তরে কেন সমস্যা হবে?
৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের দাবি-সহ স্মারকপত্র রাজ্যপাল নিখিল কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন মহিলা নেত্রীরা। মাদার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে রোজমেরি দিভিচুর দাবি, “বিধানসভার আগের প্রস্তাব খারিজ করে নতুন প্রস্তাব নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক।” নাগা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সানো ভোমুজো বলেন, “নাগা সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত, উন্নততর করে তুলতে মহিলাদের ক্ষমতায় আসা জরুরি। বাইবেলেও নারী-পুরুষকে সমান বলা হয়েছে, অথচ ড্যান সরকার ধর্ম, আইন, সংবিধান কিছুই মানছে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.