|
|
|
|
‘ট্রেভর বলেছিলেন মুখে নয়, অপমানের জবাব মাঠে দিও’ |
দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে। সবে কলকাতার মাটি ছুঁয়েছে বাগডোগরা থেকে আসা উড়ান এসজি-৩২৪। আর তার ১০ মিনিটের মধ্যেই বিমানবন্দরের বাইরে হাজির লাল-হলুদ জনতার নতুন ‘হৃদপিণ্ড’। গাড়িতে উঠে সোজা উধাও। গন্তব্য--পঞ্চসায়রের ‘উপহার’ আবাসন। এবং ফেড কাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা এডে চিডি বাড়ি ফিরে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে...
প্রশ্ন: বিমানবন্দরে আজ লাল-হলুদ সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছিল, এ-বি-সি-ডি/গোল করবে চিডি। শুনেছেন?
চিডি: (এক মুখ হাসি) হ্যাঁ, শুনছিলাম। সামনেই আপনাদের দুর্গা পুজো। ফেড কাপটা আমার তরফ থেকে ওঁদের পুজো-উপহার।
প্র: দু’তিন বছর আগে মোহনবাগানের জন্য ‘পকেট থেকে গোল’ বার করতেন। প্রথম বার লাল-হলুদ জার্সি গায়ে দিয়েও সেই অভ্যাসে দেখা যাচ্ছে মরচে পড়েনি।
চিডি: এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে সেটা সহজ করে দিয়েছে আমার টিমমেটরা। বিশেষ করে ওপারা আর পেন। আমাদের তিন জনেরই মাতৃভাষা ইবো। আরও একজন ‘বিশেষ মানুষ’ আছেন। তিনি, ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। কর্মকর্তাদের আন্তরিকতাও একটা ফ্যাক্টর। এদের জন্যই ইস্টবেঙ্গল তাঁবু আমার কাছে এখন ঘরবাড়ি।
প্র: আপনি ট্রেভর মর্গ্যানের কথা বলছেন। মাত্র তিন মাসেই কোচের ওপর এতটা মজে গেলেন?
চিডি: মর্গ্যান টিমের ফাদারফিগার। মাঠে আপোস করেন না। কিন্তু সেই লোকটাই মাঠের বাইরে মজার মজার কথা বলে সবাইকে রিল্যাক্সড রাখেন। ইস্টবেঙ্গলের এই সাফল্যের জন্য পুরো কৃতিত্বটাই ট্রেভরের। |
|
কলকাতায় নিজের ফ্ল্যাটের সামনে নায়ক। ছবি-সুদীপ্ত ভৌমিক |
প্র: শুরুর দিন থেকে টোলগের সঙ্গে ছায়া-যুদ্ধটা কেমন লাগত?
চিডি: মানে? ঠিক বুঝলাম না।
প্রশ্ন: বলতে চাইছি, এই সেমিফাইনালের আগে পর্যন্তও অনেকে বলেছেন আপনি টোলগের বিকল্প নন। শুনে খারাপ লাগত না?
চিডি: খারাপ লাগবে কেন? ঠিকই বলেছে। আমি আমার মতো।
প্র: প্লিজ, এড়িয়ে যাবেন না।
চিডি: এ সব আমার মজ্জাগত হয়ে গিয়েছে। যখন মোহনবাগানে ছিলাম, তখন সদ্য ভাইচুং ছেড়েছে। প্রথমে সবাই বলত, আমি ভাইচুংয়ের বিকল্প নই। আজ নিশ্চয়ই মোহনবাগান সমর্থকরা সেটা বলেন না। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও হয়তো শুরুতে সে রকমই বিশ্বাস রাখতে পারেননি। এটাই তো পেশাদার জগৎ। কেউ তালি দেবে। কেউ গালি। আমার কাজ নিজেকে প্রমাণ করে তালির আওয়াজটা বাড়িয়ে নেওয়া।
প্র: কালিঘাট মিলন সংঘের বিরুদ্ধে আপনাদের জয় নিয়ে চার্চিল এবং ডেম্পো দু’দলই প্রচুর বাঁকা কথা বলেছিল। সেটাই কি মোটিভেশন বাড়িয়ে দিল?
চিডি: বাঁকা কথা কেন? বলুন গট আপ বলেছিল। সত্যিই শোনার পর বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। তখন ড্রেসিংরুমে ট্রেভর বলেছিল, মুখে নয়। অপমানের জবাবটা মাঠে দিও। সেটা দেওয়া গিয়েছে।
প্র: আপনি প্রতি ম্যাচের আগে ও পরে নিয়ম করে স্ত্রী অ্যাডা-কে ফোন করেন। ফাইনালের আগে স্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হয়েছিল?
চিডি: (হাসতে হাসতে) উফ্, এটাও জানতে হবে? কিছুই না অ্যাডা নাইজেরিয়া থেকে বলেছিল, এই ইস্টবেঙ্গলকেই তুমি মোহনবাগান জার্সি গায়ে চার গোল দিয়েছিলে। আজ ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়ে দেখাও, এখন তোমার হৃদয়ের রং লাল- হলুদ।
প্র: ম্যাচের পর কী বললেন ‘বেটার হাফ’-কে?
চিডি: ফোনে চিৎকার করে বললাম, অ্যাডা, আমি পেরেছি। আই লাভ ইউ বাডি।
প্র: কী বলল শুনে?
চিডি: বলল, এ বার ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ দিতে হবে।
প্রশ্ন: আজ রাতে কোনও সেলিব্রেশন নেই?
চিডি: বন্ধুদের সঙ্গে খেতে যাব। ব্যস। আর বুধবার থেকেই ‘মিশন আই লিগ’ শুরু। |
|
|
|
|
|