যানজটে জেরবার জামুড়িয়া
পড়েই রয়েছে নতুন গুদাম পণ্য তোলা-নামা যত্রতত্র
ত্রতত্র পার্কিং। ফুটপাথ দখল করে রাখা দোকানের পসরা। যেখানে-সেখানে মালবাহী গাড়ি রেখে জিনিসপত্র তোলা-নামানো। জামুড়িয়া শহরে এ সব নিত্যচিত্র। আর এর ফলে যানজটে জেরবার শহরের বাসিন্দারা। পণ্য ওঠানামার জন্য এক সময়ে গুদামঘর তৈরি করেছিল পুরসভা। তবে সেগুলি বিলিবণ্টন না হওয়ায় রেহাই মেলেনি বাসিন্দাদের।
জামুড়িয়া পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, যান চলাচলের ব্যাপারে শহরে কোনও বিধির বালাই নেই। মাঝে-মধ্যে পুলিশ-প্রশাসন নানা নিয়মের কথা ফলাও করে চালু করলেও কয়েক দিনের মধ্যে সে সব শিথিল হয়ে যায়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ যাদব অভিযোগ করেন, শহরকে যানজট মুক্ত করতে শহরের বাইরে বাইপাসের ধারে ট্রাক টার্মিনাস, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ও তার কাছেই ১৪টি গুদামঘর নির্মাণ করেছিল পুরসভা। কিন্তু ট্যক্সি এখনও বাজারের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকে। গুদামঘরগুলি ব্যবহারের অভাবে জীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলি আবার সংস্কার করে রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা।
এলাকার তৃণমূল নেতা তথা দলের প্রদেশ কমিটির সদস্য হারাধন ভট্টাচার্য জানান, রাস্তার দু’পাশে পায়ে হেঁটে যাওয়ার জায়গা নেই। সবই দখল করেছেনে দোকানদারেরা। রাস্তায় ইচ্ছে মতো মিনিবাস দাঁড়িয়ে পড়ে। কার্যত রাস্তা আটকে দোকানের সামনে গাড়ি রেখে পণ্য ওঠানামা করেন ব্যবসায়ীরা। হারাধনবাবুর বক্তব্য, “এ সব বন্ধ করতে হবে। রাস্তা দখল করে রাখা হকারদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পুরসভার দিশাহীন পরিকল্পনার কারণে সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হচ্ছেন। নিরাপত্তার অভাবে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কেউ গুদামঘর নিতে আগ্রহ দেখাননি।” তাঁর আরও দাবি, একান্ত বাধ্য না হলে কেউ অত দূরে ট্যাক্সি চড়তেও যান না। ফলে ট্যাক্সি বাজারে এসে দাঁড়ায়। তাঁর মতে, শহরের প্রধান বাজারের কাছে সিনেমা হল মোড়ে গুদামঘর নির্মাণ হলে এই সমস্যা হত না। থানা মোড় ও নন্ডি মোড়ের কাছে ট্যক্সি স্ট্যান্ড করা প্রয়োজন বলে তাঁর দাবি।
বিলি হয়নি পুরসভার তৈরি করা এই গুদামই। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
জামুড়িয়া বাজারে ১৬টি বড় পাইকারি দোকান রয়েছে। স্থানীয় বণিক সংগঠনের সম্পাদক অজয় খেতান জানান, পুরসভার কাছে তাঁরা জেনেছেন, গুদামঘরের ব্যাপারে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছিল। অজয়বাবুর দাবি, তা হয়তো ব্যবসায়ীদের চোখে পড়েনি। আবার বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে বণিক সংগঠনকে একটি চিঠি দিয়ে তা জানানোর অনুরোধ করেছেন পুরসভাকে। তিনি বলেন, “তবে শুধু পণ্য ওঠা-নামাই যানজটের প্রধান কারণ নয়। প্রশাসনকে যানজট রুখতে নানা বিধিনিষেধ কঠোর ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বণিক সংগঠন প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।”
আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়ের দাবি, জামুড়িয়ায় কোথায় বাস দাঁড়াবে, পুরসভা পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সে ব্যাপারে কখনও কোনও নিয়ম তৈরি করেনি। বাড়ি বা দোকান থেকে হাত দেখালেও বাস দাঁড়াতে বাধ্য হয়। সুদীপবাবুর বক্তব্য, “পুরসভা ও পুলিশ জায়গা নির্দিষ্ট করে দিলে সেখানেই বাস দাঁড়াবে।”
বিগত প্রায় ১৭ বছর ধরে জামুড়িয়া পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭-এ বাইপাসের ধারে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ও ট্রাক টার্মিনাসের উদ্বোধন হয়েছিল। গুদামঘর নির্মাণ হয় ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে। বিজ্ঞাপন দেওয়া সত্ত্বেও কোনও ব্যবসায়ী আগ্রহ দেখাননি। পুরপ্রধান ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি পদে এসেছি ২০১০ সালে। গুদামের ব্যাপারে তার আগে কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল কি না খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” তিনি জানান, সম্প্রতি বণিক সংগঠনের সঙ্গে এ নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে। গুদামঘরে কিছু কাজ চলছে। বিজ্ঞাপন দিয়েই সেগুলি ব্যবসায়ীদের দেওয়া হবে। পুরপ্রধানের আরও দাবি, পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যানজট নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সপ্তাহখানেক আগেই জামুড়িয়ায় আলাদা ট্রাফিক অফিস খোলা হয়েছে। যে সব সমস্যা আছে তার প্রতিকার করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.