গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গার জলস্তর না বাড়ায় ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প ও সেচ দফতর কিছু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। কিন্তু, মানিচকের ভুতনি এলাকায় হীরানন্দপুর ও মানিকচকে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গঙ্গা ভাঙনে ভুতনির হীরানন্দপুরের কালুটোলার কাছে রিং বাঁধ আরও প্রায় ৫০ মিটার ভেঙে গিয়েছে। ফলে গত তিন দিনে রিং বাঁধের ২০০ মিটার গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। জলস্তর না বাড়ায় ভুতনি ও মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন কোন এলাকা প্লাবিত হয়নি। এ দিকে, ফুলহারের জল সামান্য বেড়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় অসংরক্ষিত এলাকায় বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে ফুলহার। জল না কমায় দুটি এলাকার ১০টি গ্রামের জলবন্দি বাসিন্দাদের ভোগান্তি চলছেই। মানিকচকের বিডিও, মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নুরুল ইসলাম মানিকচকের ডোমহাট, শিবেনটোলা, জোটপাট্টা গ্রামের জলবন্দিদের দেখতে গিয়েছিলেন। সরেজমিনে বন্যা কবলিত এলাকা দেখে অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “মানিকচকের তিন-চারটি গ্রামে সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রায় হাজার খানেক গরু জলবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই কারণে বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে বন্যার্তদের জন্য ২৫ কুইন্টাল চাল দ্রুত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পশুখাদ্য বরাদ্দ করা হয়েছে। বুধবার ত্রাণ পৌঁছে যাবে। গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গার জল না বাড়লেও এখন মানিকচকে গঙ্গা বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশ নাথ সিংহ বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় থেকে গঙ্গার জলস্তর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এক সেন্টিমিটারও জল বাড়েনি। আশা করছি, গঙ্গার জল আর বাড়বে না। তবে যদি উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে ভারী বৃষ্টি হলে কী হবে বলা কঠিন। ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজার অয়ন কুমার সিংহ বলেন, “বাঁধ যাতে আর বেশি ভেঙে না যায় সে জন্য বাঁশ ও বালির বস্তা ফেলে ভাঙা বাঁধকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।” গঙ্গার জলস্তর একই জায়গায় থাকায় ফরাক্কা ব্যারেজ ও সেচ দফতরের কর্তাদের আশ্বাসের পরেও স্বস্তিতে নেই ভূতনির হীরানন্দপুরের বাসিন্দারা। কালুটোলার কাছে ভেঙে যাওয়া বাঁধের ভাঙনের তীব্রতা কমাতে বালির বস্তা ও বাঁশ ফেলে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালালেও ভরসা পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা। ফরাক্কা ব্যারেজের পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া বাঁধ দিয়ে গ্রামে জল ঢোকা রুখতে বালির বস্তা ও বাঁশ ফেলে বাঁধের কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েত। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প গ্রামবাসীদের দিয়ে পঞ্চায়েত গঙ্গার জল ঢোকা রোখার কাজ করছে। মানিকচকের বিডিও সাংমে ডুকপা বলেন, “ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট করছে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ। গ্রামবাসীরা করছে বন্যা প্রতিরোধের কাজ।” |