ভোটের ঢাকে কাঠি
হাতছাড়া রেল, ছন্দপতন ত্রিপুরা তৃণমূলের প্রচারেও
১) আগরতলায় রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের অফিস হবে। রেলে ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ বাড়বে।
২) শিলচর-আগরতলা পথে চালু হবে নয়া এক্সপ্রেস ট্রেন। নাম হবে ত্রিপুরেশ্বরী এক্সপ্রেস।
এমন নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে ত্রিপুরার মানুষের সামনে হাজির হচ্ছিলেন মানিকবাবু, মানিক দেব। তাঁর পরিচয়, তিনি ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতনে খানিকটা দিশেহারা তাঁরা। যে রেলকে হাতিয়ার করে ত্রিপুরার আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস লড়াইয়ে নামবে ভেবেছিলেন মানিকবাবুরা, সেই রেলই হাতছাড়া হয়ে গেল।
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই শেষ হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার মেয়াদ। আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিধানসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব হাতে পেয়ে মানিকবাবু দলীয় সংগঠন গড়ে তুলতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি শুরু করে দিয়েছেন ছোট ছোট জনসভা। আর এই সব সভাতে রাজনীতির থেকেও বেশি উঠে আসছিল উন্নয়ন, বিশেষ করে রাজ্যে রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন। মানিকবাবু রেলমন্ত্রীর প্রতি তাঁর ভরসার কথা শোনাচ্ছিলেন স্থানে স্থানে। কর্মীসভাগুলিতে বুঝিয়ে বলছিলেন, আগামী রেল বাজেটে ত্রিপুরার প্রাপ্তির সম্ভাবনার কথা। কর্মীদের বলছিলেন, দলীয় প্রচারে যেন গুরুত্ব পায় রেল। একই সঙ্গে প্রকাশ্য বক্তৃতায়ও তুলে আনছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের নানান প্রয়াসের কথা।
জনসভাগুলিতে মানিকবাবুরা দাবি করছিলেন, আগরতলায় রেলের ইন্টারভিউ বোর্ড গঠিত হচ্ছে। অফিসারদের সঙ্গে স্থানীয় নেতারাও বোর্ডের সদস্য মনোনীত হবেন। তখন রেলে ত্রিপুরার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে যাবে। সাব্রুম পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে যেতে মুকুলবাবু শুরু থেকেই আগ্রহী বলেও জানাচ্ছিলেন তিনি। মানিকবাবুর কথায়, “রাজ্যের দূরতম প্রান্ত, সাব্রুমের রেলস্টেশনটি রেলমন্ত্রী নিজে উদ্বোধন করতে চেয়ে বিভাগীয় অফিসারদের চাপে রেখেছেন।” এ ছাড়া, শিলচর-আগরতলা এক্সপ্রেস ট্রেনের যে-দাবি শুরু থেকেই উঠছে, সে কথার উল্লেখ করে তৃণমূল সভাপতি বলছিলেন, “আমরাও রেলমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী বাজেটে এ সংক্রান্ত ঘোষণা থাকবে।” সেই প্রস্তাবিত ট্রেনের নাম কী হতে পারে তাও আলোচনা করে মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ত্রিপুরেশ্বরী এক্সপ্রেস। ট্রেন চালুর আগেই মানিকবাবু প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছিলেন, উপজাতিদের প্রধান উৎসব, খারচি পুজোর সময় বিখ্যাত চতুর্দশ দেবতার মন্দির-সংলগ্ন স্থানে দু’মিনিটের জন্য ট্রেনটি থামবে।
এত কিছুর পরে হঠাৎ রেলও গেল, মুকুলও গেল। অতঃ কিম্? খানিকটা দিশাহারা, সামান্য বিভ্রান্ত এবং অনেকটাই হতাশ হলেও তা প্রকাশ করতে নারাজ মানিকবাবুরা। প্রত্যাশা যে হোঁচট খেল তা স্বীকার করেও মানিকবাবুর বক্তব্য,“বৃহত্তর স্বার্থে সমর্থন প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আপাতত, প্রস্তাবিত রেল প্রকল্প নিয়ে ত্রিপুরার আশা মার খেয়েছে বলে মনে হলেও, অদূর ভবিষ্যতে কি হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। বরং পরবর্তী লোকসভা ভোটের পর তৃণমূলের ক্ষমতা আরও বেড়ে যেতে পারে। বাড়তে পারে ত্রিপুরার সম্ভাবনাও। এখন সেটাই বোঝাব মানুষকে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.