একটি পদে বেতন নিই, দাবি দু’জনেরই
জোড়া অধ্যক্ষ-সভাপতির জোড়া চাকরি প্রশ্নের মুখে
ক শিক্ষক কী করে একাধারে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ও চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাতে পারেন, তা জানতে চেয়ে রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তার কাছে চিঠি পাঠালেন এক ব্যক্তি। এ ব্যাপারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্যাটিউট’ বা বিধি কী, তা জানতে চেয়ে শিক্ষা অধিকর্তা চিঠিটি পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি তথা চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায় একাই নন। একই ভাবে দু’টি পদ সামলাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি তথা যোগেশ চৌধুরী আইন কলেজের অধ্যক্ষ মানিক ভট্টাচার্য। দু’জনেই অধ্যক্ষ-পদ থেকে ‘লিয়েন’ না-নিয়ে অন্য পদেও কাজ করছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কোনও কলেজের অধ্যক্ষ অবসর নিলে বা দীর্ঘদিনের জন্য অনুপস্থিত থাকলে তাঁর জায়গায় কলেজের প্রবীণতম শিক্ষককে ‘টিচার-ইন-চার্জ’ হিসেবে নিয়োগ করবে পরিচালন সমিতি। কিন্তু মুক্তিনাথবাবুর ক্ষেত্রে কলেজের দু’জন শিক্ষককে শিক্ষা সংক্রান্ত ও প্রশাসনিক কাজকর্মের দায়িত্ব সামলাতে বলা হলেও আলাদা ভাবে কাউকে টিচার-ইন-চার্জ করা হয়নি। মুক্তিনাথবাবুই অধ্যক্ষ থেকে গিয়েছেন। আর মানিকবাবুর দাবি, তাঁর কলেজ সকালে বলে সেখানে গোটা সময়টা কাটিয়ে তিনি যান পর্ষদের অফিসে।
অধ্যক্ষ হিসেবে মুক্তিনাথবাবু মাঝেমধ্যে কলেজে যান। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা খাতায় সই করেন। কলেজ শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, “বর্তমান পরিচালন সমিতি ওঁকে অধ্যক্ষ করে রেখেছে। কিন্তু সমিতি বদলালে যদি এই ব্যবস্থা মেনে নেওয়া না-হয়, তখন আমরা বিপাকে পড়ব কি না, বুঝতে পারছি না। যদিও উনি জানিয়েছেন, এমন আশঙ্কা অমূলক।” এখনও মুক্তিনাথবাবু কী করে কলেজের অধ্যক্ষ থেকে গিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তা জানতে চেয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ।
অগস্টের শেষে তথ্যের অধিকার আইনে এই কথাটাই শিক্ষা অধিকর্তার কাছে তা জানতে চেয়েছেন এক ব্যক্তি। অধিকর্তা সম্প্রতি চিঠিটি পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে। এবং বিষয়টিকে জরুরি বলে বিবেচনা করার কথাও বলেছেন অধিকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, “চিঠি পেয়েছি। সিন্ডিকেটের পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে।”
উচ্চশিক্ষা দফতর এ ব্যাপারে মুক্তিনাথবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “উনি অধ্যক্ষ হিসেবে বেতন নেন না। তা হলে আর কী দোষ হল?”
মুক্তিনাথবাবুও জানান, তিনি কেবল সভাপতি-পদের জন্য বেতন নেন। তাঁর কথায়, “আমাকে অধ্যক্ষ থাকার জন্য অনুরোধ করেছিল পরিচালন সমিতি। ছাত্রছাত্রীরাও আমাকে চায়। তাই আমি এই দায়িত্ব পালন করছি। এতে কাজের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় এখন অন্য রকম নির্দেশ দিলে আমি তা মানতে বাধ্য।”
মানিকবাবুর দাবি, অধ্যক্ষ হিসেবে বেতন নিলেও সভাপতি হিসেবে তিনি কোনও অর্থ নেন না। তিনি বলেন, “কলেজের পরিচালন সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এবং সরকারি নির্দেশ মেনেই আমি দু’টি দায়িত্ব সামলাচ্ছি।”
তবে একই সঙ্গে দু’টি পদে থাকা ‘বেআইনি’ বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন (ওয়েবকুটা)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তরুণ পাত্র বলেন, “অধ্যক্ষকে ‘লিয়েন’ নিয়ে অন্য পদে যোগ দিতে হয়। কেউ একই সঙ্গে দু’টি পূর্ণ সময়ের ‘অফিস অফ প্রফিট’ বা লাভজনক পদে থাকতে পারেন না। তা তিনি যে-পদের জন্যই বেতন নিন না কেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.