খাতায়-কলমে মহকুমা হাসপাতাল। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়নের বরাদ্দ না মেলায় তা চলছে গ্রামীণ হাসপাতালের আদলে। মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের ঘটনা। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে এখানে গ্রামীণ হাসপাতালকে মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। স্বাস্থ্য ভবনের পাঠানো নির্দেশে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স ছাড়াও মহকুমা হাসপাতালের জন্য অনুমোদন করা হয় বাড়তি ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ৬৮ শয্যার হাসপাতাল করা হয় ১০০ শয্যার। এরপরে পরিকাঠামো গড়ার জন্য বরাদ্দ চেয়ে সমস্ত নথিপত্র পাঠানো হয় রাজ্য পরিকল্পনা দফতরে। কিন্তু বরাদ্দ না মেলায় তা খাতায়-কলমে মহকুমা হাসপাতাল হয়ে আছে। অথচ ২০০১ সালে চাঁচল মহকুমা গঠিত হওয়ার পরে এলাকার বাসিন্দারা আশা করেছিলেন এখন থেকে হাতের নাগালে চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে। ছুটতে হবে না প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মালদহে। কিন্তু এক যুগ পরেও ওই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বঞ্চনার। যদিও নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কোথায় কী সমস্যা আছে সেটা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়মিত জানানো হচ্ছে। সেই হিসেবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চাঁচলেও দ্রুত মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে চাঁচল হাসপাতালে মাত্র ৮ জন চিকিৎসক আছেন। তাঁদের কেউ বিশেষজ্ঞ নয়। প্রত্যেকে মেডিক্যাল অফিসার। অথচ মহকুমার ৬টি ব্লকের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নিয়মিত রোগীদের রেফার করা হয় চাঁচলে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার পাশাপাশি পরিকাঠামো না থাকায় অধিকাংশ রোগীদের ফের রেফার করা হয় মালদহে। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার আছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সেটাও বন্ধ থাকে। সাধারণ রোগীদের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। হাসপাতালে অনুমোদিত সাফাই কর্মীর সংখ্যা ১২ জন। আছেন মাত্র ৪ জন। ফলে তাঁদের দিয়ে গোটা হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয় না। তাই হাসপাতালে ঢুকতে হলে নাকে রুমাল না দিয়ে উপায় থাকে না। চার দিকে আবর্জনার স্তূপ। সমস্যার কথা স্বীকার করেন চাঁচলের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “খাতায়-কলমে মহকুমা হাসপাতাল হলেও এখানে যে পরিকাঠামো দরকার সেটা নেই। রাজ্য পরিকল্পনা দফতরে সব নথি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু টাকা আসেনি। লিখিত নির্দেশ কার্যকর হলে সমস্যা মিটবে। |