|
|
|
|
চাপ কাটাতে শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ পাহাড়ের তৃণমূল |
কিশোর সাহা • দার্জিলিং |
বাইরে ‘চাপ’, ‘চাপ’ ঘরেও। এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিং পাহাড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কার্যত ‘দিশাহারা’। এক দিকে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তাঁদের অনেককে রাজনৈতিক কারণে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, পাহাড়ে সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টাও করা যাচ্ছে না। দলের দার্জিলিং জেলা তথা উত্তরবঙ্গের শীর্ষ নেতারা সে প্রস্তাবে সায় দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় অনেকে দল ছাড়ার কথা ভাবছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হচ্ছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব।
সব ঠিক থাকলে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করবেন দার্জিলিং জেলা কমিটির সদস্য বিশাল ছেত্রী ও দার্জিলিং আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি শ্যাম রাই-সহ পাহাড়ের প্রতিনিধিরা। মুকুলবাবু বলেন, “ওঁরা আসুন। কথা বলি। দেখা যাক, কী করা যায়।” পাহাড়ে একদলীয় কর্তৃত্ব কায়েমের চেষ্টার অভিযোগ নতুন নয়। এক সময়ে অভিযুক্ত ছিল জিএনএলএফ। এখন ‘কাঠগড়া’য় মোর্চা। সম্প্রতি মোর্চা পরিচালনাধীন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ৭২ অস্থায়ী কর্মীকে বদলির নির্দেশ দেয়। বিশাল ছেত্রী, শ্যাম রাইদের অভিযোগ, “জিটিএ ভোট থেকে মৌখিক ভাবে প্রার্থী প্রত্যাহার করেছিলাম। কিন্তু মোর্চা সেই সৌজন্যের পরোয়া করছে না। জিটিএ-তে ক্ষমতায় এসেই ওরা আমাদের কর্মী বলে ৭২-এর মধ্যে ১২ জনকে দুর্গম এলাকায় পাঠানোর সুপারিশ করেছে।”
বিশাল, শ্যামদের অভিযোগ, “আমাদের নেতা-কর্মীদের নানা কায়দায় দলে টানার চেষ্টা করছে মোর্চা। এই বদলির নির্দেশও তেমনই একটা কৌশল।” জিটিএ-এর কার্যনির্বাহী সভার সদস্য বিনয় তামাং অবশ্য বলেন, “কয়েকজন আমাদের দলে সুবিধে না পেয়ে ওদের দলে গিয়েছেন। তাঁরাই এখন নানা অভিযোগ তুলছেন।” তাঁর দাবি, “বিধি মেনে রুটিন বদলি শুরু হয়েছে। কোথাও কারও অসুবিধে হলে, তাঁরা যদি আমাদের জানান, নিশ্চয়ই দেখব।” কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ধরে রাখতে স্থানীয় ভাবে মিছিল-বৈঠকের দাওয়াই বাতলেছিলেন পাহাড়ের কিছু তৃণমূল নেতা। কিন্তু দলের ‘উপর মহল’ তাতে ছাড়পত্র দেয়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতা-কর্মীর কথায়, “দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক মেহনতে পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়েছেন। স্রেফ এই কথা বলে আমাদের নতুন করে সংগঠন বাড়ানোয় বাধা দেওয়া হচ্ছে।” কিন্তু তৃণমূলের অন্দর সূত্রের খবর, এই ‘পরিস্থিতি’তে পাহাড়ে দলের মধ্যে বেড়েছে ‘অসহায়তা’ এবং ‘অস্বস্তি’। এ ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “পাহাড়ের নেতারাও কলকাতায় যাচ্ছেন। ওঁরা গিয়ে আরও বিশদে সব জানাবেন। সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|