নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
মণ্ডপ জুড়ে নানা চালচিত্র। কোথাও অসুর পালিয়ে যাচ্ছে দেওয়ালের ফাটল গলে। দেবী ত্রিনয়ন মেলছেন। দৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে ক্রোধ। অন্যত্র সপরিবার দেবীর মূর্তিতে পদতলে অসুরকেও স্তব করতে দেখা যায়। এখানে কিন্তু সে পলাতক। এমনই অভিনব ‘থিম’ নিয়ে এ বার হাজির হচ্ছে বড়নীলপুরের চৌরঙ্গী ক্লাবের পূজো।
এই পুজো আসলে চার বন্ধুর মস্তিষ্কপ্রসূত। থিমের জনক তাঁরাই। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই সামনে আসতে চান না। চারমূর্তি বিকাশ দাস, স্বরূপ দাস, রাজু রায় ও অর্পূব নন্দী এই মণ্ডপসজ্জায় জান লড়িয়ে দিয়েছেন। কেউ মূর্তি নির্মাণ, কেউ প্রতিমার সজ্জা, কেউ মণ্ডপের ভিতর-বাইরের সাজ নিয়ে ভয়ঙ্কর ব্যস্ত।
মণ্ডপ জুড়ে গড়ে উঠেছে একটি পর্বত, তাতে রয়েছে গুহা। গুহার মধ্যে দেবী অসুর নিধনে মত্ত। গুহার ফাটল ভেদ করে পালিয়ে যাচ্ছে অসুর। |
গুহার পরিবেশ গা ছমছমে। নানা জায়গায় তৈরি হচ্ছে বন। সেই বনের মধ্যে রয়েছে শ্যাওলাও। উড়ছে চামচিকে। সেই পরিবেশেই ভয়াল উপস্থিতি দেবীর। তাঁর গায়ের রং তামাটে। হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিনি অসুর মোকাবিলায় প্রস্তুত।
কেন এবার এমন ‘থিম’? বিকাশ আর স্বরূপের ব্যাখ্যা, “সমাজে নানা অশুভ শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। মানবিকতা হারিয়ে গিয়েছে। বিপন্নের পাশে নেই। পেশিশক্তির আস্ফালন দেখা যাচ্ছে। এ সমস্ত মানুষ-অসুরদের প্রভাব। অসুরেরা আসলে মানুষের ছদ্মবেশে সমাজের বুকে নেমে এসেছে। আমরা চাই শুভ শক্তি অশুভ শক্তিকে দমন করুক। তাই এই থিম বেছে নিয়েছি। যেখানে অসুরকে পালাতে হচ্ছে দেবীর সামনে থেকে। সে যুদ্ধ পর্যন্ত করতে পারছে না।”
মণ্ডপে অসুরের থিম গড়ে সমাজের অসুরদের তাড়ানো যায় কি না, তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ থাকতে পারে। কিন্তু একটা বিশ্বাস আঁকড়ে ওঁরা রাতদিন খেটে চলেছেন, এ-ও তো কম নয়। |