পুর চেয়ারম্যান নান্টু পালকে দলে টানার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কংগ্রেসের মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের বিরুদ্ধে পুরবোর্ড চালানোয় ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে সুর চড়াল তৃণমূল। নানাবিধ ক্ষেত্রে দুর্নীতি, ব্যর্থতার অভিযোগ সত্ত্বেও মেয়র কেন স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিচ্ছেন না সেই প্রশ্নও তুলল তৃণমূল। শুক্রবার তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “পুরসভা পরিচালনায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন মেয়র। বহু কোটি টাকা রাজস্ব পড়ে থাকলেও আদায় হচ্ছে না। ওই দফতর মেয়রের হাতে। একসময় মেয়রের হাতে বিল্ডিং দফতর ছিল। সেখানেও তিনি কিছু করতে পারেননি। শহর জুড়ে বেআইনি বিল্ডিং, বেআইনি হোর্ডিং ভরে গিয়েছে। পার্কিংয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। দলের মেয়র পারিষদদের দিয়েও তিনি কোনও কাজ করাতে পারছেন না। এই অবস্থায়, মেয়রের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়া উচিত।” তবে তৃণমূল বোর্ড থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবেন কি না তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “পুজোর মুখে মানুষকে সমস্যায় ফেলতে চাই না। বোর্ড মিটিংয়ের পরে দলের তরফ থেকে আমরা মেয়রকে একটি চিঠি দেব।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “মন্ত্রী যা খুশি বলুন। আমি কিছু বলতে চাই না।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার মন্ত্রীর অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, “গৌতমবাবু বললেই মেয়র পদত্যাগ করবেন না। প্রয়োজনে অনাস্থা এনে বোর্ড ফেলে দিন মন্ত্রী। মেয়র কোনও দিক থেকেই ব্যর্থ হননি। মানুষ আমাদের ক্ষমতায় এনেছেন। আমরা কম আসনে লড়াই করেও সংখ্যায় তৃণমূলের থেকে বেশি। এটা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর মাথায় রাখা উচিত।” সিপিএমের তরফে অবশ্য দুই দলের বিরুদ্ধেই ব্যর্থতার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকী পুরসভায় মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ব্যর্থতার জন্য কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সকলকেই পুরসভা ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। লোকসভা থেকে পুরসভা সব ভোটেই দুই দল যৌথ ভাবে লড়াই করেছেন। পুরসভায় যৌথ ভাবে দল চালাচ্ছেন। ব্যর্থতার ভার দুই দলের। সবাই জানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী পুরবোর্ড চালাচ্ছেন। তিনি পুরসভার কাউন্সিলর। কাজেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে সবার আগে তাঁর পুরসভা থেকে সরা উচিত।” বুধবার কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল। এদিন গৌতমবাবু দাবি করেন, আরও কয়েকজন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ রাখছেন। নান্টুবাবুও দাবি করেন, কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূলে যাওয়ার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের নিয়ে দলীয় অফিসে বৈঠক করেন শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের কোনও কাউন্সিলর তৃণমূলে যাবেন না। মন্ত্রীর এসব দাবির কোনও মানে হয় না।” নান্টুবাবুর তৃণমূলে যোগদান নিয়ে কটাক্ষ করেন শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “গৌতমবাবু আদর্শবাদী নেতা হলে শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানকে দলে নিতেন না।” |