বুদ্ধ-গৌতমের নিশানায় মমতার সংখ্যালঘু-নীতি
ঞ্চায়েত ভোট নজরে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংখ্যালঘু-রাজনীতিকে পাল্টা আক্রমণে নামল সিপিএম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অভিযোগ করলেন, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে মমতার সরকার কাজের কাজ কিছু করছে না। আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেব প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেত্রীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গে সামাজিক বিভাজনের আশঙ্কা নিয়ে।
মুখে বিস্তর প্রতিশ্রুতি দিলেও মমতার জমানায় সংখ্যালঘুদের প্রকৃত উপকার যে কিছু হচ্ছে না, এই অভিযোগ আগেই তুলেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের আয়োজনে সোমবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশ থেকে এই আক্রমণকে আরও ধারালো করে তোলার চেষ্টা চালিয়েছেন আলিমুদ্দিনের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের চোখ যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামীণ সংখ্যালঘু জনতার দিকে, তা বুঝেই তৃণমূল অবশ্য বুদ্ধ-গৌতমদের বক্তব্য নস্যাৎ করে দিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা পরামর্শ, ৩৪ বছর সরকার চালানোর পরে এখন সংখ্যালঘুদের জন্য কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ বনধ রাখুন বুদ্ধবাবুরা!
সোমবারের দলীয় সমাবেশে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বুদ্ধবাবু বলেন, “এই সরকারের কাজ প্রতিদিন মিথ্যা কথা বলা! মুসলিমদের জন্য সব কাজ নাকি করা হয়ে গিয়েছে! কী হয়েছে?” প্রশ্ন তুলেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমরাই তো সংরক্ষণ চালু করেছিলাম। অন্যান্য অনগ্রসরদের (ওবিসি) আরও বেশি সংরক্ষণের আওতায় আনার জন্য বিল পাশ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। সব বাতিল করে দিয়েছে এই সরকার! কাজ কিচ্ছু করা যাচ্ছে না!”
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সরকারি স্তরে মমতার প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে দলের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক গৌতমবাবু সরাসরি নিশানা করেছেন তৃণমূল নেত্রীর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পদক্ষেপগুলিকে। তাঁর কথায়, “ওঁর (মমতা) সব চেয়ে বড় দোষ, হঠাৎ হঠাৎ নমাজ পড়ছেন! রোজা না-করেই বসে পড়ছেন খেতে! ইমামদের ভাতা দিচ্ছেন! শনি পুজো, কালী পুজো যাঁরা করেন, তাঁরা বলছেন, আমরা কী দোষ করলাম?” গৌতমবাবুর আরও মন্তব্য, “এটা ভয়ঙ্কর কাজ করছেন! পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে এই রকম বিভাজন ছিল না। পাশে বাংলাদেশ। তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ করছেন।”
বস্তুত, আমেরিকার প্রসঙ্গ এনেই মমতার সংখ্যালঘু-দরদকে বিঁধতে চেয়েছেন গৌতমবাবু। সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে গৌতমবাবুদের বার্তা, ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনকে মার্কিনরা খুন করেছে ঈদের দিনে। সন্ত্রাসবাদী হলেও ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে হত্যা করার পরে তাঁর দেহ কেন সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল? পরিবারের হাতে মরদেহ তুলে দেওয়ার মানবিকতা কেন দেখাননি মার্কিন কর্তৃপক্ষ? মুসলিম দুনিয়ায় এত নৈরাজ্য তৈরি হচ্ছে কাদের নীল নকশায়? আমেরিকার বিরুদ্ধে একটিও শব্দ উচ্চারণ না-করে কী ভাবে সংখ্যালঘু-প্রীতি দেখাচ্ছেন মমতা? সংখ্যালঘু-ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখেই কৌশলে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা সম্পাদক।
সিপিএম নেতৃত্বের এই সমালোচনা অবশ্য মানতে নারাজ শাসক দল। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, “বাম জমানায় ওঁরা সংখ্যালঘুদের ভোট ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংখ্যালঘু উন্নয়নের যে প্রচেষ্টা চলছে, তা আগের সরকার করেনি। ওঁরা এই কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ বনধ রাখুন! সংখ্যালঘুদের আস্থা যে তৃণমূল নেত্রীর প্রতিই, তা তাঁরা ভোটে বামেদের প্রত্যাখ্যান করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কেউ চেষ্টা করলেও সংখ্যালঘুরা অন্য কারও প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করবেন না।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিধানসভায় পার্থবাবুই এ দিনের সমাবেশ থেকে আগত উত্তর ২৪ পরগনা ফ্রন্টের প্রতিনিধিদলের দাবিপত্র জমা নিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.