পণ্যে মাসুল বাড়ল ২%,
রেল পাবে হাজার কোটি
তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই রেলের বাতানুকূল শ্রেণিতে ভ্রমণ এবং পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে এক দফা সারচার্জ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পরে সোমবার থেকে পণ্য পরিবহণে ফের দু’শতাংশ হারে মাসুল বাড়ালেন রেল-কর্তৃপক্ষ। এই মাসুল বৃদ্ধির সব চেয়ে বেশি প্রভাব কয়লার দামের উপরেই পড়বে বলে রেলকর্তাদের একাংশের অভিমত। তাঁদের আশঙ্কা, এর জেরে কয়লার দাম বাড়ায় বিদ্যুতের মাসুল আবার বাড়তে পারে। রেলের খবর, ২০০৮-’০৯ থেকে কয়লা বহনের ক্ষেত্রে মাসুল ছিল ৫৭ শতাংশ। তার উপরে চাপছে দু’শতাংশ বর্ধিত মাসুল।
তবে রেল দ্বিতীয় দফার এই মাসুল বাড়িয়েছে একটু ঘুরপথে। ঘুরপথটা এই যে, সারা বছরের জন্য এই পণ্য-মাসুল বাড়ানো হচ্ছে না। বছরের মধ্যে ন’মাস এটা নেওয়া হবে। বাকি তিন মাস (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) ছাড়। এই মাসুলের পোশাকি নাম ‘বিজি সিজন ট্যাক্স’ অর্থাৎ ব্যস্ত সময়ের কর। বছরের যে-সময়ে পরিবহণ ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি থাকে, সেই সময়ের জন্যই এই মাসুল। এত দিন এর হার ছিল ১০ শতাংশ। তার উপরে ফের দু’শতাংশ মাসুল চাপায় রেলের অতিরিক্ত আয় হবে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের মুকুল রায় রেলমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরে কংগ্রেস রেল মন্ত্রক হাতে নিয়েই ট্রেনের বাতানুকূল শ্রেণি ও পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে নতুন করে এক দফা সারচার্জ বসায়। কিন্তু তা থেকে আয়ের পুরোটাই পাবে অর্থ মন্ত্রক। আর ব্যস্ত সময়ের কর হিসেবে যে-দু’শতাংশ মাসুল বাড়ানো হল, তা যাবে রেলের তহবিলে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রেল বোর্ডের নির্দেশে (টিসিআর/১০৭৮/২০০৮/১১) প্রতিটি জোনকে এই মাসুল বাড়ানোর কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মাসুল থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে শস্য ও সারের মতো কিছু পণ্যকে। ছাড় রয়েছে কন্টেনার সার্ভিসেও। কন্টেনারে যাঁরা পণ্য পাঠান, তাঁদের সঙ্গে রেলের আলাদা চুক্তি হয়। তাই তাঁদের ক্ষেত্রে এই মাসুল বসবে না।
এই ‘বিজি সিজন ট্যাক্স’ চালু হয় ২০১১ সালের ১ এপ্রিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রেলমন্ত্রী। ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরব হলেও তিনি এবং তাঁর পরে রেলের ভার নিয়ে দীনেশ ত্রিবেদী বা মুকুল রায় এই মাসুল নিয়ে কিছু বলেননি। সেটা থেকেই যায়। এ বার সেই মাসুল আরও দু’শতাংশ হারে বাড়িয়ে দিল রেল। এ বছর এমনিতেই সব কিছুতে ৩.৭ শতাংশ সার্ভিস ট্যাক্স বা পরিষেবা কর বসানো হয়েছে। এ বার পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে আরও দু’শতাংশ মাসুল বাড়ানোর ফলে মাসুল বৃদ্ধির হার গিয়ে দাঁড়াল ৫.৭ শতাংশে। রেলকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এর ফলে কয়লা তো বটেই, দাম বাড়বে সিমেন্ট, লোহারও।এ বছর রেলের আয় অনেকটাই বেড়েছে। চূড়ান্ত আর্থিক দৈন্যদশা অনেকটাই সামলে উঠেছে তারা। পণ্য বহনে দু’শতাংশ মাসুল বৃদ্ধির দরুন বাড়তি হাজার কোটি টাকা ঘরে আসায় রেল অনেকটাই স্বস্তি পাবে বলে কর্তাদের আশা। রেলের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুর বলেন, “রেলের ভাড়া নিশ্চয়ই বাড়ানো উচিত। কিন্তু পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে মাসুল বেশি বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের উপরেই চাপ বাড়বে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.