প্রবল পরাক্রান্ত একনায়কের শেষ মুহূর্তের আকুতি অগ্রাহ্য করেই চলেছিল বেধড়ক কিল, চড়, লাথি। এত দিন মনে করা হত, ন্যাটোর সেনাদের গুলি খেয়েও মুয়াম্মর গদ্দাফি বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সেই শরীরে আর নিতে পারেননি বিদ্রোহীদের গণধোলাই। ২০১১-র ২০ অক্টোবর অবসান হয় গদ্দাফি জমানার।
কিন্তু বাস্তবে নাকি এমনটা আদৌ ঘটেনি। উত্তর-আফ্রিকার দেশগুলির গোপন নথিতে দাবি করা হয়েছে, সে দিন বিদ্রোহীদের ভিড়ে মিশে ছিল এক ফরাসি চর। বিদ্রোহী সেনাদের মারের চোটে নয়, বরং ওই ফরাসি চরের গুলিতেই প্রাণ যায় গদ্দাফির।
প্রশাসনিক ওই নথির দাবি, প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি এক সময় যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিলেন মুয়াম্মর গদ্দাফির। ২০০৭ সালে সারকোজির ভোট প্রচারে বিপুল অর্থ সাহায্য করেছিলেন লিবিয়ার শাসকই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক কালের এই ‘বন্ধু’র বিরুদ্ধেই ন্যাটোর সেনা পাঠানোয় সায় দেন সারকোজি। কোনও ভাবে গদ্দাফি যাতে তাঁর কোনও কীর্তির কথা ফাঁস না করে দেন, সেই জন্যই গদ্দাফিকে খতম করার ছক কষে সকলের অজান্তে চর পাঠিয়েছিলেন ফ্রান্সের সেই সময়ের প্রেসিডেন্ট।
তবে শুধু সারকোজিই নয়, পশ্চিমী দুনিয়ার আরও অনেক নেতার সঙ্গেই ভাল যোগাযোগ ছিল গদ্দাফির। গদ্দাফি-ঘনিষ্ঠ এই নেতাদের তালিকায় ছিল প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টোনি ব্লেয়ারের নামও। গদ্দাফি জমানার পর অন্তবর্তী প্রশাসনের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিব্রিলও স্বীকার করে নিয়েছেন এই তত্ত্ব। মিশরের এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সত্যিই সে দিন বিদ্রোহীদের ভিড়ে মিশে ছিল বিদেশি চর। পাশাপাশি ইতালির এক সংবাদপত্রও দাবি করেছে, ত্রিপোলির গোপন প্রশাসনিক নথি অনুযায়ী ফরাসি আততায়ীর হাতেই মৃত্যু হয়েছিল লিবিয়ার ‘লৌহপুরুষ’ কর্নেল মুয়াম্মর গদ্দাফির। |