বল্গাহীন দৌড় আপাতত থেমেছে। কিছুটা স্থিতি এসেছে সোনার দামে। ডামাডোল কাটায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ক্রেতা-বিক্রিতা, দু’পক্ষই।
স্বস্তির ছাপ পড়তে শুরু করেছে বাজারেও। গত মাসের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে প্রায় ১০%। তা ছাড়া এই তো শুরু। শিল্পমহলের দাবি, উৎসব ও বিয়ের মরসুম মিলিয়ে বিক্রি আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে। গত কয়েক মাসের বিক্রির ভাটা পুষিয়ে দিতে পারে এই ঊর্ধ্বমুখী বাজার। সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন গয়না ব্যবসায়ীরা।
গত সাত মাস সমস্ত হিসেব উল্টে দিয়ে বেড়েছে সোনার দাম। ভারতের মতো দেশে যেখানে সোনার চাহিদা গোটা বিশ্বকে পিছনে ফেলেছে, সেখানে এর প্রভাব চোখে পড়ার মতো। ২০১২-এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মোট সোনার চাহিদা দাঁড়িয়েছে ৯৯০ টন। ২০১১-এর একই সময়ের তুলনায় ৭% কম। কারণ গত বছরের সঙ্গে এ বছর দামের ফারাকও ৭%। আকাশছোঁয়া দামের জেরে কমেছে গয়নার চাহিদা। মাত্র ৪১৮ টন সোনা কিনেছে এই শিল্প।
দেশের অন্যান্য বাজারের মতোই মিইয়ে গিয়েছিল কলকাতাও। ৩২ হাজার পেরিয়ে যাওয়া সোনার দাম দেখে প্রমাদ গুনেছিলেন গয়না ব্যবসায়ীরা। কোনও ক্রেতাই সোনায় হাত দেওয়ার বিশেষ সাহস করেননি। সেই প্রথম ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাজার। বি সি সেন জুয়েলার্স-এর প্রধান সুবীর সেনের দাবি, গয়না কেনা দেশের সামাজিক সংস্কৃতির অঙ্গ। ৩০ হাজার ছুঁয়ে ফেলা দাম এখন মেনে নিয়েছেন ক্রেতারা। তিনি বলেন, “দরে স্থিতি এসেছে। সামান্য হলেও তা কমেছে। তাই উৎসব ও বিয়ের মরসুমের দিকে নজর রেখে ইতিমধ্যেই ১০-১৫% বিক্রি বেড়েছে।”
একই সুরে এম পি জুয়েলার্সের অন্যতম কর্ণধার রুদ্র রায়চৌধুরীর দাবি, উৎসবের আলো ঝলমলে দিনগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জৌলুস ফিরছে গয়নার বাজারেও। তাঁর মতে, উৎসব ও বিয়ের মরসুমে গয়না কিনতে টাকা ধরে রাখেন ক্রেতারা। এ বার তা কাজে লাগাচ্ছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “গত দশ বছর ধরে সোনার দাম লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে লগ্নির কারণেও সোনা কেনার চাহিদা বাড়ছে।” বাজারের এই ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’ ছ’মাস বহাল থাকবে বলে মনে করছে স্বর্ণ শিল্পমহল। শ্রী গণেশ-এর উমেশ পারেখ জানান, গত বছরের তুলনায় আগামী দুই ত্রৈমাসিকে গয়নার সোনার চাহিদা দ্বিগুণ হবে। কারণ, ডলারের তুলনায় টাকার দাম বেড়েছে। সঙ্গে রয়েছে উৎসব ও বিয়ের চিরাচরিত বাজার। |