নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
পুরনো একটি মামলার সূত্রে কয়লা মাফিয়া কালে সিংহকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে জামুড়িয়ায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কে নিঘার কাছে তাঁকে ধরা হয়।
এক সময়ে লরির খালাসি হিসেবে জীবন শুরু করা কালে সিংহ সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন বছর দুই আগে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে কলেজ গড়ার জন্য লক্ষাধিক টাকার চেক তুলে দিয়ে। সে সময়ে পুলিশ দাবি করেছিল, তিনি কোনও ‘ফেরার’ আসামি নন। যদিও তখনও তাঁর নামে আসানসোল উত্তর থানার রুজু করা মামলা চলছিল এবং তিনি হাজিরা না দেওয়ায় সমনও জারি হয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কালের আদি বাড়ি বার্নপুরের নিউটাউনে। প্রথম জীবনে তিনি লরির খালাসি ছিলেন। পরে চালক হন। এক সময়ে নিজেই লরি কিনে ফেলেন। ওই সময় থেকেই তিনি কয়লার অবৈধ কারবারে যুক্ত বলে পুলিশের কাছে খবর। নিউটাউন ছেড়ে জামুড়িয়ার নিঘা কোলিয়ারির পিছনে আস্তানা গাড়েন তিনি। রহমতনগরের
কালে সিংহ।
—ফাইল চিত্র। |
ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে লোহা পাচারেও হাত পাকান। পুলিশের একাংশ এবং ক্ষমতাশালী কিছু নেতার ইন্ধনও ছিল বলে অভিযোগে। তাঁদেরই হাত ধরে কালে নিঘায় একটি ধাবা খোলেন। সেখান থেকে বেআইনি মদও বিক্রি হতে থাকে। পুলিশের একাংশের দাবি, এর পরেই কালে প্রত্যক্ষ ভাবে কয়লা কারবারে জড়িয়ে পড়েন। নিঘা এলাকায় একের পর এক অবৈধ খাদানের মালিক হয়ে ওঠেন তিনি। কিছু নেতার ছত্রচ্ছায়ায় ২০০৭ থেকে তাঁর নামে ‘প্যাড’ (এক-এক এলাকার মাফিয়ার দেওয়া কয়লা পাচারের রসিদ) চলতে শুরু করে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্যাড চালানোর ‘দায়িত্ব’ পান তিনি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের বছরখানেক আগে প্রকাশ্য সভায় বুদ্ধবাবুর হাতে চেক দিতে যাওয়াতেই গোলমাল বাধে। সংবাদমাধ্যমের লোকজন তাঁকে চিনে ফেলায় পুলিশ এবং সিপিএমের একাংশ অস্বস্তিতে পড়ে যায়।
রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে কালে আরও চাপে পড়েন। আসানসোলে এক লোহা মাফিয়া-সহ তিন জন খুনের ঘটনায় বেশ কিছু কয়লা মাফিয়াকে আটক করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কালেও ছিল। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হননি। পুলিশের একাংশের দাবি, এর পরে অসমে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন কালে। সেখানে রাস্তা তৈরির ঠিকাদারিও করছিলেন। এ দিকে, ২০০১ সালে দুর্গাপুর থানায় রুজু হওয়া কয়লা পাচারের মামলায় দীর্ঘদিন আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর নামে সমন ছিল। এ দিন নিজের গাড়িতে চড়ে যাওয়ার সময়েই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। |