কুর্তার কর্তালিকে টেক্কা ওপারা সিল্কের
মাঝে আর মোটে তিনটে শনি-রবি।
বিশ্বকর্মা বলে দিয়ে গিয়েছেন, এ বারে শপিং-টপিংগুলো চটপট সেরে ফেলো! চিন্তা নেই, সামনেই মাস পয়লা।
অবশ্য সে সবের তোয়াক্কা না করেই ইতিমধ্যে দোকান-টহলে নেমে গিয়েছেন দিদি-মাসি-ছোড়দারা। ‘জেনারেশন নেকস্ট’-এর তো কথাই নেই। কানে হেডফোন, পকেটে আইপড, চোখে চিলের নজর। দাবি একটাই, নতুন কিছু লাগবে। এক্কেবারে ঝাক্কাস!
ফ্যাশনে সাহস দেখানোর ব্যাপারে কোনও দিনই কলকাতার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই আসানসোল। মাঝে-মধ্যেই ঝিমঝিমে বৃষ্টিতে কাঁধ ভিজিয়েও এ বারও ‘অল আউট’ যেতে চাইছে খনিশহর। ব্র্যান্ডের চেনা ছন্দ হলে তো ভালই। ছন্দ ভাঙতেও আপত্তি নেই! এর মধ্যে অনেকেই এমন আছেন, যাঁরা স্বচ্ছন্দে কলকাতার নিউ মার্কেট বা গড়িয়াহাটে ঢুঁ দিতে পারেন। কিন্তু পুজোর কেনাকাটা করতে ফিরেছেন নিজের শহরেই।
বেঙ্গালুরুর আইটি হাবের প্রাক্তন ছাত্রী সুচরিতা মাজি যেমন। চাকরি কলকাতায়, আপাতত বাসাও সেখানে। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে পছন্দের দোকানে ঘুরবেন বলে আসানসোলে চলে এসেছেন। তাঁর মতে, “পুজোয় শুধু ট্র্যাডিশনাল কেন, পাশ্চাত্য পোশাকেও শালীনতা বজায় রেখে ফ্যাশন করা যায়।” তাঁর পছন্দের তেমন সব পোশাকে ভরেও রয়েছে বাজার, জানিয়ে দেন সুচরিতা। টিন-এজারদের জন্য যে আনকোরা নতুন কিছু আকাশ থেকে পড়েছে, তেমন নয়। তবে বাজার বলছে, বিভিন্ন রঙের জিন্সের প্যান্ট হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অল্পবয়সী মেয়েরা। চোখ ধাঁধানো পাকা রঙের স্কিন টাইট স্ট্রেচেবল পেন্সিল কিটও বিকোচ্ছে দুরন্ত গতিতে। দৌড়চ্ছে শর্ট জিনস আর কেপ্রি-ও। সঙ্গে মানানসই চেক টপ।
আসানসোলে জমে উঠেছে কেনাকাটা। ছবি: শৈলেন সরকার।
বাজারে হাওয়া, এ বার বেশি কাটছে ফ্যান্সি টি শার্ট আর টপ। সেই সঙ্গে রয়েছে ডেনিম প্যান্টের উপরে স্যান্ড ব্লাস্টের ঝলকও। তার পাশে এমব্রয়ডারির রকমারি নকশা তোলা সালোয়ার কুর্তা। ফ্যান্সি চুড়িদারের পাশে দেদার বিকোচ্ছে ল্যাহেঙ্গা-লাচ্ছা। সুতির কাজ করা ধুতি, কুর্তা, চুড়িদারের চাহিদাও তুঙ্গে। আসানসোলের আশ্রম মোড়ের কাছে একটি দোকানের কর্ণধার অনুপ শর্মার কথায়, “যা কিছু নতুন, সবই আমাদের মজুত রাখতে হয়। পছন্দের পোশাক না পেলে তো খদ্দের আসবে না।” পুরনো ফ্যাশনের পোশাকও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নতুন কাটছাঁটে বাজারে আসছে। ক্রেতার মন জোগাতে দোকানে-দোকানে মজুত রয়েছে সে সবও।
তবে যতই ল্যাহেঙ্গা-সালোয়ার-জিন্স বাজার মাত, পুজোয় শাড়ির মার নেই এক বাক্যে বলছেন সব দোকানিই। ঝলমলে দোকানে একের পর এক ঢেউয়ের মতো নেমে আসছে শাড়ির লাট। পাকা জহুরির চোখে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে, আঁচল কাঁধে ফেলে, আয়নাকে জিজ্ঞেস করে, পাশের খদ্দেরকে সাক্ষী রেখে, দোকানদারকে নানা সুরে ধমকে কিনেও ফেলছেন বঙ্গললনারা। একটি অভিজাত বস্ত্রবিপণির কর্ণধার ভক্ত দত্তের মতে, “এ বার পুজোয় মাত করবে ওপারা সিল্ক, আরলি সিল্ক, তাঁত মটকা, পশমিনা সিল্ক।” তার পরেই চোখ মটকে“আর যা টিভি সিরিয়ালের দাপট মশাই! এ বার উঠেছে ইষ্টিকুটুমের বাহাশাড়ি আর টাপুরটুপুর তাঁত।”
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, মাইসোর সিল্কের উপরে জরি আর সুতোর রকমারি নকশা তোলা ওপারা বা আরলি সিল্কের দাম সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। সুক্ষ সুতোয় বোনা তাঁতের শাড়ির উপরে মটকার মনমাতানো কাজের দাম অবশ্য সাধারণ তাঁতের থেকে কিছুটা বেশিই। পছন্দের তালিকায় আছে মধ্যপ্রদেশের সিল্কের উপরে কাজ করা গিচা শাড়িও। কাশ্মিরী সিল্কের উপরে জরি বা সুতোর কাজ করা পশমিনা সিল্কের চিরকালই কদর আছে। পরিবর্তনের বাজারেও সে রুচির পরিবর্তন হয়নি।
এক কথায়, ভারী হচ্ছে নানা সাইজের ব্যাগ। হাল্কা হচ্ছে পকেট।
সে গল্প অবশ্য চিরকালের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.