চার দুষ্কৃতী-সহ ধৃত ৭
চিনে ফেলায় খুন কারখানার কর্মীকে
লুঠপাট চালানোর সময় প্রতিবেশী যুবককে চিনে ফেলাতেই সম্ভবত হিন্দমোটরের কাঁসারিপুকুরের বাসন-কারখানার কর্মী পরাগ দত্তকে খুন হতে হয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ৪ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার পরে এমনই দাবি তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে গেটের তালা ভেঙে কারখানায় ঢোকে ওই দুষ্কৃতীরা। বৃদ্ধ পরাগবাবুকে খুন করে বেশ কিছু পিতলের কলসি লুঠ করে তারা। তদন্তে নেমে প্রথমে ওই চোরাই কলসি কেনাবেচায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেন উত্তরপাড়া থানার আইসি প্রিয়ব্রত বক্সি। তার পরেই ওই ৪ দুষ্কৃতী পুলিশের জালে ধরা পড়ে। তাদের কাছ থেকে দু’টি গাড়িও উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার মূল পাণ্ডা রবি দাস। কুখ্যাত এই দুষ্কৃতী ওই কারখানার কাছেই ভাড়া থাকে। কারখানাটিতে রাতে নিরাপত্তারক্ষী না থাকলেও পরাগবাবু সেখানে ঘুমোতেন। তাঁকে ‘সামলাতে’ বিশেষ বেগ পেতে হবে না মনে করেই দলবল নিয়ে সেখানে হানা দেয় রবি। এলাকার ভাড়া থাকায় কোন দিক দিয়ে পালানো সুবিধাজনক হবে, তা-ও সে জানত।
এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃত দুষ্কৃতীরা লুঠ এবং খুনের কথা স্বীকার করেছে। লুঠ হওয়া সামগ্রী পুলিশ উদ্ধার করেছে।”
কাঁসারিপুকুরের ছোটখাট ওই কারখানায় পিতলের কলসি এবং অ্যালুমিনিয়ামের বালতি তৈরি হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে কর্মীরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন, গেটের তালা ভাঙা। ভিতরে বিছানার উপর লুঙ্গি এবং গেঞ্জি ছেঁড়া দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে ছিল পরাগবাবুর দেহ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ বালতি তৈরির কাজ করতেন। কারখানার মালিক হারাধন কংসবণিকের ছেলে সুপ্রতিম থানায় এফআইআর করেন।
পুলিশ জানায়, লক্ষাধিক টাকা মূল্যের পিতলের বালতি (৮২টি) নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেগুলি তারা বিক্রি করে দেয়। দিন সাতেক আগে বড়বাজার কাঁসারিপট্টির ব্যবসায়ী সুশান্ত দত্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শেওড়াফুলির বাসিন্দা সুশান্তের কাছ থেকে পাঁচটি বস্তায় ওই ৮২টি বালতি উদ্ধার হয়। সেই সূত্র ধরেই ওই দুষ্কৃর্মের রহস্যভেদ করেন তদন্তকারীরা। সুশান্তকে জেরা করে পুলিশ চন্দননগর উর্দিবাজার থেকে দিলীপ ভকত এবং তালডাংরা থেকে নেপাল জয়সওয়াল নামে দু’জনকে ধরে ওই কলসি কেনাবেচার অভিযোগে।
বৃহস্পতিবার রাতে বৈদ্যবাটিতে দিল্লি রোডের মোড় থেকে একটি গাড়ি-সহ নূর আলম, সুজিত দাস এবং প্রণব দাস নামে তিন দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। একটি গাড়ি-সহ গ্রেফতার করা হয় রবিকে। পুলিশের দাবি, তারা ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হয়েছিল। নূরের বাড়ি বৈদ্যবাটিতে, সুজিত থাকে মগরার গঞ্জের বাজারে। প্রণব পাণ্ডুয়ার তিন্না এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার ধৃতদের শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের এসিজেএম রতন দাসের এজলাসে তোলা হয়। আদালত সূত্রের খবর, রবি এবং নূরকে ৬ দিন পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুষ্কৃতীরা যখন লুঠপাট চালাচ্ছে, তখন সম্ভবত পরাগবাবু রবিকে চিনে ফেলেছিলেন। সেই কারণেই, স্বাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করতেই ওই প্রৌঢ়কে রবিরা শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পরে বিনা বাধায় গা-ঢাকা দেয়।” পুলিশ সূত্রের খবর, রবি দাগি দুষ্কৃতী। বৈদ্যবাটি, ডানকুনি, বাঁকুড়া, খড়্গপুর-সহ নানা জায়গায় দোকান, গুদাম লুঠ করার অভিযোগ রয়েছে তার নামে। নূর আলমের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। বাকি দু’জনও লুঠপাটে সিদ্ধহস্ত বলে দাবি তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.