১ অক্টোবর, সোমবার ৯টা ২৭ মিনিটে নেতাজি থেকে দমদমের দিকে যাচ্ছে মেট্রো। ট্রেনের শেষ দিকের দ্বিতীয় কামরায় একটি মাত্র আলো টিমটিম করে জ্বলছে। বাকি কামরাটা রীতিমতো অন্ধকার।
৩০ সেপ্টেম্বর, রবিবার চাঁদনি চক থেকে রাতের কবি সুভাষমুখী ট্রেন। বেশ কিছু কামরায় আলো জ্বলছে না। কোথাও কোথাও পাখাও ঘুরছে না।
২৪ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকাল সাড়ে ন’টার দমদমমুখী মেট্রো। সেখানেও একই সমস্যা। বেশ কয়েকটি কামরায় আলো জ্বলছে না, পাখা বন্ধ।
এগুলি কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এমন অসুবিধা নিয়েই রোজ মেট্রোয় যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। ব্যস্ত সময়ে ট্রেনের কামরাগুলি ভিড়ে ঠাসা থাকায় তৈরি হচ্ছে দমবন্ধকর পরিবেশ। বিশেষ করে সকালে সাড়ে আটটার পর থেকে মেট্রোয় অফিসযাত্রীর সংখ্যা এতটাই বেশি থাকে যে, অধিকাংশ সময়ে ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ হতে চায় না। এরই সঙ্গে কিছু পর থেকে এখন যুক্ত হচ্ছে পুজোর বাজারের ভিড়। প্রতিটি স্টেশনেই কখনও ১ মিনিট, কখনও বা ২ মিনিট করে দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন। পরের স্টেশনে একটু দেরি করে ঢুকছে। যার ফলে পরের ট্রেনের ভিড়ও এসে পড়ছে আগের ট্রেনে। এক দিকে পাখা-আলো বন্ধ, তার সঙ্গে অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড়ে রীতিমতো অন্ধকূপের মতো অবস্থা হচ্ছে মেট্রোর কামরাগুলির।
যাত্রীদের অভিযোগ, গরমে অনেকেই মেট্রোর কামরায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শ্বাস নিতে অস্বস্তি হচ্ছে অনেকের। যেমন, আশুতোষ কলেজের ছাত্র দীপঙ্কর ঘোষ প্রতিদিনই উত্তর কলকাতা থেকে যতীন দাস পার্ক যান। সম্প্রতি এক ঘটনায় তিনি সুড়ঙ্গে আটকে থাকা একটি ট্রেনে ছিলেন। সে দিনের দমবন্ধ পরিবেশে অনেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন বলে জানান তিনি। বলেন, “ট্রেনের পাখাগুলি প্রায় প্রতিদিনই বন্ধ থাকে।”
যান্ত্রিক গোলযোগে বেশ কয়েক বার সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেন দাঁড়িয়ে যাওয়ায় মেট্রো-যাত্রা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত বহু যাত্রী। ভাড়া কিছুটা বাড়িয়ে মেট্রোর সমস্যাগুলি কেন মেটানো হচ্ছে না, এমন প্রশ্নও উঠেছে যাত্রীদের মধ্যে থেকেই।
কিন্তু প্রতিদিন মেট্রোর রেকের এই সমস্যা হচ্ছে কেন?
মেট্রো সূত্রের খবর, নোয়াপাড়া এবং কবি সুভাষ স্টেশনে যে কারশেড রয়েছে, সেখানে ‘নন-এসি’ রেকগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হয় না। যদিও এ কথা অস্বীকার করেছেন মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, “প্রতিদিনই কারশেড ছাড়ার সময়ে রেকগুলি পরীক্ষা করে নেওয়া হয়। হতে পারে কারশেড থেকে আসার পথে কোনও যান্ত্রিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।” তবে নিত্যদিন এ ধরনের ঘটনা ঘটে না বলেই দাবি করেছেন তিনি। |