|
|
|
|
|
|
|
স্মৃতি হয়ে গেল সেনবাবুর রেস্তোরাঁ |
দ্বিগুণ সুখ |
বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটকে পেছনে রেখে সিরাজদ্দৌলা সরণি ধরে এগোলে ৩ নম্বরে ছিল ‘দ্বিগুণ সুখ’। ঘরোয়া পরিবেশে খাদ্য-পানীয়ের এলাহি আয়োজনকে মূলধন করে জেনেট লিম স্বামীর সঙ্গে খুলেছিলেন ‘সং হে’, ইংরেজিতে ‘ডাবল হ্যাপিনেস’। সত্তর দশকের কলকাতাকে চিনা রান্নার সঙ্গে যারা পরিচয় করিয়েছিল, তাদের অন্যতম ‘সং হে’। ইউএসপি আন্তরিকতা ও খাবারের গুণমান। এক সময় দেশি মুরগিতে হত চিলি চিকেন। মেনু লিস্ট-এ থাকলেও পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করত রোজকার বাজারের ওপর। এমনই টান, ঝাঁ-চকচকে কলকাতাকে পেছনে রেখে ছুটে আসতে হত এখানে। কফি হাউস যেন, কফিটুকুই নেই যা! ‘সং হে’র সুখ পেলে মজে যেতে হত। হুল্লোড়, আনন্দ, আবার বিচ্ছেদের দুঃখ সহনীয় করে তুলত পানীয়ের গ্লাস হাতে বেছে নেওয়া নিরালা কোণ। ’৮০ থেকে দেখভালের দায়িত্বে তাপস সরকার। |
|
কেজো হাসি ঝোলানো সাহেবি আদবকায়দার ম্যানেজার নন, সাদামাটা বাঙালি চেহারায় ভাঙা হিন্দি আর বাংলায় বুঝে নিতেন কাস্টমারের নাড়ি। বাস্কেট চিকেন, তাইওয়ান স্পেশাল, সেজুয়ান ফ্রায়েড ফিশ তালিকায় হরেক নাম থাকলেও রসিকের ভোটে এগিয়ে চিলি পর্ক। সঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে ‘সং হে’র সম্পর্ক আশির শেষ থেকে। বিদেশে বেড়াতে গিয়ে এক জার্মান ভদ্রলোকের কাছে শুনেছিলেন ‘সং হে’র চিলি পর্ক-এর গুণগান। ফি-বছর শীতে কলকাতায় এক এক দল জাপানি পর্যটক আসতেন, তাঁদের গাইড বুকে থাকত ‘সং হে’র হদিশ। জেনেট লিম-এর পর দায়িত্ব নেন তাঁর ভাই চিনচাং সেন, ক্রেতাদের ‘সেনবাবু’। চল্লিশ পেরিয়ে গত শনিবার অসংখ্য গুণগ্রাহীর মনে এক রাশ মেঘ জমিয়ে নিঃশব্দে স্মৃতি হয়ে গেল এই চিনা রেস্তোরা। শেষ বারের মতো অনুরাগীরা বসেছিলেন সে দিন। ‘সং হে’ শেষ দিনেও আপসহীন। চিলি পর্ক-এর চাহিদা তুঙ্গে থাকলেও চার প্লেটের পর হাত তুলে ফেললেন তাপসবাবু, ‘বাজারে ভাল জিনিস পেলাম না যে’। সবার বিশ্বাস, হারিয়েও হারাবে না ‘সং হে’। ‘নানকিং’-এর মতোই থেকে যাবে অনুরাগীদের স্মৃতিতে, বেদনা আর ভালবাসায়।
|
নতুন লিয়র |
অনেকেই ভাবে তিনি অদ্ভুত, বেয়াড়া / কেউ কেউ ভাবে তিনি বেশ অমায়িক। নিজেকে নিয়েই লিখেছিলেন এডওয়ার্ড লিয়র। দুশো বছর আগে লন্ডন-ঘেঁষা হলওয়েতে জন্ম তাঁর। পেশা ছিল ছবি আঁকা কিন্তু পৃথিবীর সাহিত্য তাঁকে মনে রেখেছে লিমেরিকের জন্য, সেখানে তিনি কিং লিয়র। অদ্ভুত সব চরিত্রকে নিয়ে লেখা সেই পাঁচ লাইনের একার গানগুলি অনুবাদিত হয়েছে পৃথিবীর নানা ভাষায়। বাংলাতেও লিয়র অনুপ্রেরণায় লিখেছিলেন সুকুমার রায়, অনুবাদ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়, জয়ন্ত বসু। এ বার এক আনকোরা অনুবাদ সুকান্ত চৌধুরীর কলমে। সেরিবান থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অনুবাদ ও সম্পাদনায় এডওয়ার্ড লিয়রের লিমেরিক সম্ভার। এক পৃষ্ঠায় একটি কবিতা, সঙ্গে মূল ছবি। সঙ্গে লিয়রের সেই মেয়েটি যার ‘থুতনিটা ছিল পিনের ডগার মতো বেজায় ছুঁচোলো/ সেইটা আচ্ছা করে শানিয়ে/ সাথে এক বীণা নিল বানিয়ে,/ বেশ কটা সুর তাতে ভালোই বাজাল’।
|
|
এলোমেলো |
লোডশেডিং হলে ওরা বসে পড়ত। প্রত্যেকে একটা লাইন। তৈরি হত ছড়া। ওরা রুচিরা, রঙ্গিত, পিয়ালি ও রজতেন্দ্র। পরিবারের চারজন। রুচিরা-রঙ্গিতের ছোটবেলায় আঁকা ছবি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন মা পিয়ালি। সেই সব ছড়া ও ছবি নিয়েই ছাপা হল ছড়াছড়ি। ওদের ছড়া আর ছবিগুলো বই হয়ে গেল। কিন্তু বাকি বন্ধুদের? তাই তৈরি হল এলোমেলো পত্রিকা। সম্পাদক দুই ভাই-বোন। ছবি আঁকা, ছড়া লেখা, বন্ধুদের দিয়ে লেখানো সব ঝক্কি শ্রীশিক্ষায়তনের ক্লাস এইটের রুচিরা আর সেন্ট জেভিয়ার্স-এর ক্লাস সিক্সের রঙ্গিত (সঙ্গে ওর আঁকা ছবি) সামলায়। ওরা ক্লাসিক্যাল শেখে, ম্যাজিক দেখায়, টিভিও দেখে। কিন্তু সময়? রুচিরা জানাল, সময় বের করতে হয় না। ছুটির দুপুরে লিখে ফেলে ছড়া, পাতা ভরা ছবি। ডেটলাইন মানতে হবে যে! ৭ অক্টোবর বিড়লা অ্যাকাডেমিতে প্রকাশিত হবে এলোমেলো’র দ্বিতীয় সংখ্যা। অনেক দিন পর দেখা হবে মাইকেলের (দূরদর্শনের চিচিং ফাঁকের কথা বলা পুতুল) সঙ্গে। সবার আমন্ত্রণ।
|
নাট্যোৎসব |
স্তানিস্লাভস্কি, ব্রেখট, শম্ভু মিত্র কিংবা উৎপল দত্ত সকলেই সমকালীন ক্যানভাসের দিকে চোখ রাখতেন সমকালীন মঞ্চের প্রয়োজনে। সে কথা মনে রেখেই শূদ্রক উৎসব ২০১২-য় অ্যাকাডেমি নর্থ গ্যালারিতে ৩৬ জন শিল্পীর ছবি ও ভাস্কর্য নিয়ে প্রদর্শনী ‘নাটকীয় সংঘাত: জীবন ও প্রকৃতি’, সঙ্গে নাট্যোৎসব ৩-৯ অক্টোবর। অসমের সিগাল নিয়ে আসছে বাহারুল ইসলামের ‘অপেক্ষা’, বাংলাদেশের ঢাকা থিয়েটার-এর নাটক শিমুল ইউসুফ নির্দেশিত ‘ধাবমান’। আসছে মণিপুরের কলাক্ষেত্র এইচ কনহাইলাল-সাবিত্রী হৈস্নামের ‘দ্রৌপদী’ নিয়ে। মহাশ্বেতা দেবীর রচনা অবলম্বনে মহাভারত-এর চরিত্রের সেই অন্ত্যজ-নির্মাণ যেমন আবারও ঘটবে এ শহরের মঞ্চে তেমনই শুধু মহাকাব্য মহাভারত নিয়ে পাঁচ নাটকের এক উৎসবের আয়োজন করেছে ‘কুশীলব’, ৩-৭ অক্টোবর, মধুসূদন মঞ্চে। থাকছে পাণ্ডু (কুশীলব), অতঃকিম মহাযুদ্ধ (চোখ), নানা ফুলের মালা (বহুরূপী), যা নেই ভারতে (সুন্দরম), মাধবী (নান্দীকার)।
|
আনন্দ |
বইপাড়ার কুয়ো থেকে বেরোতে চলেছে ‘আনন্দ’। বই তৈরির ভাবনা এবং বিপণনে। পঞ্চাশ পেরনো এই প্রতিষ্ঠান বাংলা বইয়ের বিপণনে কলকাতা ছেড়ে বেরিয়েছে অনেক দিন। শো-রুম ও বিক্রয়কেন্দ্র হয়েছে কলকাতার বাইরে নানা শহরে। এ বার ২৫তম গ্রন্থবিপণি দিল্লিতে। আগামিকাল চিত্তরঞ্জন পার্কে আনন্দ-র নতুন শো-রুমের সূচনা করবেন উস্তাদ আমজাদ আলি খান। সেখানে নেড়েঘেঁটে দেখা যাবে প্রকাশনার বই। কেনা যাবে আকর্ষণীয় ছাড়েও। পাশাপাশি, ছোটদের বইকেও শুধুই পড়া ও দেখার বৃত্ত থেকে বের করে আনন্দ পৌঁছে দিয়েছে শোনার জগতে। জব্বর এক খামারবাড়ির গল্প নিয়ে ছোটদের বই যে পড়ার সঙ্গে শোনারও হতে পারে বাংলা বইয়ের ইতিহাসে তা প্রথম দেখিয়েছিল আনন্দ পাবলিশার্স। সে বই জনপ্রিয় হওয়ায় এ বার আর একটা, আরও বড় করে। নদী থেকে বিমান, বজ্র থেকে ট্রেন চারপাশের জগতের শব্দগুলো ছবির সঙ্গে ছোটদের চিনিয়ে দিতে। বোতাম টিপলেই শোনা যাবে শব্দ। বইয়ের নাম আমাদের চারপাশের জগৎ (৪০০.০০)। বাংলা বই পড়ায় এই বার ফলশ্রুতি কথাটা আক্ষরিক খাটবে।
|
চলচ্চিত্রের চালচিত্র |
তপন সিংহ একবার আগের বাংলা ছবি নিয়ে বলেছিলেন যে তা ‘সমগ্র বাঙালি সমাজকে টানত। কারণ ছবিগুলিতে থাকত নিখাদ বাঙালি মেজাজ।’ আফশোস যে সেই নিখাদ বাঙালিয়ানার বড়ই অভাব আজকের বাংলা ছবিতে, তপন সিংহও প্রয়াত। তবে তাঁর জন্মদিন ২ অক্টোবর, তপন সিংহ ফাউন্ডেশন তা পালন করবে ৩ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় নন্দনে। তৃতীয় তপন সিংহ স্মারক বক্তৃতা দেবেন শুভেন্দু দাশমুন্সি। দেখানো হবে ‘চলচ্চিত্রের চালচিত্র’, ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলা ছবির ইতিবৃত্ত নিয়ে তৈরি অরিজিৎ মৈত্রের তথ্যচিত্র, ছবিটির ভাষ্যপাঠে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রযোজনায় ইন্ডিয়া গ্রিন রিয়্যালিটি। অন্য দিকে পোল্যান্ডের নিরীক্ষামূলক অ্যানিমেশন ছবির উৎসব ‘হোয়াট ডু উই সি আফটার ক্লোজিং আওয়ার আইজ’। সিগাল ফাউন্ডেশন ফর দ্য আর্টস-এর উদ্যোগে ৪-৬ অক্টোবর, প্রতিদিন সন্ধে ৬টায়। |
অন্ধকারের ভাষা |
|
আর রেখো না আঁধারে, ও আমার আঁধার ভালো, এখনও গেল না আঁধার, এ রকম আরও অনেক রবীন্দ্রনাথের অন্ধকারের গান গেয়েছেন রঞ্জিনী মুখোপাধ্যায়। শৈশব থেকেই তাঁর ধমনীতে উজিয়ে গিয়েছে রবীন্দ্রগান, কারণ কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পিসি। শান্তিনিকেতনের সঙ্গীতভবনে দীক্ষিত এই শিল্পীকে নতুন করে পাওয়া গেল আঁধার-সঙ্গীতে। কবির সৃষ্টিতে অন্ধকার কখনও মৃত্যুর মতো, কখনও সৃজনের উৎসমূল, কখনও আবার তন্দ্রাবিহীন প্রতীক্ষা। এই নিয়ে সুমিতা সামন্তের বিষয়-ভাবনায় এ বারে শম্ভু মিত্রের জন্মদিনে বেরল অডিয়ো-সিডি অন্ধকারের ভাষা (সপ্তর্ষি, ১২৫.০০)। সঙ্গে রয়েছে কাব্য ও গদ্যাংশও, তাতে কবির বিজন মনটিকে ভাষ্যপাঠে তুলে এনেছেন তরুণ নাট্য-অভিনেত্রী অর্পিতা ঘোষ।
|
অসহায় |
জমজমাট পুজোবাজারে গড়িয়াহাটের চারমাথা আলোয়, ভিড়ে, হাঁকাহাঁকিতে টগবগ করছে। কিন্তু ফুটপাথের ওপর চোখ ঝলসানো বড় বড় দোকান সংলগ্ন জেনারেটরের কালো ধোঁয়ার ভয়ানক দম বন্ধ করা দুর্গন্ধ এড়াতে অনেক পথচারীর নাকে রুমাল। কোনও রকমে দ্রুত হাঁটছেন তাঁরা। কিন্তু সারিবদ্ধ হকার ভাইরা অপারগ। তাঁরা নিজেদের পসরা ছেড়ে যাবেন কোথায়? বড় দোকানের জেনারেটরের ধোঁয়ায় দূষণের মাশুল গুনছে তাঁদের অসহায় ফুসফুস। পরিবেশ যে পুজোবাজারে মৃতপ্রায়। প্রশাসন ঘুমিয়ে না কি?
|
বুধসন্ধ্যা |
বুধবারে তার আড্ডা বসে। সে কারণে নাম ‘বুধসন্ধ্যা’। কিন্তু যাঁরা জানেন তিরিশ বছর বয়সি এই তরুণকে তাঁরাই মানবেন, শুধু বারের জন্য নয়, ও নাম সার্থক তার কাজে। এ শহরের বুধমণ্ডলী ওইখানে মেলেন, চর্চা করেন সংস্কৃতির। এবং, সে চর্চাটা একটু অন্য রকম। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন এই সন্ধ্যার জন্মকাহিনি, ‘তখন আমরা প্রায় প্রত্যেকটা সন্ধেই আড্ডা দিয়ে কাটাতাম এখানে ওখানে। স্বাতী একদিন বলল, তার চেয়ে তোমরা একটা ক্লাবের মতো কর না কেন।’ সেই প্রেরণাতেই জন্ম। বুধসন্ধ্যা-র আয়োজনেই সমরেশ বসু অভিনয় করেছেন নাটকে, সেও আজ ইতিহাস। গুরুগম্ভীর তর্কপ্রতর্ক নয়, হাল্কা মেজাজে আড্ডা আর তার মধ্যে দিয়েই নতুন কিছু সৃষ্টি বুধসন্ধ্যা-র বৈশিষ্ট্য। যেমন তিরিশ বছরে আবার, বহু দিন পরে বুধসন্ধ্যা-র নতুন নাটক দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘শাজাহান’। নবকুমার বসু পরিচালনা করছেন নাটকটি, সংক্ষেপকরণ ও সম্পাদনাও তাঁর। মঞ্চ পরিকল্পনা করছেন যোগেন চৌধুরী। অভিনয়ে সুনীল-স্বাতী তো আছেনই, আছেন নবনীতা দেবসেন, ধ্রুবনারায়ণ কুণ্ডু, চিত্রা লাহিড়ী, ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্ত প্রমুখ। নাটকটির প্রথম অভিনয় ৬ অক্টোবর সন্ধেয়, রবীন্দ্রসদনে।
|
প্রদর্শনী |
শহরের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতীয় সংগ্রহশালা পা রাখল বাইরে। ৫ অক্টোবর বিকেলে দার্জিলিঙ রাজভবনের দরবার হলে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী ‘বুদ্ধিস্ট আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট অব সাউথ এশিয়া’। ভারহুত, সাঁচি, মথুরা, তক্ষশীলা, সারনাথ, অমরাবতী, নালন্দা বা দার্জিলিং, সিকিম, ভুটান থেকে সংগৃহীত বৌদ্ধ শিল্পকর্ম সংরক্ষিত আছে সংগ্রহশালায়। তা থেকেই এই প্রদর্শনী। উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। সঙ্গে কর্মশিবির ও কুইজ প্রতিযোগিতা। প্রকাশিত হয়েছে ক্যাটালগ ও বুকমার্ক। প্রদর্শনী চলবে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। এ দিকে ইনফরমেশন টেকনোলজি-র অধ্যাপক বিশ্বতোষ সেনগুপ্তের তৃতীয় একক প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে ৩ অক্টোবর অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ। সন্ধে ৬টায় ডিজিটাল গ্রাফিক আর্টস-এর এই প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেন, সম্মাননীয় অতিথি শান্তিনিকেতন কলাভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও শিল্পী সনৎ কর। প্রদর্শনীটি চলবে ৯ অক্টোবর অবধি।
|
বিদ্যাসাগর |
|
চিত্রটি গত ২৬ তারিখ কলেজ স্ট্রিটের বিদ্যাসাগর টাওয়ারে তোলা। চিত্রেই প্রকাশ, রবিঠাকুরের এই শ্রাদ্ধ, থুড়ি, সার্ধশতবর্ষটি কলকাতাকে ভুলের ভব করে তুলেছে। নইলে বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯১) জন্মদিনটিও এমন সার্ধ-বাসর হয়ে উঠবে কেন? |
নতুন দিশা |
আজকের সংগ্রহশালা কি নিছক জাদুঘর হয়ে থাকবে? অতীত ঐতিহ্যের সংরক্ষণ নিশ্চয়ই জরুরি, কিন্তু আজকের প্রেক্ষিতে আরও জরুরি বোধহয় চারপাশের মানুষের সঙ্গে সেই সংরক্ষিত ঐতিহ্যকে যুক্ত করা। সংগ্রহশালায় সাধারণ মানুষকে কী করে আরও বেশি করে নিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে দেশে-বিদেশে ভাবনাচিন্তার অন্ত নেই। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বস্তু সংগ্রহালয় (একদা প্রিন্স অব ওয়েল্স মিউজিয়াম) এ বিষয়ে এ দেশে রীতিমত অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। ওই সংগ্রহশালার মহাধ্যক্ষ সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এ এই প্রসঙ্গেই আলোচনা করবেন। |
|
বনফুল |
পথের জন্ম জানো কি কোথায় কেউ?/ কোন গুহাতলে, কোন অতলের কন্দরে/ কোন আকাশের কোন সাগরের ঢেউ/ চলার মন্ত্র শুনায় অচল বন্ধ রে...’। ১ বৈশাখ ১৩৫৫ ‘পথের জন্ম’ কবিতায় লিখেছিলেন বনফুল। আর তাঁর রচনাবলি, এই সে দিন পর্যন্ত বইপাড়ায় ছিল অচল, বন্ধ। অতি দীন কাগজে দীনতর সম্পাদনায় মলিন সেই রচনাবলির খণ্ডগুলি দেখে মনেই হত না বাংলা সাহিত্যের যুগান্তকারী ছোটগল্পকার, নির্মোহ ঔপন্যাসিক বনফুলের রচনাবলি এ। এ বার তাঁকে সযত্ন সম্পূর্ণতায় ধরে রাখার উদ্যোগ শুরু হল। কেমন সেই সম্পূর্ণতা? ধারাবাহিক ভাবে তাঁর গল্প, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধগুলিকে ধরে রাখা। থাকতে পারে তাঁর আঁকা ছবিগুলিও। বনফুল কবিতা লিখতেন এ তথ্য অচেনা নয়। ১৯৩৫-এ তাঁর প্রথম উপন্যাসিকা তৃণখণ্ড প্রকাশের আগে বেরিয়েছিল তাঁর কবিতা সংকলন বনফুলের কবিতা। কিন্তু যে তথ্যটি প্রায় চমকে দেওয়ার মতো তা হল ১৯৪৮-এ ওই কবিতাটির সঙ্গেই ছিল একটি ছবি, বনফুলের আঁকা, আর এ পর্যন্ত পাওয়া তাঁর আঁকা সব থেকে পুরনো ছবি ওটাই। বনফুলের সৃজনজীবনে সেই জন্ম, এক নতুন পথের। তার পরে কুড়ি কুড়ি বছর পার হয়ে গিয়েছে চিকিৎসক, কথাসাহিত্যিক আর ব্যক্তি বনফুলের জীবনের, কয়েকটি স্কেচ ছাড়া ছবি তিনি আর আঁকেননি বেশি। ষাটের দশকের শেষে আবার শুরু করলেন ছবি আঁকা, প্রবল ভাবে, আঁকলেন জীবনের শেষ দশকটি জুড়ে। পুত্র চিরন্তন মুখোপাধ্যায়ের সংগ্রহ থেকে সেই সব ছবি নিয়ে প্রদর্শনী হয়েছে দু’একটি। প্রকাশিত হয়েছে সেগুলি নিয়ে অ্যালবামও আ রাইটার্স প্যালেট: পেন্টিংস অ্যান্ড ড্রয়িংস বাই বনফুল। এ বার হাতে এল তাঁর নতুন রচনাসমগ্রের প্রথম খণ্ড (বাণীশিল্প)। চারটি উপন্যাস, দুটি গল্পসংকলন, দুটি নাটক, একটি কবিতা সংকলনের সঙ্গে আছে বইগুলির পরিচিতিও। |
|
|
|
|
শাপমোচন |
ইন্দ্রের সুরসভায় সৌরসেনের মৃদঙ্গের তালে নাচছিলেন ঊর্বশী। সে দিন তাঁর প্রেয়সী মধুশ্রী গিয়েছে সুমেরুশিখরে সূর্য প্রদক্ষিণে। বিরহে সৌরসেনের চিত্ত উৎকণ্ঠিত। অনবধানে মৃদঙ্গের তাল কেটে যেতে সুরসভার অভিশাপে সৌরসেনের রূপ হয় বিকৃত। অরুণেশ্বর নামে জন্ম হল গান্ধার রাজগৃহে। সব শুনে মধুশ্রীও মাথা কুটে পড়ল। ‘ঘটিয়ো না বিচ্ছেদ দেবী, গতি হোক আমাদের একই লোকে, একই দুঃখভোগে।’ মধুশ্রী জন্ম নিলেন মদ্ররাজকুলে, কমলিকা নামে। দুই জনের মর্ত্যে আগমন, বিবাহ ও অরুণেশ্বরের শাপমুক্তি এ নিয়েই রবীন্দ্র-গীতিনাট্য শাপমোচন। এই গীতিনাট্যটি এ বার রূপ পেতে চলেছে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ওড়িশি নৃত্যে। ডোনা প্রবাদপ্রতিম ওড়িশি নৃত্যশিল্পী কেলুচরণ মহাপাত্রের সুযোগ্য শিষ্যা। তাঁর ঘরানা বজায় রাখতে সচেষ্ট। সেই জন্যই ‘দীক্ষা মঞ্জরী’। এর কুশীলবদের নিয়ে ডোনা এর আগে উপস্থাপন করেছেন কৃষ্ণ-সুদামা, শকুন্তলা, পূজারিণী, চিত্রাঙ্গদা, রামায়ণ, গীতগোবিন্দ প্রভৃতি পৌরাণিক কাহিনি। শাপমোচন এর আগে ঢাকায় উপস্থাপিত হলেও কলকাতায় এই প্রথম। কমলিকার ভূমিকায় ডোনা। দেড় ঘণ্টার গীতিনাট্যে থাকবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ভাষ্যপাঠ। ছোট্ট একটি নাচের দৃশ্যে দেখা যাবে সানাকেও। আগামী বুধবার আই সি সি আর-এ। |
|
|
|
|
|
|