আজ ফের ঝাঁপ খুলছে ডাকব্যাকের
পাঁচ মাস পরে আজ বুধবার ফের খুলছে স্বদেশি আন্দোলনের সময়ে তৈরি সংস্থা বেঙ্গল ওয়াটারপ্রুফ।
শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গত মে মাসে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় ধুঁকতে থাকা এই সংস্থার কারখানা। গত মাসের শেষে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয় কারখানা চালু করে যত দ্রুত সম্ভব উৎপাদন শুরু করে দেওয়া হবে। কারণ ঘুরে দাঁড়াতে ব্যাঙ্ক ঋণ ও রাজ্য সরকারের দেওয়া রুগ্ণ সংস্থার তকমা সদ্ব্যবহার করার জন্য হাতে সময় কম।
১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত সংস্থার সমস্যার সূত্রপাত ২০০৮-এর মন্দা পরবর্তী সময়ে। কার্যকরী মূলধনের অভাবে মার খেতে শুরু করে উৎপাদন। ২০০৯ ও ২০১০-এ তা প্রায় বন্ধও হয়ে যায়। সংস্থা সূত্রে দাবি, কাঁচামাল না-কিনতে পারায় বন্ধ ছিল ৯০% উৎপাদন। শুধু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জন্য ন্যূনতম পণ্য তৈরি করা হত। সংস্থা চাঙ্গা করতে জরুরি ছিল ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাহায্য। কিন্তু সংস্থার ব্যবসায়িক সম্ভাবনা দেখেই এ বার নতুন করে ঋণ দেবে ব্যাঙ্ক। অন্য দিকে কাঁচা মাল কেনার টাকা পেলেই উৎপাদন সম্ভব। জটিল এই আবর্তের বাইরে বেরোনোর রাস্তা খুঁজতে শুরু করে নব্বই বছরের পুরনো ব্র্যান্ড ‘ডাকব্যাক’।
গত এপ্রিলে ১২ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে ব্যাঙ্ক। কিন্তু কারখানায় গোলমালের জেরে সেই টাকা মূলধন হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ হয়নি বলে জানান সংস্থার কর্তা অভিষেক বোস। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। কারখানা খোলার পরে বোঝা যাবে উৎপাদনের পরিমাণ কী হবে। আগামী সপ্তাহে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা কারখানা দেখতে আসবেন।”
ব্যাঙ্ক ঋণের পাশাপাশি রাজ্যের কাছেও সাহায্য চেয়েছিল সংস্থা। সরকারি সূত্রের খবর, শিল্প পুনর্গঠন দফতরের কাছে ‘রিলিফ আন্ডারটেকিং’-এর তকমার জন্য আর্জি জানায় তারা। এই তকমা পেলে নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত পাওনাদারেরা বকেয়ার দাবিতে সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন না। আপাতত বকেয়া বিক্রয় কর ও বিদ্যুৎ মাসুলে ছাড় পাওয়া যাবে। দফতরের সচিব সুব্রত গুপ্ত বলেন, “সব কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং সংস্থার প্রতিশ্রুতি নিয়েই ডাকব্যাককে রিলিফ আন্ডারটেকিং-এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সিইএসসি-ও কারখানা চালুর ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।” তিনি জানান, আগামী ছ’মাসের জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তারপরে সংস্থা কেমন চলছে, তা দেখে এই সুবিধার সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, তা বিবেচনা করবে রাজ্য।
আশঙ্কা ছিল, কিছু ‘আনসিকিওরড ক্রেডিটর’, অর্থাৎ, যে সব পাওনাদার সংস্থাকে ধার দিলেও পরিবর্তে সংস্থার কোনও সম্পত্তি তাঁদের কাছে বন্ধক নেই, তাঁরা পাওনার দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারতেন। সে ক্ষেত্রে আগে তাঁদের বকেয়া সংস্থাকে মেটাতে হত। কোনও ভাবে কারখানা পুনরুজ্জীবনের লগ্নি পেলেও তা বকেয়া মেটাতে খরচ হয়ে গেলে কার্যকরী মূলধনের অভাবে ফের তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই রিলিফ আন্ডারটেকিং তকমা যতদিন থাকবে, ততদিন অন্তত সেই চিন্তা সংস্থাকে করতে হবে না। যে-টাকা জোগাড় হবে, তা আগে কারখানাতেই ঢালতে পারবেন তাঁরা।
এ নিয়ে বার কয়েক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন শিল্প পুনর্গঠন দফতরে কর্তারা। সেই তকমা দেওয়ার আগে গোটা বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়েও দেখেন তাঁরা। যেমন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবসার কী পরিকল্পনা রয়েছে, কত লগ্নি হবে, কী ভাবে তাঁরা কারখানাটি চালাতে চান, সে সবের ভিত্তিতে একটি প্রাথমিক ব্যালান্স শিট এবং সংস্থার ভবিষ্যৎ কাজকর্মের নমুনা লিখিত ভাবে জানাতে হয়েছে সংস্থাটিকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.