কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহে ভক্তদের প্রবেশে আর কোনও বাধা রইল না।
মন্দিরের গর্ভগৃহে ভিআইপি-সহ কোনও ভক্ত, পাণ্ডা, সেবায়েত বা পালাদার প্রবেশ করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মন্দির কমিটির সম্পাদক গোপাল মুখোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন।
এর পরে ওই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টকে বিষয়টি পুনরায় শুনতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সেই শুনানি শেষ হল। ডিভিশন বেঞ্চ গত এক বছরে মন্দিরের পরিবেশ রক্ষা, পাণ্ডারাজ খতম, ভক্ত-সহায়ক পরিবেশ তৈরি, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অনেক নির্দেশ দিয়েছে। এ দিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় ২০০৬ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি বিকাশ শ্রীধর শিরপুরকরের ডিভিশন বেঞ্চ কালীঘাট মন্দির নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেগুলিই এ বার থেকে মন্দির কমিটি, পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে পালন করতে হবে।
ভক্তেরা পাণ্ডা ছাড়াই গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারবেন, গর্ভগৃহ-সহ সর্বত্র সিসিটিভি বসাতে হবে এবং মন্দিরের পরিচ্ছন্নতার জন্য কমিটিকে সারাদিন ব্যবস্থা রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি।
এর পাশাপাশি, মন্দির এলাকার উন্নয়ন করার নির্দেশ ছিল পুরসভা, মন্দির কমিটি, ও রাজ্য সরকারের প্রতি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে জানা গেল, ছ’বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা এখনও পালিত হয়নি। অর্থাৎ, এত বছর ধরে অসংখ্য জনস্বার্থের মামলা আর হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও কালীঘাট মন্দিরকে নিজের অবস্থান থেকে সরানো যায়নি এক চুলও। কোনও নির্দেশ জারির পরের কিছু দিন নিয়ম মতো চলার চেষ্টা হয়েছে। তার পরে বারবারই চেনা ছন্দে ফিরে গিয়েছে কালীঘাট। ২০০৬-এর নির্দেশগুলি ছিল প্রহ্লাদ গোয়েন্কা নামে এক ব্যক্তির করা মামলার প্রেক্ষিতে। এর মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন জনস্বার্থের মামলা হয়েছে।
শেষ মামলাটি করেন সমীর বসু ও সুরভী বসু নামে এক দম্পতি। সেই মামলার সূত্রেই প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চ অনেকগুলি নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন মন্দির কমিটির সম্পাদক। |