গলির মধ্যে পাশাপাশি পড়েছিলেন দু’জন। তখনও বেহুঁশ। দু’জনেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সহপাঠীও। মারা গেলেন একই সঙ্গে। একই হাসপাতালে।
কিন্তু, রামপুরহাটের দুই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে অঙ্কিতা প্রসাদ (২০) ও মিতা পাল (২০) কেন যুগলে আত্মঘাতী হলেন, তা নিয়ে থেকে গেল বিস্তর রহস্য। সোমবার রাতে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে তাঁদের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুই বান্ধবী কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মঙ্গলবার বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। তবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে।” অঙ্কিতা ও মিতা রামপুরহাটেরই আসলেহা গার্লস কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সুরতহাল রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে না পেরে আত্মঘাতী’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। প্রদীপ প্রসাদের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে অঙ্কিতাই বড়। প্রদীপবাবু বলেন, “বিয়ের কথা তুললে রাগ করত মেয়ে। পড়াশোনা করে চাকরি করবে বলত। আমরাও ওর মতের বিরুদ্ধে কখনও যাইনি। সেই মেয়ে কেন এই সিদ্ধান্ত নিল, বুঝতে পারছি না।” মিতার কাকা জনার্দন পাল বলেন, “প্রীতি ও রুনু (অঙ্কিতা ও মিতার ডাকনাম) খুব ভাল বন্ধু ছিল। সোমবার বিকেলে রুনু তার দাদুর সঙ্গে বেরিয়েছিল। সাড়ে ৬টায় বাড়ি ফিরলে প্রীতি ডেকে নিয়ে যায়।” তাঁর দাবি, সাড়ে ৭টার সময়ও মিতার মোবাইলে ফোন করলে সে জানায়, অঙ্কিতার বাড়িতে আছে। ৮টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন ফের ফোন করেন মিতার মোবাইলে। ফোন কেউ ধরেনি।
অঙ্কিতার বাড়িতে যোগাযোগ করে মিতার পরিবার। সেখান থেকে তাঁদের বলা হয়, সাড়ে ৭টা নাগাদ দু’জনেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। মিতার বাড়ির কাছেই রামপুরহাট পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি গলিতে রাতে ওই দু’জনকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীরা তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যান। |