নতুন ভবন তৈরির জন্য রাখা ছিল বাঁশের ভারা। আর সেই ভারা বেয়ে উঠে পাঁচিল টপকে পালিয়ে গেল বন্দি। সোমবার দুপুরে কাটোয়া উপ-সংশোধনাগার থেকে পলাতক এই বন্দির নাম রিপন মোল্লা। বাড়ি বাংলাদেশে। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার বক্তব্য, “সংশোধনাগারের গাফিলতি রয়েছে। সে কারণে সুপারিন্টেন্ডেন্টকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।”
পুলিশ জানায়, গত ১৯ মার্চ কাটোয়া স্টেশন থেকে সন্দেহভাজন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে রেলপুলিশ রিপন মোল্লাকে প্রথমে আটক করে। তার কাছ থেকে জানতে পারে, সে বাংলাদেশের বৈনাপুর সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকেছে। কিন্তু তার কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় রেলপুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের নরেল জেলার লোহাগাড়া থানার কুমড়ি গ্রামে বাড়ি বছর তেইশের রিপনের। তার আইনজীবী পরাড বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৩১ মার্চ রেলপুলিশের তদন্তকারী অফিসার চার্জশিট জমা দিয়েছেন। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে বিচার শুরু হওয়ার কথা।
জেল সূত্রে জানা যায়, মহিলা ওয়ার্ডের জন্য নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে। এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ উপ-সংশোধনাগারের এক কর্মীর নজরে পড়ে, মহিলা ওয়ার্ডের ভবনের গায়ে থাকা বাঁশের ভারাটি সরে গিয়েছে। তা রয়েছে পাঁচিলের গায়ে। পাঁচিলের ও পাশে রয়েছে জলের পাইপ। গামছা দিয়ে বাঁধা রয়েছে পাইপগুলি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ভারা দিয়ে উপরে উঠে ঝুঁকি নিয়ে ওই বন্দি পাইপ বেয়ে নেমে পগারপার হয়েছেন। এ দিন বিকেলে ওই উপ-সংশোধনাগারে তদন্তে যান সুপারিন্টেন্ডেন্ট তথা মহকুমাশাসক আর অর্জুন এবং এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস।
মহিলা ওয়ার্ড ও পাঁচিলের মধ্যে দূরত্ব কম। পুলিশের মতে, পাঁচিল টপকে কলেজ পাড়ার রাস্তায় ওঠে রিপন। সেখান থেকে সোজা অজয়ের বাঁধ ধরে শাঁখাই ঘাট। সেখান থেকে কেতুগ্রামের উদ্ধারনপুর হয়ে নদিয়ার ভাগ্যবন্তপুর। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ঘটনা ঘটেছে দুপুর দেড়টা নাগাদ। তাঁরা খবর পান আড়াইটে নাগাদ। এই এক ঘণ্টা সময় কাটোয়া থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলে তাঁর মত। জেল সূত্রে জানা যায়, ভারা দেওয়ালের গায়ে লাগানো রয়েছে দেখার পরে কোন বন্দি পালিয়েছে, তা খোঁজ করতে বেশ কিছুটা সময় চলে যায়। কাটোয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার, “ওই বন্দির ছবি জোগাড় করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” |