|
|
|
|
দিনভর চিকিৎসক-শূন্য থাকল বগুলা হাসপাতাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
শয্যায় অন্তত ৫০ জন রোগী। বহির্বিভাগেও সকাল থেকে রোগীদের লম্বা লাইন। জরুরি বিভাগও উপচে পড়ছে। বুধবার সকালে গ্রামগঞ্জ থেকে আসা মানুষগুলো হাজার খোঁজাখুঁজি করেও কিন্তু বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে কোনও চিকিৎসকের দেখা পাননি। এ দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত হাসপাতাল চৌহদ্দির মধ্যে কোনও চিকিৎসককেই দেখেননি কেউ। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বিভাগে তাই বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা ২৪ ঘন্টা ইন্ডোর, জরুরি বিভাগ, নাইট ডিউটি ও বহির্বিভাগ একা সামলেছেন এক জন চিকিৎসক। প্রবল খাটাকাটনিতে বুধবার সকাল থেকে তিনি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে গোটা একটি বেলা চিকিৎসক শূন্য থাকে গুরুত্বপূর্ণ ওই গ্রামীণ হাসপাতাল। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা। কিন্তু তাঁর বদলি চিকিৎসক পৌঁছতে দুপুর গড়িয়ে যায়।
কর্তাদের চাপে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন সদ্য সুপারের দায়িত্ব নেওয়া বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার। তিনি বলেন, “আমি সোমবার সুপারের দায়িত্ব নিয়েছি। ওই দিন টানা ২৪ ঘন্টা ডিউটি করেছি। কাজে যোগ দিয়েই দেখি, অর্ধেকের বেশি চিকিৎসক ছুটিতে।” বুধবার তিনি নিজে কেন হাসপাতালে উপস্থিত থাকলেন না? এই অবস্থা দেখেও এ দিন কেন তিনি হাসপাতালে থাকলেন না? তার অবশ্য কোনও উত্তর মেলেনি।
ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরেন্দ্রনাথবাবু ছাড়া চিকিৎসকের সংখ্যা ৬ জন। তার মধ্যে ছুটিতে আছেন দু’জন। এক জন ট্রেনিং-এ আছেন, অন্য এক চিকিৎসক হাঁসখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছু দিনের জন্য গিয়েছেন। ফলে দায় চেপেছিল এক জন চিকিৎসকের উপরে। টানা ২৪ ঘন্টা সব কটি বিভাগ সামলে বুধবার সকাল থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
ওয়েস্টবেঙ্গল নন-গেজেটেড হেল্থ এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের নদিয়া জেলা সম্পাদক গোপাল চক্রবর্তী বলেন। “টানা ২৪ ঘন্টা একা হাসপাতাল সামলানোর পরে বুধবার সকালে কর্তব্যরত ওই চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে এ দিন সকাল থেকে হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। কোনও রকম পরিষেবা পাননি রোগীরা।”
হাসপাতালটিতে শয্যা সংখ্যা ৩০টি। কিন্তু গড়ে ৫০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। অবস্থানগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি হাসপাতাল কী ভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা চিকিৎসকশূন্য থাকল, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদার বলেন, “বিষয়টি জানার পরেই তড়িঘড়ি ওই হাসপাতালে চিকিৎসক পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন এমন কাণ্ড ঘটল, তা আমি সুপারের কাছে জানতে চাইব। তার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” |
|
|
|
|
|