স্কুলের কলতলার পাশেই রয়েছে ট্রান্সফর্মার। গা ঘেঁষে রয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। তার গা বেয়ে গিয়েছে ‘আর্থিং’ তার। একটু অসাবধান হলেই তারে হাত লেগে ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সোমবারও কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামের মাঝিপাড়া প্রাথমিক স্কুলের কলতলায় ওই ‘আর্থিং’ তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় স্কুলেরই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সোহেল শেখ। প্রধান শিক্ষক ও এক অভিভাবকের চেষ্টায় কোনও মতে প্রাণে বাঁচে সে। সোহেলকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার ডান হাতের চারটি আঙুল পুড়ে গিয়েছে।
ঘটনার পরেই স্কুলে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাঝিপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। কয়েক বছর আগেই সুরেশ বাগ নামে ওই স্কুলেরই এক ছাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল। দিন কয়েক আগেই ওই তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন পাড়ার এক মহিলা।
এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ স্কুল চলাকালীন স্কুলের কলতলায় যায় যায় সোহেল। ‘আর্থিং’ তারে হাত লাগতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। ‘ভয়ে’ এগোতে সাহস পাননি কেউই। অন্য এক ছাত্রের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন প্রধান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বৃন্দাবনবাবুর কথায়, “আমি গিয়ে দেখি সোহেল কলতলায় পড়ে ছটফট করছে। আর্থিং তারের সঙ্গে ওর ডান হাতটা লেগে ছিল। কোনও রকমে হাতে থাকা খাতার সাহায্যে হাতটা তার থেকে সরিয়ে দিই।” এক অভিভাবক অশোক সাঁতরার দাবি, “ওই অবস্থায় ছাত্রটিতে তুলতে গেলে প্রধান শিক্ষক বা অন্য কারও বিপদ ঘটতে পারত। তাই বাড়ি থেকে ছুটে এসে ট্রান্সফর্মারের জাম্পার নামিয়ে দিই।” প্রধান শিক্ষক ও তাঁর সহকর্মী পূর্ণেন্দু দে সোহেলকে হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসার খরচও দেন শিক্ষকেরাই। সোহেলের পাশে বসে তার মা শাহিদা বিবি ও ঠাকুমা কুলশুনো বিবি বলেন, “আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। এই অবস্থায় প্রধান শিক্ষক ও পাড়ার লোকজন যে ভাবে সাহায্য করেছেন, তা বলে বোঝানো যাবে না।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ট্রান্সফর্মারটি সারানোর জন্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পাড়ার বাসিন্দারা বারবার বিদ্যুৎ দফতরকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এ দিন দুর্ঘটনার পরে ‘আর্থিং’ তার বদলে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু ট্রার্ন্সফর্মারটি সারানোর ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। |