|
|
|
|
হলদিয়া-নন্দীগ্রাম ফেরিপথ |
হলদিতে এ বার ‘পোন্টুন’ গড়তে চলেছে এইচডিএ |
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
জেটি একটা আছে বটে। তবে, তা নদীর পাড়ে। আর নাব্যতার অভাবে নৌকা আটকে যায় প্রায় মাঝনদীতে। ফলে কাদা-মাটির বিপজ্জনক পথ পেরিয়েই নৌকায় উঠতে হয় হলদিয়া-নন্দীগ্রাম ফেরিপথের যাত্রীদের। সমস্যা সমাধানে তাই হলদি নদীর ওই ফেরিপথে ‘পোন্টুন’ বা ছোট বার্জ জেটি গড়তে চলেছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ। তবে হলদিয়া ঘাট নয়, আপাতত নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি ঘাটের দিকেই এই পোন্টুন হবে বলে জানিয়েছে এইচডিএ।
প্রায় দু’দশক ধরে হলদিয়া-নন্দীগ্রামের মানুষ কাদা পায়ে ফেরি পারাপারে অভ্যস্ত। কোটালের সময়ে মাঝ নদীতে যন্ত্রচালিত নৌকা আটকে যাওয়ার ঘটনা তো রোজকার ব্যাপার। বড় নৌকার বদলে এখন ছোট যন্ত্রচালিত নৌকায় ফেরি পারাপার হয়। তাতেও সমস্যা কিছুই কমেনি। নদীতে জল বাড়ার অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। ইদানীং সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে দিনের মধ্যে প্রায় ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকে এই পরিষেবা। কারণ পারাপার করতে বড় নৌকার ক্ষেত্রে ৭-৮ ফুট এবং ছোট নৌকার ক্ষেত্রে ৪-৫ ফুট জলের গভীরতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু পলি জমে নাব্যতা কমার কারণে নদীপথের গভীরতা এতই কমে যায় যে, মাঝনদীতেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ভুটভুটিগুলিকে। যন্ত্রচালিত নৌকার মালিক রবীন্দ্রনাথ দাস বলেন, “টানা কোটালের সময় খুব অসুবিধে হয়। যাত্রীরাও বিরক্ত হন। দিনের অধিকাংশ সময় এ ভাবে দাঁড়িয়েই থাকায় আমাদের লোকসানও হচ্ছে।” |
|
এমনই হাল হলদিয়ার জেটির। ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
এই অসুবিধার জন্যই বহু দিন ধরে বিকল্প ব্যবস্থার দাবি করছিলেন নিত্যযাত্রীরা। স্থানীয় শিক্ষক স্বপন রঞ্জিত বলেন, “প্রায়ই নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া যেতে হয় আমাদের। দু’দিকেই হঠাৎ নাব্যতার অভাবে ফেরি বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। এইচডিএ ও হলদিয়া পুরসভাকে বহু বার জানিয়েছি। রাতের দিকে ভুটভুটির সংখ্যা কমে যাওয়ায় আরও সমস্যা হয়।”
যাত্রীদের দাবি মেনে অবশেষে ‘পোন্টুন’ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে এইচডিএ। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড় থেকে প্রায় ১২০ মিটার দূরে গড়ে তোলা হবে প্রায় ১৮ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৫ মিটার চওড়া এই পোন্টুন। ১১৭ মিটার লম্বা ও ২ মিটার চওড়া ‘গ্যাং-ওয়ে’ দিয়ে ওই পোন্টুন সংযুক্ত করা হবে নদীর পাড়ের সঙ্গে। সমগ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ১ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে। এইচডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলগানাথন জানান, সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা ভেবে আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছি। নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি ঘাটের দিকেই সমস্যা সবচেয়ে বেশি। আপাতত ওখানেই ‘পোন্টুন’ গড়া হবে। অবশ্য কবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে তার সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “এর জন্য বন্দরের অনুমতি প্রয়োজন। আমরা ইতিমধ্যেই বন্দরের কাছে ‘নো-অবজেকশন’ চেয়েছি। বন্দর কর্তৃপক্ষ তা দিলেই আমরা টেন্ডার ডাকব।” হলদিয়ার দিকে আপাতত এ ধরনের কোনও পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেনি পুরসভা। হলদিয়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নারায়ন প্রামাণিক জানান, এই কাজে অনেক অর্থের প্রয়োজন, যা আমাদের হাতে এই মুহূর্তে নেই। তবে হলদিয়ার দিকে ভবিষ্যতে একটা এ ধরনের বার্জ গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। |
|
|
|
|
|