সিপিএমের মধ্যেও ভাল লোক আছে। তাঁরাই এখন বুঝছেন, গৌতম দেব, বিমান বসুদের কার্যকলাপ কী রকম ভুল ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারাপীঠে পুজো দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্যই করলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
তার আগে অবশ্য দুপুরে দুবরাজপুরে অন্ত্যোদয় যোজনা প্রকল্পের কার্ড প্রদানের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক রং নয়। বিপিএল তালিকায় প্রকৃত গরিবেরাই যাতে স্থান পায় তা দেখা হবে।” মাস কয়েক আগেই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য সিপিএমকে কার্যত ‘সামাজিক বয়কটে’র নির্দেশ দিয়েছেন। তার নিরিখে প্রশ্ন উঠেছিল, রাজ্যের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে তিনি কী করে এ ধরনের মন্তব্য করেন।
দুবরাজপুরে তাঁর এ দিনের করা মন্তব্যের নিরিখে কী বলা যায় আগের অবস্থান থেকে কী মন্ত্রী সরে এলেন? প্রশ্নের উত্তরে তারাপীঠে মন্ত্রী বলেন, “আমি আমার আগের অবস্থানেই আছি। ওই অবস্থান থেকে কোনও মতেই সরব না। আমি তো বলেছি সিপিএমের মধ্যে যারা দুষ্কৃতী, যারা সন্ত্রাসবাদী তাদের থেকে আমরা আমাদের কর্মীদের সরিয়ে রাখব। তাদের কোনও অনুষ্ঠানেই তৃণমূলকর্মীদের যোগ দেওয়া যাবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “শাসনের সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারের কথায় ধরুন। তিনি কোনও অনুষ্ঠান করলে আপনি কী মনে করছেন আমি ওখানে যাব? কোনও মতেই যাব না। কর্মীদেরও যেতে বারণ করব।” জ্যোতিপ্রিয়বাবু এ দিন সাফ জানিয়ে দেন, “আমার একটাই বক্তব্য, গরিব মানুষের কোনও রং হয় না। তাঁদের বিপিএল কার্ড পৌঁছে দিতে হবেই।”
মন্ত্রীর পাশাপাশি এ দিন দুবরাজপুরের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়, দুই তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ ও আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, এসআরডিএ-র (ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল এজেন্সি) চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা খাদ্য নিয়ামক বাপ্পাদিত্য চৌধুরী-সহ জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকও। ওই অনুষ্ঠানে পারুলিয়া পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর ও বীরনারায়ণপুর আদিবাসীগ্রামের ৭৩টি পরিবারের ৩৮৫ জন সদস্যের হাতে অন্ত্যোদয় যোজনা প্রকল্পের কার্ড তুলে দেওয়া হয়। আগামী শুক্রবার থেকে তাঁরা রেশনে ২ টাকা কেজি দরে চাল ও বরাদ্দ অন্যান্য জিনিস পাবেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “যতদিন না পূর্ণাঙ্গ বিপিএল তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে সেই সময়ের মধ্যে রাজ্যের দরিদ্র ও দরিদ্রতম মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পরিবারগুলির হাতে এই কার্ড তুলে দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর দাবি এখনও পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। |