নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্য শ্যুটিংয়ে সদ্য লন্ডন অলিম্পিকে চতুর্থ হওয়া জয়দীপ কর্মকার নামছেন না। তবুও আসানসোলের চাঁদমারি শ্যুটিং রেঞ্জে শুক্রবার থেকে চার দিন টিভি ক্যামেরা আর ওবি ভ্যানের বোধহয় অভাব ঘটবে না। জয়দীপের হাতে রাইফেল না থাকুক, শ’দুয়েক প্রতিযোগীর মধ্যে একটি বিশেষ নাম থাকছেআদ্রিয়ান কর্মকার। জয়দীপের সাত বছরের ছেলে। পাঁচ বছর বয়সে শ্যুটিংয়ে হাতেখড়ির পরে যার এটাই জীবনের প্রথম টুর্নামেন্ট। “আমি দশ বছরে শ্যুটিং শুরু করে তেরো বছরে প্রথম টুর্নামেন্টে নেমেছিলাম। আমার ছেলে অন্তত শুরুটায় আমাকে হারিয়ে দিল,” বলার সময় জয়দীপের চোখমুখে টিপিক্যাল একজন গর্বিত বাবার তৃপ্তি।
‘অর্জুন’ জয়দীপের যাত্রা শুরু ইছাপুরে, বিরানব্বইয়ে। কুড়ি বছর পরে ছেলে শুরু করছে আসানসোলে। তবে বাবার প্রিয় ইভেন্ট প্রোন-এ নয়। বরং অভিনব বিন্দ্রার সেরা ইভেন্টএয়ার রাইফেলে। অনূর্ধ্ব বারো বিভাগে নামা আদ্রিয়ানই টুর্নামেন্টের কনিষ্ঠতম শু্যটার। “দিন সাতেক আগে থেকে আমিই ছেলেকে এয়ার রাইফেলের ট্রেনিং দিচ্ছি,” বললেন জয়দীপ। মুচকি হেসে ফাঁস করলেন আরও একটা ইন্টারেস্টিং খবর। বন্ধু অভিনবের সঙ্গে ইভেন্ট বদলা-বদলি করতে চলেছেন জয়দীপ। “ও আমাকে দাঁড়িয়ে রাইফেল ছোড়ার ট্রেনিং দেবে। |
আমি ওকে শুয়ে গুলি ছোড়ার কায়দা শেখাব।” সোজা কথা, অভিনব শিখবেন প্রোন পজিশন শ্যুটিং আর জয়দীপ এয়ার রাইফেল শ্যুটিং। কিন্তু কবে থেকে? জয়দীপই জানালেন, বুধবারই সকালে দুই বন্ধুর অনেকক্ষণ ফোনে কথা হয়েছে। এ দিনই সিঙ্গাপুর থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার কাজ সেরে ফিরেছেন অভিনব। কিন্তু প্রচণ্ড ব্যস্ত। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলিস থেকে বাণিজ্যিক প্রতিনিধিরা আসছেন অভিনবের কাছে। তার পরেই তিনি উড়ে যাবেন দুবাই। “পুজোর সময় একটা সুযোগ আছে। কিন্তু ওকে বললাম কলকাতার পুজোয় অনেক বছর থাকিনি। এ বার ধুনুচি নাচার ইচ্ছে আছে। হয়তো পুজোর পরেই দু’জনে একসঙ্গে ট্রেনিং করব,” বললেন জয়দীপ। সব ঠিকঠাক এগোলে নভেম্বরে দিল্লির তুঘলকাবাদ রেঞ্জে জাতীয় শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপেই অভিনবের ইভেন্টে জয়দীপকে দেখা যাবে। এবং উল্টোটাও। রাজ্য মিট ও পূর্ব ভারত শ্যুটিংয়ে নামছেন না অলিম্পিক থেকে ফিরে এখনও প্র্যাক্টিস শুরু না করায়। “এখানকার কারও কাছে অলিম্পিয়ান হেরে গেলে লজ্জার ব্যাপার হবে, তাই নামছি না,” রসিকতার পরে জয়দীপের সিরিয়াস মন্তব্য, “সামনের বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নামার আগে আমি কিছু নতুন ব্যাপার আমার শ্যুটিংয়ে যোগ করতে চাই। এখন সেগুলোর চর্চাই আমার প্রধান কাজ।” |